এয়ারপোর্ট থেকে কৌশিক কোম্পানির গাড়িতে যখন নতুন বাড়ির দরজায় এসে নামল, তখন বেলা গড়িয়ে গেছে। খুব ক্লান্ত না লাগলেও মনটা ভালো লাগছিল না। স্ত্রী রূপাকে সঙ্গে আনতে পারেনি।   ও নাঙ্গালেই বাপের বাড়িতে রয়ে গেছে। সাত মাস চলছে সুতরাং ওই অবস্থায় এই নতুন জায়গায় ওকে নিয়ে আসতে কৌশিক একেবারেই রাজি হয়নি।

একটা প্রোমোশন এবং ট্রান্সফার নিয়ে কৌশিক চণ্ডীগড় এসেছে। পঞ্জাবের নাঙ্গালেই কউশিকদেরও বাড়ি। ওখানেই ও বড়ো হয়েছে। অবশ্য চণ্ডীগড় আগেও বহুবার এসেছে তবে তখন হোটেলেই থেকেছে। এখন কোম্পানি ওকে বড়ো বাড়ি দিয়েছে।

গেট দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিল কৌশিক। বাড়ির সামনে সুন্দর কেয়ারি করা সবুজ লন। নানারকম ফুলের গাছ লাগানো। দুটো বড়ো গাছও চোখে পড়ল তবে কীসের গাছ বুঝতে পারল না কৌশিক। ওর গাড়ির ড্রাইভারই এগিয়ে এসে দরজার তালা খুলে দিল পকেট থেকে চাবি বার করে আর চাবিটা কৌশিকের হাতে ধরাল।

ততক্ষণে বাইরে অন্ধকার নেমেছে। ড্রাইভার গাড়ি থেকে কৌশিকের দুটো সুটকেস নামিয়ে এনে বাড়ির ভিতরে রেখে ওর অনুমতি নিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেল। কৌশিক ওর মুখেই জেনে নিল পরের দিন অফিস যাওয়ার জন্য ও-ই আবার গাড়ি নিয়ে নটায় উপস্থিত হবে।

কোম্পানির দেওয়া ফার্নিশড ফ্ল্যাটে প্রয়োজনের সবকিছুই রয়েছে সেটা কৌশিক আগেই খবর নিয়ে নিয়েছিল তাই জামাকাপড় এবং টুকিটাকি কয়েকটা জিনিস ছাড়া আর কিছুই সঙ্গে করে আনেনি। আর চণ্ডীগড় বড়ো শহর সুতরাং দরকারে সবকিছুই কিনে নেওয়া যাবে। সোফায় গা এলিয়ে চোখ বুজল কৌশিক। এক কাপ চা হলে মন্দ হতো না। রূপার কথা মনে হল। কী জানি কি করছে ও এখন। মোবাইলটা বার করে রূপার নম্বর মেলাতে যাবে বাইরের দরজায় টোকা দেওয়ার আওয়াজ কানে গেল। উঠে এসে দরজা খুলতেই দেখল তিরিশ একত্রিশ বছর বয়সি এক মহিলা দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন।

জিজ্ঞাসু দৃষ্টি তুলে ধরতেই ভদ্রমহিলা মৃদু হেসে বললেন, ‘ভিতরে আসতে পারি? আমি আপনার উলটো দিকের বাড়িতেই থাকি। কৌশিক তাকে ভিতরে আসতে বলে আবার সোফায় এসে বসল।

মহিলা উলটো দিকের সোফায় এসে বসলন, ‘আমার নাম শ্রীপর্ণা। স্বামী এবং দু’বছরের মেয়ের সঙ্গে থাকি। বাড়িওয়ালা আমাদের পরিচিত। ওনার কাছেই শুনলাম আপনারা আসছেন। একে শহরে আপনারা নতুন, তারপর ঠিক উলটো দিকে থাকি, কী দরকার না দরকার তাই খোঁজ নিতে এলাম।’

কৌশিক কিছুটা ভরসা পেল। রূপার অনুপস্থিতিতে কেউ তো একজন রইল খোঁজখবর নেওয়ার। মুখে হাসি এনে বলল, ‘আপনারা নয়, আমি এখন একাই এসেছি। রূপা, আমার স্ত্রী প্রেগন্যান্ট। দুই আড়াই মাসে ডেলিভারি হয়ে গেলে তারপর এখানে নিয়ে আসব।’

