প্রোপোজ করে বারবার প্রত্যাখ্যান কপালে জুটেছে— এমন প্রেমিকের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। এমন নয় তো, প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার সময় আপনি এই ভুলগুলি করছেন? মেয়েরা কিছু কিছু ব্যাপারে কিন্তু একটু বেশি স্পর্শকাতর হয়।প্রেমিকের থেকে তারা বিশেষ কিছু প্রত্যাশা করে। সেই প্রত্যাশা না পূরণ হলে, প্রেমের প্রস্তাব মেয়েরা ফিরিয়ে দিতে মোটেই দ্বিধা বোধ করে না।
নতুন বছরে তাহলে আপনার ভুল শুধরে নিন। নতুন করে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার আগে, একটু প্রস্তুত হয়ে নিতে ক্ষতি কী! কী কী ভুল করা চলবে না, সে বিষয়ে আমরা আলোকপাত করছি।
অ্যাটিটিউড ভরা প্রস্তাব
বহুদিনের ক্রাশ৷ অনেক কিছু ভেবে সাহস জুটিয়ে হয়তো প্রস্তাব দিয়ে বসলেন, কিন্তু তাও যেন বেসুরো বাজল। এমন কিন্তু আকছার হয়। বিশেষ করে তখন, যখন আপনার প্রস্তাব দেওয়ার ভঙ্গিতে অকারণ অ্যাটিটিউড মিশে থাকে। যাদের মেল ইগো একটু বেশি জোরালো, এই সমস্যা তাদের হয়। তারা অসচেতন ভাবে মনে পুষে রাখে একটি ভাবনা যে, প্রস্তাব তার দিক থেকে যাচ্ছে মানেই, গার্লফ্রেন্ডের সামনে কিছুটা নতিস্বীকার করা হচ্ছে। এটাই তাদের মধ্যে একধরনের অ্যাটিটিউড-এর সঞ্চার করে এবং প্রেমের প্রস্তাব রিজেক্টেড হয়।
মনে রাখবেন মেয়েরা মোটেই অ্যাটিটিউড-এ পরিপূর্ণ প্রেমিক পছন্দ করে না। তারা ভাবতে পারে প্রস্তাব দেওয়ার সময়ই যার এত আত্মাভিমান— না জানি পরে প্রতি পদক্ষেপেই যদি প্রেমিক এমন অ্যাটিটিউড দেখায় !
পরামর্শ: তাই ক্রাশকে প্রোপোজ করতে হলে, নো অ্যাটিটিউড অ্যাপ্রোচ। যখনই বান্ধবীর কাছে প্রেমের প্রস্তাব নিয়ে যাবেন, খেয়াল রাখবেন আপনার কথা বলার ধরন যেন খুব সফ্ট হয়। এটাই কিন্তু তাকে আপনার প্রতি আকর্ষিত করবে এবং আপনি প্রেমে ব্যর্থ হবেন না।
লুকস–এর ব্যাপারে সচেতনতা
এমন নয়তো, আপনি বারবার রিজেক্টেড হচ্ছেন আপনার লুক্স-এর ব্যাপারে উদাসীন হওয়ার কারণে? মনে রাখবেন মেয়েরা কিন্তু টিপটপ এবং ফ্যাশনেবল প্রেমিক পছন্দ করে। তার মানে এই নয় যে, আপনাকে দারুণ দামি ব্র্যান্ডেড জামাকাপড়ই পরতে হবে। কিন্তু পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, আর ড্রেসিং সেন্স থাকা আবশ্যক। প্রত্যেক মেয়েই চায় তার পার্টনারকে দেখতে সুন্দর লাগুক। পোশাকে এবং আচরণে গুডলুকিং ম্যান হওয়া বাঞ্ছনীয়৷ কথাতেই বলে, ‘পহেলে দর্শনধারী পিছলে গুণবিচারি’। তাই চটপটে কথা হলেই হবে না, চেহারাতেও থাকতে হবে চাকচিক্য।
পরামর্শ: ক্রাশ-কে প্রোপোজ করতে হলে নিজেকে খানিকটা ধোপদুরস্ত করে তুলুন। ক্লিন শেভ হলে পরিষ্কার করে দাড়ি কামান। দাড়ি রাখলে সেটাকে যত্ন করে ট্রিম করুন। পোশাক পরিচ্ছন্ন পরুন, জুতো যেন পরিষ্কার হয়।
সিগন্যাল পেলে তবেই প্রোপোজ
অনেকে ইশারা বোঝেন না। সেই সমস্ত পুরুষরাই বেশি রিজেক্টেড হয়, যারা মেয়েটির মন পড়তে ব্যর্থ। অর্থাৎ আদৌ মেয়েটি তাকে পছন্দ করে কিনা সেটা প্রেমিকের আগে বুঝে নেওয়া জরুরি। মেয়েরা সেই সমস্ত প্রেমিক অপছন্দ করে, যারা অতিরিক্ত হ্যাংলামো করে, কিংবা বেশি মাত্রায় গায়ে পড়া স্বভাবের। আপনার উপর মেয়েটি নির্ভর করবে, এটা তার জীবনের একটা বড়ো সিদ্ধান্ত— তাই আগে নিজেকে তার যোগ্য করে তুলুন।
পরামর্শ: মেয়েটি আপনাকে পছন্দ করে, এমন ইঙ্গিত পেলে তবেই প্রেমের প্রস্তাব দিন। এর জন্য বন্ধুদের সাহায্য নিন। তাদের থেকে নিশ্চিত হয়ে নিন। তবেই আপনি প্রস্তাব দিলে তা খারিজ হবে না।
শো–অফ এড়িয়ে চলুন
আপনি যা নন, নিজেকে সেভাবে গার্লফ্রেন্ড-এর সামনে প্রজেক্ট করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হবে। অর্থাৎ আপনার বাস্তব প্রকৃতি যখন সে জানতে পারবে, আপনাকে অচিরেই রিজেক্ট করে দেবে। আপনার অর্থ-সম্পত্তি নিয়ে অতিরিক্ত শো-অফ করবেন না। দেখনদারি মেয়েরা পছন্দ করে না।
পরামর্শ: যতটা সম্ভব ডাউন টু আর্থ থাকুন প্রোপোজ করার সময়। নিজেকে নিয়ে অতিরিক্ত হামবড়াই করবেন না, বা আত্মপ্রচার করবেন না। বলুন কম, শুনুন বেশি। এতেই মুগ্ধ হবে প্রেমিকা।
চরিত্রে দৃঢ়তা আনুন
প্রোপোজ করার সময় দুর্বল চিত্ত হয়ে যাবেন না। কনফিডেন্টলি মনের কথা বলুন। একসঙ্গে অনেক কথা বলতে গিয়ে সবটা ঘেঁটে না ফেলাই ভালো। আগে থেকে ভেবে ঠিক করে রাখুন কী বলবেন প্রস্তাব দেওয়ার সময়।
পরামর্শ: আপনি বান্ধবীকে কখন এবং কোথায় প্রস্তাব দিচ্ছেন সেটা কিন্তু খুব জরুরি। সঠিক পরিবেশে প্রোপোজ করুন। প্রস্তাব দেওয়ার আগে অবশ্যই বান্ধবীর মুড-টা পরখ করে নেবেন। এবার দ্বিধাহীন ভাবে, কথার আড়ষ্টতা কাটিয়ে স্পষ্ট করে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে ফেলুন, নিরাশ হবেন না!