অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে নিজেকে সংগীত জগতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন রূপংকর বাগচি। ‘জাতিস্মর’ ছবিতে ‘এ তুমি কেমন তুমি’ গেয়ে জিতে নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। কিন্তু সংগীত-জীবনের সূচনালগ্নে যে-সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিজের পায়ের নীচের মাটি শক্ত করেছেন রূপংকর, সেই কাহিনিও উল্লেখযোগ্য। বুকের গভীরে জমে থাকা অনেক মান-অভিমান, আক্ষেপ তিনি আবেগবসত উগরেও দিয়েছেন অনেক সাক্ষাৎকারে। আবার সাফল্যের জোয়ারে অনেক সময় সবকিছু ভুলে গিয়ে শুধু মেতে থাকতে দেখা গেছে গান নিয়ে। কখনও শ্রোতাদের ভালোবাসার জোয়ারে ভেসে গিয়ে উপহার দিয়েছেন অসাধারণ সব গান, আবার কখনও বিতর্কেও জটিয়েছেন আচমকা। তবে সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে, বিতর্কের অবসানও ঘটাতে পেরেছেন কণ্ঠ উজাড় করা গান উপহার দিয়ে। অর্থাৎ, গান-ই তাঁর সাফল্য এবং ছন্দে ফেরার মাধ্যম।
নব্বইয়ের দশকে গানের জগতে রূপংকরের আত্মপ্রকাশ। রূপংকরের প্রাথমিক শিক্ষগুরু ছিলেন তাঁর মা এবং বাবা দুজনেই। তাঁর আধুনিক থেকে বাংলা ছবির গানের জার্নি নজর কাড়ার মতো। আর বাংলার এই সংগীতশিল্পী রূপংকর বাগচি সম্প্রতি সম্পূর্ণ করেছেন তাঁর গান-জীবনের ৩০বছর। এই উপলক্ষ্যে, এক অভিনব সংগীত-সন্ধ্যা উপহার দিতে চলেছে ‘দ্য ড্রিমার্স’। আগামী ১৮ জুলাই, সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে জিডি বিড়লা সভাঘরে, ‘সংস্কৃতি সাগর’-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হবে রূপংকরের গান জীবনের ৩০ বছর। আর এই অনুষ্ঠানটির নিবেদক—‘শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স’।
অনেকেই জানেন যে, রবীন্দ্রসংগীত, লোকসংগীত, পাশ্চাত্যসংগীত এবং ভারতীয় রাগসংগেতের অনুরাগী রূপংকর। রবীন্দ্রসংগীতে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গান যেমন তাঁর প্রিয়, অন্যদিকে রাহুল দেব বর্মন-এর অনুরাগীও তিনি। ফ্র্যাঙ্ক সিনাট্রা, হ্যারি বেলা ফন্টে, ন্যাট কিং কোল, বিটলস এবং মাইকেল জ্যাকসনেরও ভক্ত তিনি। বিশ্বের বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীদের থেকেও তিনি পেয়েছেন অনুপ্রেরণা।
গান গাওয়া থেকে সুর করা, লেখা, গানকে সাজিয়ে তোলার ভূমিকাতেও রূপংকর বাগচি সাবলীল। কৃষ্টি পটুয়া-র নাটকের দলে তিনি প্রাণ পুরুষ। নাটকে অভিনয়ের পাশাপাশি করেছেন আবহ নির্মাণ এবং গেয়েছেন গান। ওটিটিতে অভিনয় থেকে বিজ্ঞাপনের গান, এই তিরিশ বছরের সফরে এসেছে জাতীয় পুরস্কার, এসেছে অজস্র মনে রাখার মতো গান আর এসেছে সংগীত-মুখর ‘তিরিশটা বৃষ্টি’। ফেলে আসা জীবনের কথায় এবং গানে সমৃদ্ধ হয়ে তাই ১৮ জুলাই জিডি বিড়লা সভাঘরে রূপংকর মুখোমুখি হবেন শ্রোতাদের। আর ওই দিনের অনুষ্ঠানে আলাপচারিতায় থাকবেন বাচিকশিল্পী সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
রূপংকর বাগচি জানিয়েছেন, ‘এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা, পরিবেশনা হবে একদমই অন্যরকম। সচরাচর যে গান গাওয়া হয়ে ওঠেনা, এই অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ভিন্ন ভাবে ধরা দেবে শ্রোতাদের কাছে।’ সুজয় প্রসাদ-এর ফেসবুক পেজ-এ ইতিমধ্যেই এই অনুষ্ঠানের প্রচার শুরু হয়ে গেছে।