এতক্ষণে কৌশিক লক্ষ্য করল, মহিলার হাতে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ রয়েছে। ওর নজর ব্যাগটির উপর পড়াতে সলজ্জ ভঙ্গিতে শ্রীপর্ণা বলে ওঠে, ‘নতুন জায়গায় এসেছেন, তাই ভাবলাম বাড়ি থেকে একটু চা বানিয়ে নিয়ে যাই’, এই বলে ব্যাগ থেকে ফ্লাস্ক ও দুটি কাপ বার করে টেবিলে নামিয়ে রেখে চা ঢালতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

কৌশিকের দিকে চায়ের কাপটা এগিয়ে দিতে দিতে শ্রীপর্ণা বলল, ‘দেখুন, আমার বানানো চা আবার আপনার পছন্দ হয় কিনা? আমার স্বামী রজত আবার আমার বানানো চা খুব ভালোবাসে খেতে।’

শ্রীপর্ণার অফুরন্ত কথার তোড়ে কৌশিক কী বলবে ভেবে পেল না। মনে হল ভদ্রমহিলা একটু বেশি কথা বলেন। তাও ভদ্রতা করে বলল, ‘আপনার হাতের চা কিন্তু এই তৃষ্ণার্ত-কে খুবই তৃপ্তি দিল। আপনি চা না আনলে আমাকেই রান্নাঘরে গিয়ে কী ব্যবস্থা রয়েছে দেখতে হতো। আপনি বাঁচালেন।’

‘আরে না-না। গতকালই দেখলাম নেমপ্লেট বদলে নতুন লাগানো হচ্ছে। দেখলাম বাঙালি। তখনই ঠিক করে নিয়েছিলাম এলেই আলাপ করব। কর্মসূত্রে আমার স্বামীও এখানে বহুদিন কাটিয়ে ফেললেন। আমি আবার অতশত ফর্মালিটি মেনে চলতে পারি না। নতুন এসেছেন তাই আলাপ করতে চলে এলাম। দেখুন, একসঙ্গে বসে চা খেতে খেতে আলাপ পরিচয়ের পর্বটাও কেমন সারা হয়ে গেল’, এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলে শ্রীপর্ণা।

‘ধন্যবাদ, আমার ভালোই হল আপনি নিজে এসেই আলাপ করে নিলেন। আমার গিয়ে আলাপ জমানোর কষ্টটা লাঘব হল। রূপার আপনার সঙ্গে আলাপ করে খুব ভালো লাগবে।’

সঙ্গে সঙ্গে শ্রীপর্ণা বলে উঠল, ‘কাল রোববার, রজতের ছুটি। লাঞ্চ আমাদের সঙ্গে করবেন। কোনও অজুহাত শুনব না। আর আমি গিয়ে রাতের খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি। আমার মেড এসে আপনাকে দিয়ে যাবে। বাইরের গেট-টা খোলা রাখবেন।’

স্ত্রী-র অনুপস্থিতিতে কৌশিকের মনটা খুব খারাপ লাগছিল, তবু শ্রীপর্ণা আসাতে এবং ওর পরিবারের সঙ্গে আলাপ হবে এই আশায়, কৌশিকের ক্লান্ত চোখ, বিছানায় পড়তেই মুহূর্তে বুজে এল।

পরের দিন লাঞ্চের সময় কৌশিক উপস্থিত হল শ্রীপর্ণাদের বাড়িতে। রজত-ই দরজা খুলে বেরিয়ে এসে ওকে বাড়ির ভিতর নিয়ে গেল। খুবই মিশুকে এবং সরল প্রকৃতির ছেলেটি-র সঙ্গে আলাপ জমতেই কৌশিকের ভালো লেগে গেল ওকে। ওদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তেও বেশি সময় লাগল না। এই সুবাদে শ্রীপর্ণাদের বাড়ি ঘনঘন যাতায়াতও শুরু হয়ে গেল কৌশিকের। রজতেরও এ ব্যাপারে কোনও আপত্তি বা মাথাব্যথা ছিল না কারণ ও জানত শ্রীপর্ণা এরকমই। সুতরাং চেনা পরিচিতদের যাতায়াত লেগেই থাকত বাড়িতে।

শ্রীপর্ণা বরাবরই উচ্ছল এবং চঞ্চল স্বভাবের। নিজের সাজগোজ, পোশাক এই নিয়েই বেশিরভাগ সময়টা কাটাত ও। ফলে ওর সমবয়সি পরপুরুষরা সহজেই ওর প্রতি আকৃষ্ট হতো এবং ওদের মুখ থেকে নিজের প্রশংসা শুনতে ভালো লাগত শ্রীপর্ণার। অথচ রজতের মুখ থেকে কোনওদিন নিজের সম্পর্কে একটা প্রশংসাও শ্রীপর্ণা শোনেনি। এই নিয়ে রজতের প্রতি ওর ক্ষোভের শেষ ছিল না।

