সুন্দর ত্বকের রহস্য লুকিয়ে আছে তার যথাযথ পরিচর্যার উপর। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সরাসরি গিয়ে পড়ে ত্বকে। শীতের বাতাসে আর্দ্রতার অভাবে ত্বক রুক্ষ, নিষ্প্রাণ এবং খসখসে হয়ে ওঠে।বিয়েবাড়ি বা  উৎসবের কথা মাথায় রেখেই  ত্বকের বিশেষ যত্নের সঙ্গে সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনশৈলীতেও পরিবর্তন আনা একান্ত জরুরি হয়ে পড়ে।

ত্বকের পরিচর্যা

ত্বক স্বাভাবিকের থেকে রুক্ষ হলে সাবান অথবা জল দিয়ে মুখ ধোয়া সমীচীন নয়। বদলে অ্যালোভেরা-যুক্ত ক্লিনজিং জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখেই ত্বক পরিষ্কার করা যায়। তুলোর সাহায্যে এই ক্লিনজিং জেল দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা যাবে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তুলসী, নিম, অথবা চন্দন ক্লিনজিং লোশনযুক্ত ফেস ওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে। ক্লিনজিং-এর পরে ত্বককে টোন করার জন্য গোলাপজল লাগাতে পারেন। তুলো ভিজিয়ে গোলাপজলে ডুবিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

গোলাপজল খুব ভালো প্রাকৃতিক স্কিন টোনার এবং সব রকম ত্বকের জন্য এটি উপযুক্ত। রুক্ষ ত্বকের পুষ্টি ফেরাতে রাতে ত্বক ক্লিনজিং করুন, এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে। মুখে ক্রিম লাগিয়ে ২-৩ মিনিট ত্বক মালিশ করুন এবং ভিজে তুলো দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন।

ত্বকের সুরক্ষার জন্য ময়েশ্চারাইজার-এর ব্যবহার অত্যন্ত লাভজনক। দিনের বেলায় বাইরে বেরোতে হলে, সানস্ক্রীন লাগিয়ে বেরোনো বাঞ্ছনীয়। সূর্যের আলো ত্বকের আর্দ্রতা শুষে নেয়। যদি ত্বক তৈলাক্ত হয় তাহলে সানস্ক্রীন জেল লাগানো দরকার। তৈলাক্ত ত্বকে বেশি ক্রিম লাগাবার প্রয়োজন নেই কারণ ক্রিমের কারণে রোমছিদ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এর ফলে মুখে ব্রণ, ফুসকুড়ি হওয়া শুরু হয়।

নিয়মিত ভাবে মুখে ফেসিয়াল মাস্ক ব্যবহার করলেও অনেক লাভ পাবেন। ২ ছোটো চামচ আটার ভুসি, ১ চামচ বাদাম বা অলিভ অয়েল এবং ১-১ চামচ মধু, দই এবং গোলাপজল মিশিয়ে বাড়িতেই তৈরি করুন ফেস মাস্ক। সপ্তাহে এটি ২ থেকে ৩ বার ত্বকে লাগিয়ে আধঘন্টা রেখে দিন। তারপর জল দিয়ে রগড়ে ধুয়ে ফেলুন।

মু্খের অন্য অংশের পরিচর্যা

ত্বকের যত্নের সঙ্গে সঙ্গে মুখের বিশেষ কিছু অংশের আলাদা করে খেয়াল রাখাটা খুব জরুরি। যেমন ঠোঁটের ত্বক খুব পাতলা এবং ত্বককে মসৃণ রাখার গ্রন্থির অভাব রয়েছে ঠোঁটে। এই কারণেই ঠোঁট তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় এবং বিশেষ করে শীতকালে ঠোঁট ফাটার সমস্যা শুরু হয়। মুখ ধোয়ার পর মৃত ত্বক সরিয়ে ফেলার জন্য নরম তোয়ালে দিয়ে ধীরে ধীরে ঠোঁট রগড়ান।  রোজ ঠোঁটে দুধের সর লাগিয়ে ১ ঘন্টা রেখে দিন। যদি ঠোঁটের রং কালো হয়, দুধের ক্রিম-টা তুলে নিয়ে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশান এবং মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগান। রাতে ঠোঁটে রোজ শুদ্ধ বাদাম তেল অথবা বাদাম ক্রিম লাগিয়ে রাতভর রেখে দিন। ম্যাট লিপস্টিক একেবারেই ব্যবহার করবেন না।

রুক্ষ পা এবং ফেটে যাওয়া গোড়ালির যত্ন নেওয়া বিশেষ জরুরি। না হলে শীতকালে যতই স্টাইলিশ জুতো পরুন, পায়ের শ্রী ফিরবে না। রাতে শোবার আগে ২০ মিনিট মতো গরমজলে পা ডুবিয়ে রাখুন। গরমজলে আগে থেকে নুন এবং শ্যাম্পু মিশিয়ে নিন। গরমজলে গোড়ালির মৃত ত্বক নরম হয়ে যাবে। তারপর হিল স্ক্রাবার -এর সাহায্যে ত্বকের মৃত কোশ তুলে ফেলুন ধীরে ধীরে রগড়ে। মেটাল স্ক্রাবার ব্যবহার করবেন না।

পা ধুয়ে নেওয়ার পর ভালো ক্রিম দিয়ে গোড়ালি এবং পায়ের পাতা মালিশ করুন। ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা পায়ের জন্য তৈরি ক্রিম গোড়ালিতে লাগান। সুতির পাতলা কাপড় বা সার্জিকাল গেজ গোড়ালিতে বেঁধে সুতির মোজা পরে নিন। এর ফলে শুয়ে পড়লেও ক্রিম গোড়ালিতে লেগে থাকবে, সারা বিছানায় লেগে যাবে না। সারা রাত গোড়ালিতে ক্রিম লাগিয়ে রাখার ফলে গোড়লিও নরম থাকবে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...