যে-কোনও বয়সের মনুষের ত্বকে-ই পড়ে রোদের কুপ্রভাব। তবুও, কোনওরকম প্রোটেকশন না নিয়েই প্রখর রোদে বেরিয়ে পড়েন অনেকে। অবশ্য এরজন্য ভুলের মাশুলও গুনতে হয় তাদের। ক্ষতি হয় ত্বকের। বিউটি এক্সপার্ট শাহনাজ হুসেনের মতে, আমাদের দেশীয় আবহে হালকা রোদ থেকে কিছুটা উপকার পেলেও, প্রখর রোদ বেশিক্ষণ গায়ে মাখলে ত্বকের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বিশেষকরে ফর্সা ত্বকের উপর বেশি পড়ে রোদের কুপ্রভাব। তুলনায় কৃষ্ণবর্ণদের ক্ষতি হয় কম। কারণ, কালো ত্বকে মেলানিন-এর মাত্রা বেশি থাকায় রোদের বিরুদ্ধে অনেকটা লড়াই করতে পারে।
আসলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি আমাদের শরীরের গভীরে ঢুকে যায়। তাই এই রশ্মি শুধু ত্বকের উপরিভাগেরই ক্ষতি করে না, ত্বকের গভীরে গিয়েও ক্ষতি করে। কেউ যদি দীর্ঘ সময় সরাসরি প্রখর রোদে থাকেন, তাহলে ত্বকের বয়স হঠাৎই বেড়ে যাবে এবং ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট হবে। এমনকী, স্কিন ক্যান্সারও হতে পারে। আর এইরকম বড়ো অসুখ যদি না-ও হয়, তাহলে ত্বক শুষ্ক এবং রুক্ষ তো হবেই। শুধু তাই নয়, রক্তবাহী নালীর উপর প্রভাব পড়ে ত্বক লালবর্ণ ধারণ করে।
সানবার্ন প্রসঙ্গে
সূর্যের কিরণে থাকা আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি যখন সরাসরি ত্বকের উপর এসে পড়ে, তখন ত্বক জ্বালাজ্বালা করে। এরপর ত্বকের উপর লাল সর্ষের মতো দানাদানা বেরিয়ে চুলকাতে থাকে। আসলে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকে থাকা মেলানিনকে নষ্ট করে দেয়। ফলে, ত্বক পুড়ে কালো হয়ে যায়। প্রখর রৌদ্রকিরণ দীর্ঘ সময় সরাসরি ত্বকের উপর পড়লে ফোটোএজিং-এর সমস্যা তৈরি হয়। এরফলে অসময়ে ত্বকে ভাঁজ পড়ে এবং ত্বক ঝুলে যায়। আর শীতকালের তুলনায় গরমকালে সানবার্ন-এর শিকার বেশি হতে হয় কারণ, গরমকালে সূর্য সরাসরি সবচেয়ে বেশি তাপ বিকিরণ করে। ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমকালে সানবার্ন-এর পাশাপাশি, স্কিন অ্যালার্জিও একটা বড়ো সমস্যা। অতিরিক্ত গরম থেকেই তৈরি হয় এই সমস্যা। এছাড়া, ডিয়োডারেন্ট, সাবান, পারফিউম প্রভৃতি ব্যবহারের পর তা প্রখর রোদের সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও স্কিন অ্যালার্জি তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে ডিয়োডারেন্ট এবং সাবান থেকে হয় ফোটোকৌটেক্ট অ্যালার্জি এবং পারফিউম থেকে হয় কুমোরিন সাবস্ট্যান্ট অ্যালার্জি। আবার ফিনোথাইজিন, টেট্রাসাইক্লিন, সালফোনামাইড জাতীয় ওষুধ থেকেও অনেকের অ্যালার্জি হয়। তবে সাবান, পারফিউম কিংবা ওষুধ, এসব থেকে অ্যালার্জি তখনই হয়, যখন এগুলো প্রখর রোদের সংস্পর্শে আসে। অর্থাৎ, শরীরে যখন আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি প্রবেশ করে, তখনই রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষতিকারক প্রভাবে অ্যালার্জি হয়।