কৌশিকও বাড়িতে একা একা হাঁপিয়ে উঠছিল। সারদিন অফিসে কাজের পর বাড়ি ফিরে রূপার সঙ্গে ফোনে কথা সেরে পূর্ণ বিরতি। কিছু করার থাকত না। অফিসের ক্যান্টিন থেকেই খাবার প্যাক করিয়ে ড্রাইভার বাড়ি পৌঁছে দিয়ে যেত। চা, ব্রেড টুকিটাকি একটু-আধটু রান্নাঘরে নিজেই বানিয়ে নিত। শ্রীপর্ণাই ঝোড়ো হাওয়ার মতো সময় অসময় নেই পৌঁছে যেত কৌশিকের এই একাকিত্ব দূর করতে।

ওর প্রতি শ্রীপর্ণার দুর্বলতা বুঝতে অসুবিধা হতো না কৌশিকের সুতরাং সেও এর সদ্ব্যবহার করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করত না। শ্রীপর্ণা বাড়িতে এলেই বলত, ‘দারুণ সুন্দর লাগছে তোমাকে দেখতে।’ আর ওমনি ঝলমল করে উঠতে শ্রীপর্ণার মুখমণ্ডল।

যখনই কৌশিকের বাড়িতে আসত শ্রীপর্ণা রোজই নতুন নতুন শাড়িতে সেজেগুজে। কখনও কৌশিককে নিজের মোবাইলটা ধরিয়ে ছবি তুলে দেওয়ার অনুরোধ করত আবার কখনও নিজেই পোজ দিয়ে সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ত।

একদিন হঠাৎই শ্রীপর্ণা কৌশিককে বলল, ‘আমাকে তোমার বউয়ের ছবি দেখাবে?’

কৌশিক মোবাইল খুলে রূপার ছবি ওর সামনে ধরতেই শ্রীপর্ণা বলল, ‘বাঃ বেশ সুন্দরী তো তবে আমার মতো নয়।’

‘হ্যাঁ, ও খুব সাদাসিধে। সাজগোজ করে না বললেই চলে’, কৌশিক লক্ষ্য করল ওর কথা শুনে শ্রীপর্ণা বেশ খুশি হল।

কৌশিক বাড়িঘর পরিষ্কার করানো এবং রোজকার কাচাকুচির জন্য একটি লোক রেখে দিল। সারাদিন থেকে কৌশিক আসতেই ও বাড়ি চলে যেত। আবার পরের দিন সকালে হাজিরা দিত। মাঝেমধ্যে শ্রীপর্ণা এসে লোকটিকে দিয়ে ভালো করে সারাবাড়ি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরিষ্কার করিয়ে কৌশিকের কোয়ার্টারটা ঝকঝকে করে তুলত।

নিজের বাড়িতেও মেয়েকে দেখাশোনার জন্য সবসময়ের একজন আয়া রেখে দিয়েছিল। কৌশিকের ওর বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন হলেই কোনও না কোনও কাজে মেয়েটিকে বাজারে পাঠিয়ে দিত শ্রীপর্ণা। রজতও সাড়ে নটা-দশটার আগে বাড়ি ফিরত না। সুতরাং বেশ অনেকটা সময় একসঙ্গেই কাটাত ওরা। একে অপরের প্রতি দুর্নিবার আকর্ষণ থাকা সত্ত্বেও মর্যাদার সীমা লঙঘন করার সাহস কেউ-ই দেখায়নি। ওদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক না হয়ে থাকলেও মাঝে মাঝেই কৌশিকের একাকীত্ব ওকে শালীনতার বেড়া ভেঙে দিতে প্ররোচিত করত। শ্রীপর্ণাও হয়তো কৌশিকের এই চাহিদার আগুন অনুভব করত কিন্তু কেন জানি না ভবিষ্যতের কোনও শুভ সময়ের অপেক্ষায় এই মিলনকে দুজনেই স্থগিত রেখে দিয়েছিল।

রজতের উপেক্ষাই হয়তো শ্রীপর্ণাকে ধীরে ধীরে কৗশিকের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল। সমান্য সুযোগ পেলেই ও কৌশিকের বাড়িতে পৌঁছে যেত এবং সেবা যত্নের কোনও ত্রুটি রাখত না। নিজের ব্যবহার দিয়ে যেন পরপুরুষটিকে প্রলুব্ধ করারই চেষ্টা করত ও।

একদিন সন্ধেবেলা অফিস থেকে বাড়ি ফিরে কৌশিক দেখল ওর ড্রয়িং রুমের সেন্টার টেবিলে ফুলদানিতে ফুল সাজানো রয়েছে। জিজ্ঞাসা করতেই কাজের লোকটি বলল, ‘মেম সাহেব এসেছিলেন। উনি এই ফুলগুলো রেখে গেছেন। বলেছেন ওনাকে ফোন করতে।’

কৌশিক ফোন করতেই শ্রীপর্ণার গলা ভেসে এল। ‘ধন্যবাদ শ্রীপর্ণা। হঠাৎ আজ ফুল রেখে এসেছ কেন?’

