আনকোরা একটা বছর শুরু হতে চলেছে আর কিছুদিন পরেই৷ ফেলে আসা বছরটায় করা ভুলগুলির পুনরাবৃত্তি করতে চান না কেউই৷ বরং সেগুলি থেকে শিক্ষা নিন৷ জীবনকে মসৃণ করতে আগাম কিছু পরিকল্পনা করে নিন৷
ছোটো ছোটো গোল সেট করুন
দায়িত্বের কথা ভেবে বা সংসারে নিজের ভূমিকার কথা ভেবে অতিরিক্ত ভারাক্রান্ত হবেন না। পরিবর্তে ছোটো ছোটো গোল্স সেট করুন। এগুলি বছরের শেষে অ্যাচিভ করতে পেরেছেন দেখলে কিন্তু সত্যিই আনন্দ হবে। টার্গেট-এর কাছে পৌঁছোনোর জন্য পরিশ্রম করুন। লক্ষ্যপূরণ হবে না ভেবে অযথা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন না।
আত্মবিশ্বাস বাড়ান
সবার আগে ভয় দূর করুন। কী হবে না হবে আশঙ্কা ঝেড়ে ফেলে নেগেটিভ ভাবা বন্ধ করুন। আগে থেকেই সব কিছুর প্রিপারেশন নিয়ে রাখুন।আমরা কোনো চাকরির ইন্টারভিউতে গিয়ে নার্ভাস হয়ে পড়ি। এর পিছনের কিছু কারণ হলো, আমাদের প্রিপারেশন ভালো মতো নেওয়া হয় না আর নয়তো আমরা আগে থেকেই নেগেটিভ ভেবে রাখি।কাজের ফলাফল সম্পর্কে আগে থেকে না ভাবাই ভালো।
আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য সব বিষয়ে কম বেশি জ্ঞান বাড়াতে হবে।কারেন্ট অ্যাফেয়ারস-এর জ্ঞান ও বিজ্ঞান সম্পর্কে যথেষ্ট স্কিল মজবুত করতে হবে। মানুষের সাইকোলজি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। পরিচিত অপরিচিত মানুষের সাথে মেশার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কথা বলার ক্ষেত্রে অন্যরকম কোয়ালিটি যোগ করতে হবে। যাতে মানুষ সহজেই গ্রহন করতে পারে। সব বিষয়ে যখন স্বাভাবিক ধারণা অর্জন করবেন, তখন ভেতর থেকেই নিজেকে আত্ববিশ্বাসী অনুভব হবে।
গুছিয়ে কাজ করার অভ্যাস
গুছিয়ে কাজ করা একটি অভ্যাস। নিজের ভেতর এই অভ্যাসটি গড়ে তুলুন। গুছিয়ে কাজ করার জন্য পরিকল্পনা থাকা চাই। এতে কাজ অনুসারে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অনেক সহজ হবে। প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত পরিকল্পনা করেই এগোতে হবে। নইলে হোঁচট। আশানুরূপ ফল পাওয়ার জন্য সঠিক ও প্র্যাকটিকাল পরিকল্পনার কোনও বিকল্প নেই। অফিসে নিজের কার্যক্রম আরও গোছালো ও সমন্বিত করার জন্য প্রতিদিনের ওয়ার্কপ্ল্যান করে নিন।সময়মতো কাজ শেষ করতে না পারলে আগ্রহ হারাবেন না। পরবর্তী কাজ থেকে সময় বাঁচিয়ে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করুন। খেয়াল রাখবেন, একটি ব্যর্থতা পর পর অনেক কাজের ওপর আপনার আগ্রহ ও একাগ্রতাকে নষ্ট করে দিতে পারে।
ডায়ারি মেনটেইন করুন
আপনার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে ডায়ারি মেনটেইন করুন। টিক দিয়ে দিয়ে অসম্পূর্ণ কাজগুলো এক এক করে শেষ করুন চলতি বছরে। কাজ সমাপ্ত হলে আপনার দুশ্চিন্তার বোঝাও খানিক কমবে। দুশ্চিন্তা থেকে আপনিও রেহাই পাবেন। জীবন বিন্দাস করতে একটু নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া প্রয়োজন সবচেয়ে আগে। কাজে মন দিলে, অযথা খারাপ চিন্তা আপনাকে গ্রাস করবে না। অতিরিক্ত ভাবার অভ্যাস থেকেও আপনি সহজেই বেরিয়ে আসতে পারবেন, উপযুক্ত প্ল্যানিং আর একটি ডায়ারির সাহায্যে। এক বছরের বা এক মাসের প্ল্যান করার বদলে, পরের দিনের প্ল্যান করা দিয়ে শুরু করুন কাজ।
শখগুলি বাঁচিয়ে রাখুন
নিজের প্রিয় শখগুলিকে লালন করুন, যাতে মনে আনন্দ লাভ করেন সেটাই করুন। কোনও বয়সই নতুন কিছু শুরু করার পথে অন্তরায় নয়। লোকে কী বলবে এই ভয়ে পিছিয়ে যাবেন না। মনে রাখবেন আপনার উদ্যোগে আরও অনেকে অনুপ্রাণিত হবেন। পছন্দের কাজে মেতে থাকুন। বাজে চিন্তা আপনাকে গ্রাস করবে না।
জীবন হোক আনন্দের
মন খুলে মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করুন। মনের গুমোট ভাবটা এতে অনেকটাই কেটে যাবে। ‘রেসপনসিবিলিটি’ একটা বোঝা ঠিকই কিন্তু সেটা কাধে নিতে হচ্ছে বলেই মুখভার করে থাকবেন না। প্রয়োজনে দায়িত্বটা পরিবারের সকলের মধ্যে অল্প অল্প করে ভাগ করে দিন। আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন নিজের ক্ষমতার উপর। এতে আগামী পদক্ষেপ সহজে করতে পারবেন। বছরভর ভালোমন্দ লেগেই থাকবে। আগে থেকে মানসিক প্রস্তুতি রাখুন যে, যাই ঘটুক ভেঙে পড়লে চলবে না।