লিভার-এর যে-সমস্যায় এখন ভীষণ ভাবে ভুগছেন অসংখ্য মানুষ, তা হল— ফ্যাটি লিভার। ফ্যাটি লিভার-এর সমস্যা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রাকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে। কিন্তু যদি আমরা ফ্যাটি লিভার-কে প্রাথমিক স্টেজ-এ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তাহলে লিভার-এর বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। যেমন— লিভার ফাইব্রোসিস, লিভার সিরোসিস, এমনকী ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এই বিষয়ে তুলে ধরা হচ্ছে কনসালটেন্ট জিআই সার্জন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল-এর বক্তব্য এবং পরামর্শ।
ফ্যাটি লিভার-এর প্রাথমিক স্টেজ সাধারণ ভাবে উপসর্গহীন। তাই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। ফ্যাটি লিভার-এর দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় স্টেজ থেকে যে- উপসর্গগুলি বোঝা যায়, তা হল— পেট বেশি বেড়ে যায় শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে, অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া, হাঁপিয়ে যাওয়া, পেটে ব্যথা, বমি, হালকা জন্ডিস, ঘনঘন সর্দি কাশি। দ্বিতীয় স্টেজ থেকে ওষুধের প্রয়োজন হয়। সেইসঙ্গে, নিয়ন্ত্রণ করতে হয় খাওয়া-দাওয়া এবং নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়ামের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভারকে সুস্থ রাখতে হয়।
ফ্যাটি লিভার অধিকাংশ সময়েই ধরা পড়ে না, কারণ এই অসুখের প্রাথমিক স্তরে কোনও ব্যথা বা অস্বস্তি দেখা দেয় না। তাই, এই অসুখ সম্পর্কে আরও সচেতনতা তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। যেহেতু এই অসুখ নীরবে কোনও লক্ষণ ছাড়াই বাড়তে থাকে, তাই, যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা জরুরি।
লিভারকে ফ্যাটি বলে ধরা হয় যখন লিভারে ফ্যাট ৫ শতাংশর বেশি হয়ে যায়। ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং মেদবহুলতায় ভোগা মানুষের ফ্যাটি লিভার হওয়ার সম্ভাবনা ৫০-৬০ শতাংশ। মোটামুটি ভাবে ফ্যাটি লিভারের তিনটে স্তর আছে। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFL)- স্টেয়াটোসিস, নন-অ্যালকোহলিক স্টেয়াটো হেপাটাইটিস (NASH) এবং লিভার সিরোসিস। নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) রোগীদের ২০-২৫ শতাংশ নন-অ্যালকোহলিক স্টেয়াটো হেপাটাইটিস স্তরে পৌঁছে যান এবং ১০-১৫ শতাংশ সিরোসিস অফ লিভার হয়, যা সারা পৃথিবীতে লিভার প্রতিস্থাপনের সবচেয়ে বেশি ঘটনার কারণ।