‘কৌশিক, যেদিন দেখবে ফুলদানিতে ফুল সাজিয়ে এসেছি বুঝবে রজত বাড়িতে নেই এবং ফিরতেও দেরি হবে। তুমি বিনা দ্বিধায় আসতে পারো।’

কৌশিক অফিসের জামাকাপড় না ছেড়েই কাজের লোক-কে ছুটি দিয়ে দিল। দরজায় তালা লাগিয়ে শ্রীপর্ণাদের বাড়ির দিকে পা বাড়াল। আকাশি নীল রঙের শাড়িতে অপূর্ব লাগছিল শ্রীপর্ণাকে। আজ যেন একটু বেশি-ই শৃঙ্গার করেছে ও। কৌশিককে দুই বাহুর আলিঙ্গনে অভ্যর্থনা জানিয়ে ড্রয়িংরুমে এনে বসাল। উচ্ছল শ্রীপর্ণার মায়াবী দুই চোখে কৌশিকের নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছিল।

শ্রীপর্ণা জড়িয়ে ধরল কৌশিকের দুই হাত, ‘কৌশিক, তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে আমি যে কতটা আনন্দ পেয়েছি তা তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না।’

‘আজ তোমাকে দারুণ সুন্দর লাগছে’, কৌশিক নিজেকে রোধ করতে পারল না, ‘এত সুন্দর সেজেছ, অবশ্য না সেজেও তোমাকে সুন্দর লাগে।’

‘প্রশংসা করতে হলে তোমার থেকে শিখে যাওয়া উচিত। তুমি একটু বসো, টিভি-টা চালিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। আমি চট্ করে চা বানিয়ে আনি। মশাইয়ের খাওয়া হয়নি নিশ্চয়ই, মুখটা একেবারে শুকিয়ে গেছে। আমি কিছু নিয়ে আসছি।’ রিমোট-টা কৌশিকের হাতে ধরিয়ে শ্রীপর্ণা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

খানিকক্ষণ পরেই ট্রে-তে করে দুই কাপ চা এবং প্লেটে কিছু স্ন্যাক্স সাজিয়ে কৌশিকের সামনে টেবিল রেখে ওর পাশে সোফায় এসে বসল। ‘কৌশিক, আজ রাতে রজতের ফেরার কথা ছিল। ওকে দিল্লি যেতে হয়েছে অফিসের কাজে। একটু আগেই ফোন করে জানাল ওর ফিরতে কাল রাত হবে। আজ কাজ শেষ হয়নি।’

কৌশিকের মুখে চিন্তার ছায়া পড়ল, ‘তাহলে আজ রাতটা বহ্নিকে নিয়ে তোমাকে একা কাটাতে হবে?’

‘একা কোথায়? তাই তো তোমাকে আসতে বলেছি। মেয়ের আয়াকে বিকেলে ছুটি দিয়েছি। দুদিন ধরেই ও ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে যাবে বলছিল। সুযোগ যখন এসেই গেল… আমাদের কাছে কাল সন্ধে অবধি অফুরন্ত সময়। আমরা ইচ্ছেমতো এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারব। কৌশিক, তুমি নিশ্চয়ই এতদিনে বুঝতে পেরে গেছ আমি তোমাকে অসম্ভব ভালোবাসি।’

শ্রীপর্ণার মুখের কথা শেষ হতেই, কৌশিক নিজের হাত শ্রীপর্ণার বদ্ধমুঠি থেকে মুক্ত করে নিজেকে কিছুটা সরিয়ে আনল শ্রীপর্ণার উষ্ণ সান্নিধ্য থেকে। ওর বিস্ময়মিশ্রিত দৃষ্টি থেকে চোখ সরিয়ে কৌশিক বলল, ‘শ্রীপর্ণা, আমাদের উচিত একটু সিরিয়াস হওয়ার। তোমাকে আমি কিছু বোঝাতে চাই সেটা হয়তো তোমার ভালো নাও লাগতে পারে। দ্যাখো আমি বিবাহিত, রূপা আমাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আর রজতের অনুপস্থিতির সুযোগ আমি কিছুতেই নিতে পারব না। ও আমার বন্ধু। আমি বুঝতে পারি আমার প্রতি তোমার একটা আকর্ষণ আছে সেটা আমিও কিছুটা প্রশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আমার অনুরোধ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করাটা খুব দরকার হয়ে পড়েছে এখন…’

কৌশিককে কথার মাঝেই থামিয়ে দেয় শ্রীপর্ণা, ‘কৌশিক, তুমি ভুল করছ। বি প্র্যাকটিকাল। আমি তোমার এবং তোমার স্ত্রীয়ের মধ্যে দেয়াল না তুলেও তো তোমার সঙ্গে প্রেম করতে পারি। আমাদের সম্পর্কটা গোপন থাকলেই হল। এতে অন্যায় বা কী?’

