শাড়ি ভারতের প্রাচীনতম পরিধান এবং পারম্পরিকও বটে। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে, বিভিন্ন ভাবে শাড়ি পরার চল আজও বর্তমান। অনেকেরই ধারণা শাড়ি পরা মানেই ‘বেহেনজি টাইপ, আউটডেটেড লুক । অথচ ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। অন্যান্য পোশাকের তুলনায় শাড়িতেই সেক্সি ও আকর্ষণীয়া হয়ে ওঠার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। আধুনিকারা হিন্দি ছবির হিরোইনদের আইডল মেনে তাদেরই ফ্যাশন ফলো করেন । আজকাল বহু হিন্দি ছবিতেই গ্ল্যামারাস হিরোইনরা শাড়ির সৌন্দর্যকে অন স্ক্রিন ফুটিয়ে তুলছেন। ফ্যাশনে শাড়ি আজও তাই স্ব-মহিমায় বিরাজমান। শুধুমাত্র শাড়ি পরার সময় কয়েকটি বিষয় যদি খেয়াল রাখা যায়, তাহলেই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে আপনি থাকবেন, এতে সন্দেহ নেই। সুতরাং কীভাবে শাড়িতে নিজেকে ফ্যাশনেবল করবেন, এখানে রইল তারই কিছু সাজেশন।
শাড়ির ফ্যাব্রিক
নিজেকে হট ও গ্ল্যামারাস করে তুলতে প্রথাগত সিল্ক শাড়ি বা অন্য ফ্যাব্রিক না বেছে শিফন, জর্জেট বা ক্রেপ বাছুন। শিয়ার শাড়ির ফ্যাশন এখন খুব চলছে। লাইট ফ্যাব্রিক ক্যারি করা খুব সুবিধা। শাড়ির প্রিন্ট এবং প্যাটার্নও খেয়াল রাখা উচিত। প্রিন্টেড শাড়ির থেকেও প্লেন শাড়িতে গ্ল্যামারাস হয়ে ওঠার সুযোগ অনেক বেশি। আজকাল হাফ শাড়ির প্যাটার্নও খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই প্যাটার্নে শাড়ির অর্ধেক প্রিন্টেড হয়, বাকি অর্ধেক প্লেন।
শাড়ি পরার নিয়ম
সঠিক উপায়ে শাড়ি পরাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নাভির উপর থেকে শাড়িটা গোঁজা আরম্ভ করতে হয়। এতে আপনার ফিগার বা শরীরের শেপ স্পষ্ট হবে। কোমরের অংশ খোলা রাখতে চাইলে আঁচল প্লিট করা অবস্থায় স্লিক ড্রেপ করুন। আর যদি কোমর ঢাকা রাখতে চান তাহলে আঁচলে প্লিট্স না করে হাতের উপর দিয়ে ছড়িয়ে দিন।
ব্লাউজ
শাড়িকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ব্লাউজ অনেকটাই সাহায্য করে। আজকাল মিক্স এবং ম্যাচ ফ্যাশনের প্রচণ্ড ডিমান্ড। প্লেন শাড়ির সঙ্গে প্রিন্টেড ব্নাউজ এখন ট্রেন্ডিং৷ব্লাউজ, শাড়ির স্টাইলকে অনেক বেশি ফুটিয়ে তোলে। নানা প্যাটার্নের আকর্ষণীয় ব্লাউজ বাজারে পাওয়া যায়৷
- হল্টার নেক ব্লাউজ
- স্প্যাগেটি স্ট্র্যাপ ব্লাউজ
- ফুলস্লিভ বা থ্রি কোয়ার্টার স্লিভ-এর ব্যাকলেস ব্লাউজ
- ওয়াইড নেক ব্লাউজ
- স্টাইলিশ র্যাপআপ শাড়ি ব্লাউজ
- এমবস্ড এমব্রয়ডারি ব্লাউজ
- মডার্ন চোলি ব্লাউজ
- শিয়ার ব্যাক শাড়ি ব্লাউজ
শাড়ির সঙ্গে অ্যাক্সেসরিজ
