কাজলকালো চোখের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন না, এমন মানুষ বোধহয় নেই। চোখের ভাষাকে পরিপূর্ণতা দিতে কাজলের কোনও জুড়ি নেই। কাজল যদি সঠিক ভাবে লাগানো না হয়, তাহলে কিন্তু সেটা মেক-আপ ব্লান্ডার হয়ে দাঁড়াবে। সম্পূর্ণ লুকটাই নষ্ট হয়ে যাবে চোখের মেক-আপ-এর এই ত্রুটিতে। তাই জেনে নিন কাজল পরার সঠিক নিয়মকানুন— যাতে অনুরাগীরা আপনার চোখের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যায়।
কাজলের ব্যাপারে একটা কথা প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো— কখনও কাজলের কোয়ালিটি কমপ্রোমাইজ করবেন না। চোখের ক্ষতি হতে পারে এমন অনামি বা সস্তার প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো। নিজের চোখদুটির স্পর্শকাতরতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে, ব্র্যান্ডেড প্রোডাক্ট-ই কিনুন। বাজারে হার্বাল, জেলবেসড, গোলাপজল-যুক্ত এবং অর্গ্যানিক কাজল পাওয়া যায়। এগুলো আপনার চোখের কোনও ক্ষতি করবে না।
আপনার কাজলে কর্পূর কিংবা আমন্ড অয়েল আছে কিনা দেখে নিন। এই দুটি জিনিসই কিন্তু চোখের সুরক্ষা তো দেবেই উপরন্তু আইল্যাশ গ্রোথ-এও সাহায্য করবে। চোখে শীতল অনুভূতি হয় এই কাজল ব্যবহারে। তাছাড়া এই ধরনের কাজল চোখে দীর্ঘক্ষণ লাস্ট করে, ঘেঁটে যায় না। এবার চোখের সুরক্ষার কিছু টিপ্স জেনে নিন।
চোখের চারপাশ পরিষ্কার রাখুন
চোখের চারপাশের ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়। তাই আই মেকআপ করার পর মেক-আপ তোলাটাও কিন্তু সমান জরুরি। আই মেক-আপ করার সময় চোখের নীচে ত্বকের তেলাভাব যদি প্রকট হয়, একটু ট্রানগ্লুসেন্ট পাউডার লাগিয়ে নিন। এর ফলে কাজল স্মাজ করবে না।
কীভাবে লাগাবেন কাজল
চোখের গড়ন অনুযায়ী কাজলের রেখা টানার নিয়ম। এর ফলে আপনার চোখ আকারে বড়ো দেখাবে। অর্থাৎ আপনার চোখ যদি আকারে ছোটো হয়, তাহলে ওয়াটারলাইন বরাবর রেখা না টেনে একটু চোখের বাইরের কোণ পর্যন্ত নিয়ে যান। চোখের কোণটিকে হাইলাইট করুন। চোখ যদি খুব বড়ো হয়, তাহলে কাজলের রেখা খুব সরু করে টেনে চোখ আকারে স্বাভাবিক দেখানো যেতে পারে। লং লাস্টিং কাজলই ব্যবহার করুন, যাতে দীর্ঘসময় পর্যন্ত চোখের সৌন্দর্য অব্যাহত থাকে।
স্মোকি আইজ লুক
আজকাল স্মোকি আইজ-এর জনপ্রিয়তা অত্যন্ত বেশি। কিন্তু এই লুক একমাত্র তখনই পারফেক্ট হবে, যদি আপনি সঠিক কালার শেডস-এর চয়ন করেন। ব্লেন্ডিং-ও এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক ব্লেন্ডিং না হলে আই মেক-আপে প্যাচিনেস এসে যাবে।
তাই এই ধরনের লুক তৈরি করতে হলে প্রথমে আইশ্যাডো প্রাইমার লাগান। এবার এই প্রাইমার খুব ভালো করে ব্রাশের সাহায্যে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর এক এক করে ট্রানজিশন কালারগুলো অ্যাপ্লাই করুন ও ব্লেন্ড করুন। সব শেষে ব্ল্যাকের শেড দিয়ে ব্লেন্ডিং করুন। যত স্মুদ হবে এই ব্লেন্ডিং, ততই প্যাচিনেস এড়াতে পারবেন।
ক্রিজ-এ ব্ল্যাক অ্যাপ্লাই হয়ে গেলে পুনরায় ট্রানজিশন কালার লাগান। আইলিড্স-এ এরপর ব্ল্যাক আইশ্যাডো লাগানোর পালা। এরপর ওয়াটার লাইন বরাবর কালো কাজল লাগিয়ে নিন। এর উপর ব্ল্যাক আইশ্যাডো দিয়ে ব্লেন্ড করুন। চোখের কোণে গোল্ড আইশ্যাডো দিয়ে হাইলাইট করে মেক-আপ সম্পূর্ণ করুন।
তবে খেয়াল রাখবেন স্মোকি আইজ লুক কিন্তু পোশাকের রঙের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে করা উচিত। অর্থাৎ ব্লু পোশাক হলে চোখের শেডগুলি ব্লুয়ের উপর রাখুন। সবুজ হলে কালোর পরিবর্তে একই ভাবে সবুজের শেড দিয়ে মেক-আপ করুন।
স্পেশাল কেয়ার
বিউটি প্রোডাক্ট— বিশেষ করে লিপস্টিক, লিপগ্লস, কাজল ও লাইনার, কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। কারণ এর দ্বারা ব্যাক্টিরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। এতে আপনার চোখের ক্ষতি হতে পারে। ব্রাশ প্রভৃতি উপরণগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করুন, তারপর পুনরায় ব্যবহার করুন।