কথাগুলো বলতে বলতেই কিছু একটা ভাবল শ্রীপর্ণা। তারপর সামান্য হেসে বলল, ‘তুমি আমার থেকে বয়সে বড়ো কৌশিক আর এভাবে কেউ আমাকে কখনও বোঝায়নি। তোমাকে ভালোবেসে আর বন্ধুত্ব করে আমি অনেক কিছু পেয়েছি, শিখেছি সুতরাং এটার দরকার ছিল এবং থাকবেও। রজতকে বিয়ে করে স্ত্রীয়ের দায়িত্ব থেকে আমি কখনও পিছু হটিনি আর কখনও হটবও না কিন্তু ওকে কখনও ভালোবাসতে পারিনি আমি। জানো কৌশিক তোমরা সবাই বলো ও খুব সহজ সরল মানুষ। কিন্তু স্ত্রীকে ভালোবাসার ওর কাছে নাতো সময় আছে আর না ওর চিন্তাতেও এর কোনও গুরুত্ব আছে। স্ত্রীয়ের সুখ-সুবিধে দেখাটা যেমন স্বামীর কর্তব্য তেমন তার শারীরিক

সুখ-চাহিদা পূর্ণ করাটাও স্বামীরই দায়িত্ব’, বলতে বলতে শ্রীপর্ণা অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে, চোখের কোণটা ওর চিকচিক করে ওঠে।

কৌশিক ওর হাতটা নিজের হাতে তুলে নেয়, ‘দেখো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি এখনও তোমার বন্ধু, ভবিষ্যতেও থাকব। আমার মনে সব সময় তোমার জন্য একটা বিশেষ জায়গা তোলা থাকবে।’

রূপার ডেলিভারির সময় দশ দিনের ছুটি নিয়ে কৌশিক নাঙ্গাল চলে গেল। কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার পর রূপাকে ওর বাপের বাড়িতে রেখে কৌশিক চণ্ডীগড় ফিরে এল। শ্রীপর্ণাদের বাড়ি

আসা-যাওয়া আগের মতোই বজায় থাকল কিন্তু দু’জনের ব্যবহার এখন অনেক বেশি সংযত। অফিসের কাজেও অনেকটাই ব্যস্ততা বেড়ে গেল কৗশিকের।

মেয়ে জন্মাবার প্রায় দেড়মাস পর রূপার ভাই এসে বোনকে কৌশিকের বাড়ি ছেড়ে গেল। রূপার শরীরের জন্য ওর একটু যত্নের প্রয়োজন ছিল। দিনের বেলা শ্রীপর্ণা এসে রূপার হাতে হাতে অনেকটাই সাহায্য করে দিত। এটা-ওটা রান্না করে এনে রূপাকে খাইয়ে যেত। নতুন জায়গায় এসে রূপার প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও শ্রীপর্ণা ধীরে ধীরে ওর মন জয় করে নিল। ওদের বন্ধুত্ব দিনেদিনে আরও গাঢ় হয়ে উঠল। শ্রীপর্ণার মুখেই রূপা জানতে পারল যে মাত্র কুড়ি বছর পেরোতে না পেরোতেই ওর রজতের সঙ্গে বিয়ে হয়ে যায়। ফলে বিয়ের আগে কোনও পুরুষের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হওয়ার সুযোগই ঘটেনি শ্রীপর্ণার জীবনে।

একদিন দুই বন্ধুতে কথা হচ্ছিল স্বামী, সংসার ইত্যাদি নিয়ে। শ্রীপর্ণা খুব সহজ ভাবেই রূপাকে বলল, ‘তোমার স্বামীকে আমার খুব ভালে লাগে। উনি এতটাই দয়ালু আর মানুষকে ভালোবাসার ক্ষমতা রাখেন যে, যে-কেউই সহজে ওনার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়বে। তোমাদের দুজনের জুটি ভগবান অনেক সময় ধরে খুব ধৈর্য নিয়ে বানিয়েছেন। তোমাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখলে ঈর্ষা হয়।’

