এদেশের ২ কোটি ৭৫ লক্ষ দম্পতি এখন বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন। অন্যদিকে আমাদের রাজ্যে অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গে, বাচ্চার জন্মের হার (২.১১২) দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক কম (১.২)। তবে আশার কথা হল এই যে, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে, সমস্যার মোকাবিলা করতে পারে অনায়াসেই।
‘ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকশন’-এর (ISAR, Bengal) পশ্চিমবঙ্গ শাখার উদ্যোগে, বন্ধ্যাত্বের যাবতীয় অত্যাধুনিক চিকিৎসা নিয়ে East India Fertility Conclave 2025 অনুষ্ঠিত হবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল কলকাতা-র রাজারহাট অঞ্চলের এক অভিজাত হোটেলে। কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন অংশের নামী ইনফার্টিলিটি ফিজিশিয়ানরা এই সম্মেলনে অংশ নিয়ে তাঁদের গবেষণা ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবেন, কলকাতা প্রেস ক্লাব-এ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে জানালেন ISAR, Bengal এর চেয়ারপার্সন ডা. সুদীপ বসু।
নারী পুরুষ দুজনেরই বন্ধ্যাত্বের কারণ বিশ্লেষণ করতে অত্যাধুনিক পেলভিক আলট্রাসাউন্ড, ফার্টিলিটি স্ক্যান, থ্রি-ডি টুলস, ওভারিয়ান প্যাথলজি সহ অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পর্কে সবিস্তার আলোচনায় অনেক নতুন নতুন তথ্য উঠে আসবে, যা আগামী দিনে সন্তান ধারণে ইচ্ছুক দম্পতিদের আশার আলো দেখাবে—এমনটাই জানালেন সংস্থার চেয়ারপার্সন বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ ডা. সুদীপ বসু।
সন্তানহীন দম্পতির জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করে বন্ধ্যাত্বের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা গেলে, চিকিৎসায় ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে জানালেন ডা. দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। আইভিএফ পদ্ধতিতে ভ্রূণ উৎপাদনের পরে হবু মায়ের শরীরে নানান সমস্যা দেখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি এবং যথযথ ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, মিসক্যারেজের ঝুঁকি বাড়ে। এই বিষয়টি নিয়ে আলোকপাত করবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা, জানালেন ডা. সুপর্ণা ভট্টাচার্য এবং ডা. ঐন্দ্রী সান্যাল।
ক্যানসারের চিকিৎসা করালে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাওয়ায়, ভ্রূণ সৃষ্টিতে সমস্যা হয়, এক্ষেত্রে ফার্টিলিটি প্রিজার্ভেশন সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি। কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির আগে ডিম্বাণু এবং শুক্রাণু সংগ্রহ করে হিমায়িত করে রাখলে, পরবর্তীকালে আইভিএফ এর সাহায্যে সন্তান উৎপাদন অনেক সহজ হয় হতে পারে—এমনটাই জানালেন ডা. সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অতি সম্প্রতি বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় AI –এর ব্যবহার এবং সন্তান ধারণ সুগম করতে, প্রোবায়োটিক ব্যবহার নিয়ে নতুন গবেষণা আগামী দিনে সন্তানাকাঙ্খী দম্পতির কাছে আশার আলো দেখাবে বলে জানালেন ডা. সুজয় দাসগুপ্ত ও ডা. পরাগ নন্দী। আইভিএফ এর খরচ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় অনেকের সন্তানের আকাঙ্খা পূরণ হয় না, তাই ন্যায্য মূল্যে আইভিএফ চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন ডা. এসএম রহমান। তাই, ডা. সুদীপ বসু, ডা. সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়,ডা. সুপর্ণা ভট্টাচার্য এবং ডা. ঐন্দ্রী সান্যাল-এর মতে, আগামী দিনে সন্তানহীন দম্পতির মুখে হাসি ফোটাতে East India Fertility Conclave 2025 এর আলোচনা এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।