বর্তমান সময়ে পরিবেশ দূষণের কারণে, স্ট্রেসফুল জীবনযাপন এবং অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের ত্বক প্রাণহীন, রুক্ষ হয়ে ওঠে এবং বয়সের ছাপ খুব কম বয়সেই পড়তে শুরু করে। খুব অল্প বয়স থেকে মুখে দাগছোপ, ব্রণ হওয়া আরম্ভ হয়। এর জন্য প্রয়োজন প্রথম থেকেই ত্বকের যত্ন করা। এছাড়াও মেক-আপ দিয়ে মুখের সমস্যা লুকোবার চেষ্টা করা থেকে বিরত থেকে সুস্থ এবং স্বাভাবিক উপায়ে মুখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলা বাঞ্ছনীয়।
ত্বকের যত্নের একটি প্রয়োজনীয় অংশ হল ত্বক পরিষ্কার করার পর ভালো কোয়ালিটির ফেস সিরাম ব্যবহার করা। এটি লাইট ওয়েট ময়েশ্চারাইজারের মতন। ওয়াটার বেসড হওয়ার জন্য Face Serum খুব শীঘ্রই ত্বকের গভীরে অ্যাবজর্ব হয়ে যায় এবং ত্বককে ভিতর থেকে আর্দ্রতা প্রদান করে। নিয়মিত ফেস সিরাম ব্যবহার করলে ত্বক সুস্থ থাকে এবং গ্লো এবং যৌবন বজায় থাকে। ত্বকের আর্দ্রতাও হ্রাস পায় না।
ফেস সিরাম আমরা ব্যবহার করে থাকি ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন এবং মেক-আপের নীচে বেস হিসেবে। যুবা বয়সে ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে অবশ্য ফেস সিরামের খুব একটা দরকার পড়ে না তবুও এর ব্যবহারে সুস্থ, দাগহীন ত্বক পাওয়া সম্ভব হয়। চট্ করে ত্বক বুড়িয়ে যায় না এবং বলিরেখাও আটকানো যায়। ত্বক পরিষ্কার এবং টোনিং করার পর সারাদিনে ১-২বার ফেস সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।
ফেস-এর জন্য সিরাম কেন জরুরি
যাদের মুখে বয়সের ছাপ, বলিরেখা, দাগছোপ, হাইপারপিগমেনটেশন, অ্যাকনে, ক্লগড পোরস, ডিহাইড্রেশনের মতন সমস্যা রয়েছে তাদের অবশ্যই ফেস সিরাম ব্যবহার করা উচিত। এর ফলে এতগুলো সমস্যার মোকাবিলা করা আপনার পক্ষে সহজ হবে।
মুখের দাগছোপ কম করবে
প্রায় রোজই আমাদের বাড়ির বাইরে বেরোতেই হয় এবং সূর্যের ক্ষতিকারক আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির সংস্পর্শে আসে ত্বক। এতে ত্বক প্রাণহীন ও ট্যানিং ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হয়। কিন্তু Face Serum ব্যবহার করলে সিরামে মজুত গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ত্বকের স্বাভাবিক রং বজায় রেখে ত্বক উজ্জ্বল রাখতেও সাহায্য করে। রোজ ব্যবহার করলে নিজেই বুঝতে পারবেন, মুখের দাগছোপ কতটা কম হয়েছে। ১ মাসের মধ্যে মুখে ফাইন লাইনস এবং বলিরেখা কমতে শুরু করবে।
নিষ্প্রাণ ত্বকে প্রাণ ফিরিয়ে আনতে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বক স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলে। এই অবস্থায় ফেস সিরাম ব্যবহার করা জরুরি যা-কিনা ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বককে হাইড্রেট করে ত্বকের গ্লো ফিরিয়ে আনে।
ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে
‘দ্য জার্নাল অফ ক্লিনিকাল অ্যান্ড ডার্মাটোলিজ’-এর একটি রিপোর্টে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ফেস সিরাম মুখের ফাইন লাইনস এবং বলিরেখা কম করতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। মাত্র ২-৩ সপ্তাহ ব্যবহারের পরেই তফাত পরিষ্কার বোঝা যায়। অ্যান্টি এজিং-এর জন্য হ্যালুরনিক অ্যাসিড-যুক্ত হাইড্রেটিং সিরাম বাছা উচিত। এই ফেস সিরাম ত্বকের যৌবন বজায় রেখে বলিরেখাও দূর করবে। কিছু কিছু ফেস সিরামে ভিটামিন সি থাকে, যেগুলিও অ্যান্টি এজিং রোধ করতে খুবই কার্যকরী।
ব্রণ দূর করতে
মুখের ব্রণ দূর করতে Face Serum ব্যবহার করা জরুরি। এতে বেঞ্জায়েল প্যারাক্সাইড এবং স্যালিসিলিক অ্যাসিড থাকে যা অ্যাকনে কমাতে সহায়তা করে এবং ত্বক আগের স্বাভাবিক চেহারায় ফিরে আসে।
ময়েশ্চার এবং ভলিউম পেতে
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের বিশেষ করে গাল এবং চোখের নীচের অংশের ময়েশ্চার এবং ভলিউম কমতে থাকে। সুতরাং ওই অংশে ফেস সিরাম ব্যবহার করলে ময়েশ্চার এবং ভলিউম দুই-ই ফিরে পাওয়া যায়। ২-৩ ফোঁটা সিরাম আঙুলে নিয়ে সারা মুখে লাগালে সহজেই পার্থক্য চোখে পড়বে।
ত্বককে এক্সফলিয়েট করতে
ফেস সিরামে ল্যাক্টিক এবং ফলিক অ্যাসিড থাকে যা ত্বককে ইভন টোন এবং স্মুদ টেক্সচার দেয়।
ত্বককে হাইড্রেট করতে
ত্বক যদি রুক্ষ এবং নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে তাহলে বুঝতে হবে ময়েশ্চারাইজার ছাড়াও ত্বকের আরও কিছু প্রয়োজন আছে। ফেস ক্রিম ছাড়াও হাইড্রেটিং ফেস সিরাম প্রয়োগ করলে রুক্ষ ত্বকে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আকর্ষণীয় মুখশ্রী পেতে
ফেস সিরামে কোলোজেন উপাদান থাকে, যার ফলে ত্বকের টেক্সচার উন্নত হয়। ত্বক আগের থেকে সুন্দর, আকর্ষণীয় দেখতে লাগে৷ ওপেন পোরস-এর সংখ্যাও হ্রাস পায়, সঙ্গে ব্ল্যাকহেডস এবং হোয়াইট হেডসও কম হতে থাকে।