অফিসে লাঞ্চটাইম চলছে। অসিত খেয়াল করল শ্রেয়া এক মনে নিজের টেবিলে বসে কাজ করছে। ওর পিছনে লাগার ইচ্ছেটা কিছুতেই দমন করতে পারল না অসিত। শ্রেয়ার টেবিলের সামনে এসে দাঁড়াল, কী ম্যাডাম, এরকম একজন স্মার্ট হ্যান্ডসাম পুরুষমানুষ আপনার সামনে দাঁড়িয়ে অথচ আপনার চোখ টেবিলে রাখা খাতায় নিবদ্ধ। এটা আমার প্রতি অবিচার নয়?
কোনওরকম ভনিতা ছাড়াই শ্রেয়া মুখ তুলে অসিতের দিকে চাইল, মুখে একটু হাসি টেনে উত্তর দিল, উফঃ অসিত আবার তুমি আরম্ভ করেছ?
ম্যাডাম আমি এটাই জিজ্ঞাসা করতে এসেছিলাম আজ রাতের ডিনার কি আমাকে একাই খেতে হবে, নাকি ম্যাডাম তাঁর মহামূল্যবান সময়ে কিছুটা আমার জন্য ব্যয় করতে পারবেন?
অসিতের অতি নাটকীয়তা দেখে শ্রেয়া আর গম্ভীর থাকতে পারে না, হেসে ফেলে।
কারণটা জানতে পারি অসিত?
একটা ভালো রেস্তোরাঁর কথা সন্দীপ বলছিল।
আমাকে এসব বলার মানে কি?
ওখানকার ইটালিয়ান ফুড নাকি দারুণ পপুলার।
তো?
প্লিজ আজ রাতে আমার সঙ্গে ওখানে ডিনারের জন্য হ্যাঁ করে দাও।
সরি, অসিত, আমার একটা...।
কাজ আছে। এই ডায়লগ আমি রোজ শুনি তোমার মুখে। এবার অ্যাটলিস্ট ফর এ চেঞ্জ হ্যাঁ বলে দাও।
না, আর এবার আমার মাথা খাওয়া বন্ধ করো। হাসতে হাসতে ধমকের সুরে বলে শ্রেয়া।
অসিত শ্রেয়ার সামনে রাখা চেয়ারটা টেনে নিয়ে বসতে বসতে আহত স্বরে বলে, শ্রেয়া, আমাকে কি তুমি ভালো বন্ধু বলে মনে করো না?
তোমার থেকে ভালো বন্ধু আমার আর কেউ নেই।
তাহলে তুমি আমার সঙ্গে কেন ডিনারে যেতে পারো না?
কারণ তুমি বন্ধুত্বের সীমা লঙ্ঘন করে আমাকে ফাঁসাবার চক্করে রয়েছ।
আমাদের বন্ধুত্ব ভালোবাসার পরিণতি পেলে বরং ভালোই। এতে তোমার এত আপত্তি কেন? কখনও না কখনও তো তোমাকে নিজের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতেই হবে, তাই না? সুতরাং আমার থেকে ভালো জীবনসঙ্গী তুমি কোথায় পাবে? অসিত খুব কায়দা করে নিজের কলার উঠিয়ে এমন মুখভঙ্গি করল, শ্রেয়া খিলখিল করে হেসে উঠল।