বিয়ে মানেই একটা নতুন জীবনের শুরু, এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সূচনা। যেখানে জীবনের পরিবর্তনের সঙ্গে যোগ হয় বিবিধ দায়িত্বের বোঝা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিয়ের দিনটার জন্যেই মাতামাতি বেশি থাকে। বিয়ের পরের সময়টার গুরুত্ব যে অনেক বেশি, তা নিয়ে মাথাব্যথা সকলেরই কম থাকে। আসলে বিয়ের দিনের অনুষ্ঠান পর্বকে চাকচিক্যে ভরিয়ে তোলাটাই মূল উদ্দেশ্য হয়ে দাঁড়ায়। অথচ বিয়ের দিনের আগের মুহূর্ত পর্যন্ত পাত্র এবং পাত্রী উভয়েরই আসন্ন বিয়ে নিয়ে থাকে চাপা উত্তেজনা। তাদের কাছে শুধু বিয়ের দিনটাই নয়, তার পরের জীবনটা নিয়েও থাকে বহু জল্পনাকল্পনা ও উদ্বেগ।
সমস্ত স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়ে উঠবে কিনা, এমন জিজ্ঞাসা থেকেই জন্ম নেয় উত্তেজনা কিংবা উদ্বেগ। উভয়ের ক্ষেত্রেই নতুন পরিবার এবং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার প্রশ্ন থেকেই যায়। সুতরাং বিয়ের আগে থেকেই যদি নিজেকে উপযুক্ত ভাবে গড়ে তোলা যায়, তাহলে অতটা টেনশনে থাকার আশঙ্কা থাকে না।
কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট শ্রীতমা ঘোষ-এর মতে, জীবনের প্রতিটি মোড়েই থাকে বিস্ময় এবং চ্যালেঞ্জ। তবে বিবাহ সেই পর্যায়গুলির মধ্যে একটি, যা উত্তেজনাপূর্ণ এবং আশঙ্কারও হতে পারে। এটি এমন এক পর্যায়, যেখানে দু'জন ব্যক্তি একত্রিত হয়, তাদের দূরত্ব সরিয়ে রেখে নিজেদের থেকে বড়ো কিছু তৈরি করার জন্য কাজ করে, পরিবার গড়ে। এ এক অন্য স্বপ্নের জীবন। কিন্তু বিয়ে মানেই সুন্দর, মসৃণ এবং সুখস্বপ্নের মতো হবে, এমনটা হয় না সর্বদা।
আজকের দ্রুতগতির, চাহিদাপূর্ণ জীবনধারার সঙ্গে বিবাহিত জীবনের চাপগুলি আগের তুলনায় নাটকীয় ভাবে বদলে গেছে। সমস্যাও আসতে পারে কিংবা সমস্যা তৈরি হলেই মানসিক অস্থিরতাও শুরু হয়ে যেতে পারে। এই কারণেই প্রি-ম্যারেজ কাউন্সেলিং-এর গুরুত্ব বাড়ছে।
প্রি-ম্যারেজ কাউন্সেলিং হবু দম্পতিদের আসন্ন সমস্যার আগাম সমাধান সূত্র দেয়। এখানে কাউন্সেলর একজন প্রশিক্ষিত পেশাদার। তাই তিনি হবু দম্পতির থেকে উদ্বেগ আশঙ্কার কথা শুনে সমস্যা সমাধানের ভরসা দেন এবং মানসিক চাপমুক্ত হওয়ার পথ দেখান। শুধু তাই নয়, কী ধরনের সমস্যা আসতে পারে, সেই বিষয়েও সচেতন করেন। এর ফলে হবু দম্পতির মনে আস্থা এবং বিশ্বাস তৈরি হয়।