শ্রীপর্ণার কথার উত্তরে রূপা সামান্য হাসল, ‘ঠিকই বলেছ, আগের জন্মে সত্যিই কোনও ভালো কাজ করেছিলাম যার পুরস্কার হিসেবে কৌশিককে জীবনসঙ্গী হিসাবে পেয়েছি।’

রূপা চণ্ডীগড়ে আসার পর এই দুটো পরিবারের মধ্যে অন্তরঙ্গতা আগের থেকেও অনেক বেড়ে গেল। বাচ্চা, বড়ো সকলের জন্মদিনে, বিবাহবার্ষিকী সবকিছুই দুটো পরিবারের মধ্যে ধূমধাম করে পালন করতে শুরু করল ওরা। হইহই করে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, পিকনিকে যাওয়া ইত্যাদি লেগেই থাকত।

ডেলিভারির পর ধীরে ধীরে রূপার শরীরও আগের থেকে অনেক সুস্থ হয়ে উঠল। রজতের সামনে রূপা সবসময় শ্রীপর্ণার প্রশংসা করত। রজতও নিজের স্ত্রীয়ের প্রশংসায় গর্ববোধ করত। নিজেও স্বীকার করত, ‘পর্ণা বরাবরই এরকমই। সবাইকে সাহায্য করে ঠিকই কিন্তু ধন্যবাদ পাবার আশা ও কখনও রাখে না।’

রূপার কাছে রজতকে প্রথমবার নিজের প্রশংসা করতে শুনে শ্রীপর্ণার আনন্দের সীমা থাকে না। কৌশিককে ফোন করে বলে, ‘জানো আজ প্রথমবার রজত রূপার কাছে আমার প্রশংসা করেছে। এই আনন্দের জন্য একটা পার্টি তো হওয়া চাই-ই চাই। এই উপলক্ষ্যে তোমরা আজ সন্ধেবেলায় আমাদের বাড়িতে চা খেতে আসবে। আমি রূপাকে ফোন করে দেব।’ কৌশিকও শ্রীপর্ণার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়।

একদিন অফিস ফেরত বাড়িতে এসে কৌশিক দেখল ড্রয়িংরুমে টেবিলের উপর ফুলদানিতে টাটকা ফুল রাখা রয়েছে। রূপাকে জিজ্ঞেস করতে ও বলল, ‘শ্রীপর্ণা এসেছিল, অনেকক্ষণ বসে আড্ডা মেরে চা খেয়ে একটু আগেই বাড়ি গেল। ওর আমার জন্য ফুল আনতে ইচ্ছে করছিল বলে ফুল নিয়ে এসে ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখল।’

কৌশিক, ফুল আনার কারণ আগেই বুঝে গিয়েছিল। রজত বাড়ি নেই তাই শ্রীপর্ণা কৌশিকের সঙ্গে ওর বাড়িতে একা দেখা করতে চায়। রূপার সঙ্গে বসে চা আর জলখাবার খেয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিল কৌশিক। ঘুমন্ত মেয়েকে একটু আদর করে রূপাকে বলল, ‘অফিসের কাজে আমাকে একটু বেরোতে হবে। এক দেড় ঘন্টার মধ্যে ফিরে আসব।’

শ্রীপর্ণাদের বাড়ি পৌঁছে কৌশিক দেখল ড্রয়িংরুমে বসে শ্রীপর্ণা ওরই অপেক্ষা করছে। কৌশিক আসতেই ওর গলা জড়িয়ে ধরল শ্রীপর্ণা, ‘আজ কতদিন পর তোমাকে এখানে একা ডেকে আনলাম। রজত শহরের বাইরে গেছে কাজে সুতরাং তোমার সঙ্গে একান্তে সময় কাটাবার এটাই সুযোগ। তুমি একটু বসো, আমি চা বানিয়ে আনি’, বলে শ্রীপর্ণা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।

কৌশিক সিলিং-এর দিকে তাকিয়ে সোফায় হেলান দিল। মনের মধ্যে ঝড় চলছিল কৌশিকের। রূপাকে মিথ্যে বলে ও শ্রীপর্ণার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। রূপার প্রতি কেন ও এই অন্যায় করছে? আবার নিজের মনকেই বোঝায় কৌশিক, লুকিয়ে শ্রীপর্ণার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে ঠিকই কিন্তু অন্যায় কাজ বা অশালীন আচরণ কোনওটাই ও করছে না। সুতরাং কেন শুধুশুধু নিজেকে দোষারোপ করা?

