আমাদের রূপচর্চার একটি অন্যতম প্রসাধনী হল কাজল। আমরা মেয়েরা যেরকম কাজল ছাড়া নিজেদের ভাবতে পারি না, ঠিক সেরকম ছোট্ট বাচ্চাকে কাজল না পরানোর কথা অনেক পরিবারে ভাবতেই পারে না।  আর সে ছেলে হোক বা মেয়ে; শিশুটির চোখে, কপালে, মাথার পাশে কাজল থাকা মাস্ট। কিন্তু এই রীতি মানতে গিয়ে শিশুর চোখের বড়োসড়ো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, সেটা জানেন কী?

ভেবে দেখেছেন, কাজল আসলে কী? কোনও কিছু পুড়িয়ে, তা সে তেল পুড়িয়ে হোক, ঘি পুড়িয়ে হোক, যাই হোক; যে পোড়া কার্বন তৈরি হয়, সেটাই হল কাজল। বাজার চলতি কাজলে থাকে অ্যান্টিমনি  ও সীসা জাতীয় ক্ষতিকারক উপাদান। এগুলি বাচ্চার চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

বাচ্চাদের কাজল পরানো নিয়েও কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। আসুন এর সত্যতা যাচাই করি।

মিথ : বাচ্চাকে চোখে কাজল পরালে তার ওপর কোনও কুনজর পড়বে না।

সত্য : বাচ্চার ওপর কারও কুনজর পড়ে তার শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা নেহাতই কুসংস্কার বা অন্ধবিশ্বাস মাত্র।

মিথ: কাজল পরালে চোখ টানাটানা, উজ্জ্বল ও সুন্দর হয়।

সত্য: চোখ সুন্দর, টানাটানা হওয়া কাজলের ওপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে তার জিন বা গঠনগত বৈশিষ্ট্যের ওপর।

 মিথ: সূর্যের কড়া রোদ এবং বাইরের নানাবিধ ইনফেকশন থেকে বাচ্চার চোখকে বাঁচায় কাজল।

সত্য : রোদ থেকে বাঁচতে কাজলের কোনও ভূমিকা নেই। আর ইনফেকশনের কথা বলতে গেলে কাজল লাগাতে গিয়ে মায়ের আঙুল চোখে লেগে গিয়ে বা কাজল ঢুকে গিয়েই বরং ইনফেকশন হতে পারে।

 মিথ : কাজল পরালে ঘুম ভালো হয়।

সত্য: বাচ্চারা এমনিই অনেক ঘুমোয়। কাজল লাগিয়ে তার ঘুমের পরিমাণ আহামরি কিছু বাড়বে না।

লোকমুখে শুনে বা চলে আসছে বলে এই ধারণাগুলোর কথা অন্ধভাবে মেনে নিয়ে বড়োসড়ো ক্ষতি ডেকে আনবেন না। বাচ্চাকে কাজল পরানো নিয়ে চলতি সবক’টি ধারণাই যে ভ্রান্ত, সে কথা ডাক্তারবাবুরা ক্রমাগত বলে চলেন। মনে রাখবেন চোখ অমূল্য। ছোটোবেলা থেকে চোখের উপর ভুল জিনিস প্রয়োগ করার ক্ষতি, তাকে সারা জীবন বহন করতে হবে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...