আপনি শুনে অবাক হবেন যে, ভারতবর্ষে প্রতি বছর প্রায় ১২ লক্ষ যুবক-যুবতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। তাই বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। অতএব, সতর্কতা জরুরি। এবার জেনে নিন, কোন কোন কুকিং অয়েল হৃদরোগ এড়াতে সাহায্য করবে।

ক্যানোলা অয়েল : যদি আপনার হার্ট-এর সমস্যা থাকে কিংবা কোলেস্টেরল উচ্চমাত্রায় থাকে, তাহলে এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ব্যবহার করুন ক্যানোলা অয়েল। কারণ এতে থাকে গুড ফ্যাট, ভিটামিন ‘এ’ এবং ভিটামিন ‘কে’ এবং এই তেল কোলেস্টেরল ফ্রি হয়। এর মধ্যে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকার পাশাপাশি, উচ্চমাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড থাকে— যা আপনার ব্লাড প্রেসার, কোলেস্টেরল প্রভৃতিকে আয়ত্তে রাখে এবং হার্ট সচল ও সুস্থ স্বাভাবিক রাখে।

অনেক হেলথ অর্গানাইজেশন ক্যানোলা অয়েল-কে ‘হার্ট-স্মার্ট অয়েল’ আখ্যা দিয়েছে। এতে জিরো শতাংশ (০%) ট্রান্স ফ্যাট হওয়ার কারণে, হাই লেভেল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট পাওয়া যায়— যা হৃদরোগ আটকায় এবং ডায়াবেটিজ আয়ত্তে রাখে।

অ্যাভোকাডো অয়েল : এতে প্রচুর পরিমাণ মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। যা হেলদি ফ্যাটস এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যুক্ত। এর ফলে খারাপ কোলেস্টেরল-এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং গুড কোলেস্টেরল-এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। অ্যাভোকাডো অয়েল হার্ট-এর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে ৭০ শতাংশ। আর কোলেস্টেরল-এর মাত্রা সঠিক থাকলে হৃদরোগ এড়ানো যায় অনেকটাই। আর এই তেলের বিশেষত্ব এই যে, এতে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা সঠিক পুষ্টি জোগায়। সেইসঙ্গে এতে পোলিফিনোলিস নামের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস-যুক্ত হওয়ার কারণে ফ্রি র‍্যাডিক্যালস শরীরের সুরক্ষা প্রদান করে। শুধু হার্ট-ই নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যরক্ষায় সাহায্য করে এই তেল।

সানফ্লাওয়ার অয়েল : অনেক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, সানফ্লাওয়ার অয়েল-এ ৮০ শতাংশ আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা হার্ট-এর পক্ষে খুবই ভালো। এই তেলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে না, তাই শরীরের কোলেস্টেরল লেভেল-কে ঠিক রাখতে সাহায্য করে এই তেল। শুধু তাই নয়, এই তেল ব্যবহারের ফলে শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হয়ে চনমনে হয়ে ওঠে শরীর। সেইসঙ্গে, এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এসব সহজে বাসা বাঁধতে পারে না শরীরে। আর এতে থাকা প্রোটিন, কোশ মেরামত করে এবং নতুন কোশ তৈরি করতে সাহায্য করে।

সিসম অয়েল : সিসম অয়েল বা তিল তেলে রয়েছে ভরপুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান। সেইসঙ্গে রয়েছে ভিটামিন ‘ই’ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যরক্ষাকারী উপাদান। এইসব উপাদান শরীরের ফ্রি-র‍্যাডিক্যালস-এর সঙ্গে লড়তে সাহায্য করবে। এর মধ্যে নির্দিষ্ট মাত্রায় রয়েছে ওমেগা থ্রি, ওমেগা সিক্স এবং ওমেগা নাইন ফ্যাটি অ্যাসিড।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, তিল তেল হাই কোলেস্টেরল লেভেল-কে আয়ত্তে আনতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট-এর সমস্যা এড়ানো যায় অনেকটাই। এতে রয়েছে ৪১ শতাংশ পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ৩৯ শতাংশ মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। সেইসঙ্গে এই তেল ম্যাগনেশিয়াম যুক্ত হওয়ায়, ব্লাড প্রেসার-কেও কন্ট্রোলে রাখতে সাহায্য করে। তাই, তিল তেল-কে হার্ট সুস্থ রাখার ওষুধ বলা হয়।

(সমাপ্ত)

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...