চিন্তায় এতটাই আচ্ছন্ন হয়ে ছিল কৌশিক, টের পায়নি কখন শ্রীপর্ণা পাশে এসে বসেছে। ঘোর ভাঙে শ্রীপর্ণার কথায়, ‘কৌশিক কী এত ভাবছ? আজ কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়ছি না। তোমার সঙ্গে আজ আমি চূড়ান্ত সুখ অনুভব করতে চাই। প্লিজ আজ না কোরো না। রজতের ফিরতে রাত হবে।’

স্তম্ভিত হয়ে যায় কৌশিক। স্নায়ুশক্তি লোপ পায় ওর। বোধজ্ঞান সব লুপ্ত হতে থাকে। কলের পুতুলের মতন শ্রীপর্ণার হাত ধরে ওদের বেডরুমে গিয়ে ঢোকে। বিছানায় গিয়ে বসে কৌশিক। হঠাৎ-ই দুজনকে চমকে দিয়ে শ্রীপর্ণার মোবাইলটা বেজে ওঠে। শ্রীপর্ণা ফোনটা দেখে বলে, ‘রূপার ফোন।’

‘শ্রীপর্ণা, তুমি বাড়ি আছ? কৌশিক অফিসের কাজে একটু বেরিয়েছে। খুব বোর হচ্ছি, ভাবছি মেয়েকে নিয়ে তোমার কাছে চলে আসি।’

শ্রীপর্ণা উত্তর দিল, ‘রজতও বাড়ি নেই। আমি খাবার বানাচ্ছিলাম। তুমি বরং চলে এস আর রাতের খাবারও এখানেই খেয়ে নিও।’

ফোন নামিয়ে শ্রীপর্ণা কৌশিকের দিকে তাকায়। ওর সারা মুখে হাতাশার কালো মেঘ নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে। কৌশিকের সংবিৎ ফেরে। ও তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে শ্রীপর্ণার বাড়ি থেকে। কিছুটা এগিয়ে গিয়ে পার্কের একটা বেঞ্চিতে গিয়ে বসে। গত এক ঘন্টার ঘটনাক্রম ভিড় করে আসে ওর চোখের সামনে।

কৌশিক আর শ্রীপর্ণা। দুজনের ভালোবাসার অভিব্যক্তি একেবারে আলাদা। ভালোবাসার সঙ্গে শ্রীপর্ণার চাহিদা দৈহিক মিলনসুখের কিন্তু কৌশিকের কাছে মনের মিলটাই চরম আত্মতৃপ্তির উপকরণ। বৈবাহিক সুখের চরম সীমায় কৌশিক রূপার সঙ্গে আগেই পৌঁছে গিয়েছিল সুতরাং নতুন স্বাদ গ্রহণ করার ইচ্ছা বা মানসিকতা কোনওটাই তার ছিল না।

অথচ শ্রীপর্ণার প্রতি রূঢ় ব্যবহার কিছুতেই করা সম্ভব ছিল না কৌশিকের। ওর জীবনের এই শূন্যতা কৌশিকের অজানা ছিল না। ও এও জানত শ্রীপর্ণা রূপাকে নিজের ছোটো বোনের মতোই স্নেহ করে, সেখানে কোনও ফাঁকি নেই। কৌশিকের একটা ভুল পদক্ষেপ শ্রীপর্ণা-রূপার সম্পর্ক খারাপ করে দিতে পারে একথা ভালো করেই জানত ও। নিজের উপরেই হাসি পায় কৌশিকের। দুই নৌকায় পা দিয়ে এভাবে কতদিন চালাতে পারবে সেটা কৌশিক নিজেও আন্দাজ করতে পারে না।

সেদিন কৌশিক আর রূপার বিবাহবার্ষিকী ছিল। অফিস থেকে বাড়ি ফিরে কৌশিক দেখল রূপা সুন্দর সেজেগুজে রয়েছে।

‘বাঃ আজ খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে। রোজ কেন এভাবে সেজে থাকো না?’ কৌশিক প্রশ্ন করে রূপাকে।

‘তুমি বোধহয় ভুলে গেছ আজ আমাদের ম্যারেজ অ্যানিভার্সারি। আজ আমরা বাইরে ডিনার করব’, রূপা বলে।

‘আমি ভুলিনি। ভেবেই রেখেছি বাইরেই ডিনার সারব। তুমি বরং একটা কাজ করো, শ্রীপর্ণা আর রজতকেও আমাদের সঙ্গে যাওয়ার জন্য বলে দাও।’

শ্রীপর্ণাকে ফোন করতেই শ্রীপর্ণা রাজি হয়ে যায় তবে রজতের অফিসের কাজ থাকায় ওরা তিনজনেই বিবাহবার্ষিকী সেলিব্রেট করে রাতে বাড়ি ফিরে আসে। আসার পথে শ্রীপর্ণাকে ওর বাড়ির দরজায় নামিয়ে দেয় কৌশিক।

