অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত, কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর— গোল্ড কোস্ট। কুইন্সল্যান্ডের রাজধানী ব্রিসবেন থেকে মাত্র ৬৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই শহর। এখানে বছরে প্রায় ৮ মাসেরও বেশি গ্রীষ্মকাল। শীতকালের তাপমাত্রাও খুবই আরামপ্রদ। তাই বছরের যে কোনও সময় গোল্ড কোস্ট বেড়াতে যাবার জন্য আদর্শ।
ব্রিটিশ এক্সপ্লোরার ক্যাপ্টেন জেমস কুক প্রথম গোল্ড কোস্টে এসেছিলেন ১৭৭০ সালে। তবে তার আগে হাজার হাজার বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা এখানে বসবাস করত। অ্যাবোরিজিনাল ভাষায় এই এলাকার নাম ছিল ‘কুরুঙ্গুল’। যার অর্থ হল- ‘অফুরন্ত কাঠের জোগান’। ১৮৪০ সালের আগে পর্যন্ত ইউরোপিয়ান অভিবাসীদের মধ্যে এই অঞ্চলটি একরকম উপেক্ষিতই ছিল বলা চলে। কিন্তু এরপর থেকেই শুরু হয় লাল সিডার কাঠের ব্যাবসা। আর তার জন্যই দলে দলে ইউরোপিয়ান অভিবাসীরা এখানে আসতে শুরু করে। তবে আরও অনেক পরে গোল্ড কোস্ট ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
অস্ট্রেলিয়া একটি দ্বীপ বলে এর চারিদিকেই সমুদ্র। সমুদ্র সৈকত এখানকার লোকেদের জীবনসঙ্গী। তবুও বলব, গোল্ড কোস্টের সমুদ্র সৈকত, বিশেষত সার্ফারস প্যারাডাইস, সত্যিই অপ্রতিদ্বন্দ্বী, অদ্বিতীয়। এর স্বর্গীয় সৌন্দর্যের তুলনা একমাত্র সার্ফারস প্যারাডাইস নিজেই হতে পারে।
টুরিস্ট হিসেবে আপনি সুইম, সার্ফ, প্যাডেল বোর্ড করতে চান বা সমুদ্রের বালুর উপর শুধু শুয়ে শুয়েই দিনটা কাটিয়ে দিতে চান, সেটা সম্পূর্ণই নির্ভর করছে আপনার উপর। গোল্ড কোস্টে আপনি সব কিছুই পাবেন। এবার আমরা এসেছি সপরিবারে পাঁচদিনের ছুটি কাটাতে। তাই আর দেরি না করে প্রথম দিনই বেরিয়ে পড়লাম, সঙ্গে সুইমিং কসটিউম, বিচ টাওয়েল, সান গ্লাস, টুপি আর সানস্ক্রিন ক্রিম নিয়ে। অস্ট্রেলিয়াতে বেড়াতে এলে সবসময় সানস্ক্রিন ক্রিম লাগানো একরকম জরুরি বলা চলে। এটি শুধু সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করবে তাই নয়, ভবিষ্যতে স্কিন ক্যান্সারের সম্ভাবনা থেকেও রক্ষা করবে। তাই সাবধানতাই একমাত্র সমাধান।
সার্ফারস প্যারাডাইস বিচ আর তার আশেপাশের ভ্রমণকেন্দ্রগুলো যদিও গোল্ড কোস্টকে বিশ্ব পর্যটন শিল্পের মানচিত্রে স্থান করে দিয়েছে, তবুও এ কথা অনস্বীকার্য যে, গোল্ড কোস্টের আশেপাশে আরও অনেকগুলো সুন্দর বিচ রয়েছে। তাছাড়া ট্যুরিস্টের ভিড় থেকে রক্ষা পেতে হলে এবং প্রকৃতির আসল রূপ দেখতে চাইলে সার্ফারস প্যারাডাইস থেকে একটু বাইরে বেরোলেই অনেক সুন্দর সুন্দর বিচ দেখা যাবে। মেইন বিচ, ব্রড বিচ, মায়ামি বিচ, মারমেইড বিচ, নবী বিচ, কারামবিন বিচ এবং কুলানগাটা বিচ ট্যুরিস্টদের নিরাশ করবে না।