তরুণ পরিচালক কুণাল ভাণ্ডারি তৈরি করছেন একটি বাংলা ছবি। ‘আনন্দি’ শীর্ষক এই বাংলা ছবির শুটিং হয়েছে কলকাতা এবং কলকাতা-র আশপাশ অঞ্চলে।

‘আনন্দি’ ছবির কাহিনির কেন্দ্রে রয়েছে আনন্দি নামের একটি মেয়ে। যার জীবনকাহিনি খুবই দুঃখজনক। আনন্দি আসলে এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। তার বাবা তাকে তার প্রেমিকের সঙ্গে দেখে ফেলার পর, আনন্দি খুব অস্বস্তিতে পড়ে যায়। কিন্তু মনের জোর বাড়িয়ে আনন্দি তার প্রেমিককে মুখোমুখি করায় তার বাবার সঙ্গে। সাহসের সঙ্গে সে তার বাবাকে জানায় যে, সে ছেলেটিকে ভালোবাসে এবং বিয়ে করতে চায়। কিন্তু আনন্দি-র প্রেমিকের তখন চাকরি স্থায়ী ছিল না। তাই আনন্দির বাবা আনন্দির প্রেমিককে জানান, ছয় মাসের মধ্যে চাকরি পাকা করে সে যেন তার সঙ্গে দেখা করে, তাহলে তিনি এই বিয়ে দিতে রাজি হবেন। এই প্রস্তাবে সম্মতি জানায় আনন্দি-র প্রেমিক।  এরপর সময় বয়ে চলে। মাতৃহীনা আনন্দি তার বাবাকে আবার কাউকে  বিয়ে করতে অনুরোধ করে। কারণ, আনন্দি জানায়, তার বিয়ের পর বাবার যত্ন নেওয়ার লোক থাকবে না। মেয়ের অনুরোধে মধু নামের এক মহিলাকে বিয়ে করেন বাবা।

আনন্দি-র বিপত্নীক বাবার দ্বিতীয় বিয়ের পর, আনন্দির দ্বিতীয় মা মাঝেমধ্যে আনন্দির সঙ্গে বাজে ব্যবহার করতে থাকেন। আনন্দি এতে খুব কষ্ট পায় কিন্তু সে তার বাবা-র কথা ভেবে, তার নতুন মায়ের সব দুর্ব্যবহার মেনে নেয়। কিন্তু ধীরে-ধীরে আনন্দির নতুন মা মধু তার আসল রূপ দেখায় এবং মা তার প্রেমিক হরেকৃষ্ণের সাহায্যে সম্পত্তির জন্য আনন্দি-র বাবাকে খুন করে। শুধু তাই নয়, আনন্দি-র বাবাকে খুন করার পর আনন্দিকেও বিক্রি করে দেয়। আনন্দি-র স্থান হয় নিষিদ্ধ পল্লিতে। সেখানে আনন্দি তার শরীর বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায়, তাকে চরম অত্যাচার করা হয়।  যাইহোক, সময় বয়ে যায়। নিষিদ্ধপল্লিতে আনন্দি-র সঙ্গে পরিচয় হয় আরও দুজন মেয়ের। তাদের কাহিনিও নিদারুণ! এদের মধ্যে একজন গৃহিনী মেয়েকে তার মাতাল স্বামী টাকার লোভে বিক্রি করে দিয়েছিল ওই নিষিদ্ধপল্লিতে। সোনিয়া নামের অন্য মেয়েটিও ছিল উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিনেত্রী। সিনেমায় নায়িকা হতে চাওয়া মেয়েটিকে তার প্রেমিক প্রতারিত করে বিক্রি করে দেয় নিষিদ্ধপল্লিতে।

একসময় আনন্দি-র প্রেমিক খুঁজে পায় আনন্দি-কে এবং পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে। শেষ পর্যন্ত আনন্দি মুক্তি পায় তার দুর্বিসহ জীবন থেকে। কিন্তু আনন্দি নিষিদ্ধপল্লি থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, ‘আনন্দি’ ছবির কাহিনি মোড় নেবে অন্যদিকে। কী ঘটবে এরপর, তা জানতে হলে ছবিটি দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন   পরিচালক। ইতিমধ্যেই ছবিটির শুটিং শেষ হয়েছে এবং এখন পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে।

‘আনন্দি’ ছবিতে অভিনয় করছেন প্রিয়ঙ্কা রায়, রজতাভ দত্ত, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, জিতেন্দ্র নাহার, দিলরাজ, অমিত কর্মকার, রভজিৎ ভৌমিক, রিয়া দাস, পায়েল দত্ত এবং মৌমিতা অধিকারী। ছবিটি তৈরি হচ্ছে ‘জেজে প্রোডাকশন’-এর ব্যানারে। এই ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে প্রথমবার অভিনয় করেছেন জিতেন্দ্র নাহার। ছবিতে কয়েকটি গানও আছে। গানগুলি লিখেছেন বাংলাদেশের রঞ্জু রেজা এবং সুদীপ ভট্টাচার্য। গানগুলিতে কণ্ঠদান করেছেন বলিউডের অদিতি সিং শর্মা, বাংলাদেশের রুবেল খন্দকার এবং চয়ন দে। ছবির মিউজিক এবং ট্রেলার মুক্তি পাবে খুব শিগগির।

‘আনন্দি’ ছবির কাহিনি লিখেছেন জিতেন্দ্র নাহার এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন ইব্রাহিম শেখ। ছবিটির চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন জোজো ব্যাগ। আর কিছুদিনের মধ্যে ছবিটি মুক্তি পাবে বলে জানানো হয়েছে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...