পরের রবিবার রূপা, রজতকে ফোন করে, রজত আর শ্রীপর্ণাকে ডিনারে নিমন্ত্রণ জানিয়ে বলে, ‘দাদা, আপনি শ্রীপর্ণাকে নিয়ে রাতের খাবার আমাদের সঙ্গেই খাবেন। আপনি আমাদের বিবাহবার্ষিকীর দিন আসতে পারেননি। রবিবার আপনাকে আসতেই হবে।’

শ্রীপর্ণাদের আসার দিনে রূপাকে সুন্দর করে সাজতে দেখে কৌশিক একটু অবাক হল কারণ সচরাচর রূপা সাদামাটা থাকতেই বেশি পছন্দ করত। অবশ্য ও কিছু জিজ্ঞাসা করল না। যথারীতি শ্রীপর্ণা আর রজত সময়ে পৌঁছে গেল কৌশিকদের বাড়িতে। অন্যদিনের মতোই সেজেগুজে অসাধারণ সুন্দর লাগছিল শ্রীপর্ণাকে। কিন্তু রূপার সামনে শ্রীপর্ণার প্রশংসা করাটা কৌশিকের উচিত মনে হল না। কৌশিক ওদেরকে অভ্যর্থনা জানিয়ে ড্রয়িংরুমে এনে বসাল। কিন্তু শ্রীপর্ণা নিজেকে সংযত রাখার কোনওরকম চেষ্টা না করেই কৌশিকের সামনে এসে জিজ্ঞেস করল, ‘বললে না তো আমাকে কীরকম লাগছে দেখতে?’

উত্তর দিতে ইচ্ছে করছিল না কৌশিকের, তবুও চাপা স্বরে বলল, ‘ভালো লাগছে।’

এরই মাঝে রূপা অতিথিদের জন্য শরবতের গেলাস নিয়ে ঘরে ঢুকল। সকলের হাতে গেলাস ধরাতে ধরাতে হঠাৎ-ই রজতের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে রূপা বলল, ‘দাদা, আজ কিন্তু আমি শুধু আপনার জন্যই সেজেছি। আশা করি আপনার চোখে আমি আজ সুন্দর হয়ে উঠতে পেরেছি। বলুন না… আমি চাই আজ অন্তত আমার প্রশংসায় আপনি দুটো কথা বলুন।’

রজত রূপার অনুরোধে অস্বস্তিতে পড়লেও মুখে কিছু প্রকাশ করল না, বরং সামান্য হেসে বলল, ‘বউদি, আপনাকে না সেজেও দেখেছি আবার আজ সেজেগুজেও দেখছি। দু’ভাবেই আপনাকে সুন্দর লাগে দেখতে।’

‘দাদা, এই কথাগুলো শ্রীপর্ণাকে বলাও এবার আপনাকে অভ্যাস করতে হবে।’ এই বলে রজতের হাত শ্রীপর্ণার হাতে তুলে দিয়ে রূপা বলল, ‘শ্রীপর্ণা, আজ এই উপলক্ষ্যে তোমাদের জন্য স্পেশাল রসোগোল্লার পায়েস বানিয়েছি। চলো সবাই মিলে একসঙ্গে খেতে বসা যাক। খেতে খেতেই গল্প করা যাবে।’

হইহই করে ডিনার খাওয়া শেষ হতে, রজত আর শ্রীপর্ণা বাড়ি ফেরার জন্য উঠে দাঁড়াল। রূপা ওদের দুজনের খুব কাছে সরে এসে রজতের উদ্দেশ্যে বলল, ‘দাদা, স্ত্রী সবসময় স্বামীর ভালোবাসা পাওয়ার় জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। মনে ভালোবাসা থাকলেও তার মৌখিক প্রকাশটুকুও কিন্তু স্ত্রীয়ের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্ত্রী এতে সুখী হয়। কাজের ব্যস্ততা অন্য জায়গায় কিন্তু স্ত্রী-পরিবারের সুখ দেখাটাও স্বামীর দায়িত্ব কর্তব্য। আমার কথা শুনুন, আজ থেকে শ্রীপর্ণার প্রতি ভালোবাসা মুখেও প্রকাশ করুন। ওর প্রশংসা করুন যা ও আপনার কাছ থেকে শুনতে চায়। কতদিন আর কৌশিক আপনার হয়ে প্রক্সি দেবে? এবার তো এই দায়িত্ব আপনাকেই নিজের কাঁধে তুলে নিতে হবে।’

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...