খুব সামান্য অ্যাক্সেসরিজ পরেই আপনি হয়ে উঠতে পারেন হট এবং গ্ল্যামারাস। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে স্টেটমেন্ট ইয়াররিংস পরলেই যথেষ্ট। স্টেটমেন্ট ক্লাচ ব্যাগটা ভুললে কিন্তু চলবে না। পেন্সিল হিল আপনার সাজ সম্পূর্ণ করবে।
হেয়ার স্টাইল
হাই বান হেয়ারস্টাইল – যদি ব্লাউজের নেকলাইন খুব ছড়ানো এবং বড়ো হয় অথবা স্ট্র্যাপলেস ব্লাউজ হয়, তাহলে এই হেয়ারস্টাইল খুব ভালো মানাবে।
স্ট্রেট হেয়ারস্টাইল – খুব তাড়াতাড়ি সাজ কমপ্লিট করতে চাইলে এই হেয়ারস্টাইল বেছে নিতে পারেন। এটি সিম্পল এবং এলিগ্যান্ট-ও বটে।
ব্যাগ্স হেয়ারস্টাইল – যাদের চুল লম্বা তাদের জন্য এই স্টাইল এখন ফ্যাশনে ইন। ওয়েস্টার্ন ড্রেসেজ এবং শাড়ি উভয়ক্ষেত্রেই এই স্টাইল খুব মানানসই।
সিম্পল শর্ট কাট হেয়ারস্টাইল – হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি-তে মন্দিরা বেদী খুব সুন্দর ভাবে এই হেয়ারস্টাইল ক্যারি করেন এবং তাঁর দৌলতেই এই স্টাইলটি ইয়ং জেনারেশনের মধ্যে এতটা পপুলার হয়ে উঠেছে। এই স্টাইলের সঙ্গে বড়ো ইয়াররিংস এবং নেকপিস খুব ভালো মানাবে।
সিম্পল পনিটেল -পনিটেলের সঙ্গে ডিজাইনার ব্লাউজ ম্যাচ করিয়ে নিজেকে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলতে পারেন। এই হেয়ারস্টাইল আপনাকে দেবে ক্লাসিক লুক। শাড়ির সঙ্গে এই স্টাইলটি খুবই ভালো লাগে এবং ইয়ং জেনারেশনের কাছে এই স্টাইলটি খুবই পছন্দের।
ভারতীয় ডিজাইনাররা বরাবরই শাড়িতে নিজেদের ডিজাইনের নিজস্বতা প্রমাণ করে সারা বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছেন৷ শাড়ির খ্যাতি দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মার্কেটে পৌঁছে দিতে সমর্থ হয়েছে।
প্রয়াত সত্য পল নিজস্ব প্রিন্টেড ফাঙ্কি ডিজাইনের জন্য বিশ্ববন্দিত।মনীষ মালহোত্রা বলিউড এবং ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে সুলতান অফ শাড়ি বলে খ্যাত।সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের ডিজাইন করা শাড়ির খ্যাতি সারা বিশ্বজোড়া।তরুণ তাহিলিয়ানী তাঁর ব্রাইডাল শাড়ির জন্য বিখ্যাত।শাড়ি এবং লহঙ্গার ফ্যাব্রিকের উপর হেভি ব্রাইডাল ডিজাইনার রেঞ্জ -এর জন্য ঋতু কুমারের প্রসিদ্ধি।গৌরাঙ্গ শাহ হায়দরাবাদের ডিজাইনার। এনার জামদানী উইভার্স-এর একটি বড়ো ক্রিয়েটিভ টিম রয়েছে। এঁরা সাধারণত হ্যান্ডমেড মাস্টার পিস বানান। এছাড়াও অনিতা ডোগরে, অর্পিতা মেহেতা, রোহিত বাল, নীতা লুল্লা ইত্যাদি ডিজাইনাররাও যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন এবং বিশ্বের বাজারে শাড়িকে বিশেষ পরিচিতি দিতে এঁদের অবদানও কিছুমাত্র কম নয়।