যে দল ক্ষমতায় থাকে, সেই দলের লোকেরা কোনও সমস্যা কিংবা অপরাধ দেখতে পান না। হয় তারা চোখ বন্ধ করে রাখেন অথবা দেখেও না দেখার ভান করেন। তাই বড়ো কোনও অপরাধের ঘটনা ঘটলেও তাদের বলতে শোনা যায়--- কোনও সমস্যা তো নেই, সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। কারণ তারা রাম, শিব, বিষ্ণু, ব্রহ্মা এবং অন্যান্য শত শত দেব-দেবীর আশীর্বাদপ্রাপ্ত। কিন্তু বাস্তবে, এই ‘পূজারী’-দের যুগে যে পরিমাণ অপরাধ, ধর্ষণ ও খুন হচ্ছে, তা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করছে না ববং তাদের এখন শিক্ষিত লোকেরা ঘৃণার চোখে দেখছে। তবু আজও কারও বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ সংঘটিত হলে, তা তার এই জন্মে বা পূর্বজন্মের কৃতকর্মের ফল বলে তুলে ধরছে ভণ্ড ধার্মিকরা।
কয়েক মাস আগে মধ্যপ্রদেশে একটি মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। দুই সেনা কর্মকর্তার সামনে, তাদেরই সঙ্গে আসা দুই তরুণীকে রাতে গণধর্ষণ করা হয়। আবার ৪ অক্টোবর পুণেতে তিনজন পুরুষ মিলে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে তারই পুরুষ বন্ধুর সামনে। একদিকে যেমন এই ধরনের নারকীয় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলেছে, অন্যদিকে আবার ধর্ষণ নিয়ে চলছে রাজনীতি। এই যেমন কলকাতার চিকিৎসক তরুণীর ধর্ষণ এবং খুনকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে ফায়দা নেওয়ারও চেষ্টা হচ্ছে। মধ্যপ্রদেশের মহু, কলকাতার আরজিকর এবং পুণেতে হওয়া ধর্ষণের ঘটনাকে 'বিচ্ছিন্ন ঘটনা' আখ্যা দিয়েছেন কেউ কেউ।
আবার ধর্ষণ নিয়ে ধর্মীয় রাজনীতিও হয়। ধর্মের দোকানদাররা বোঝাতে চান যে, ‘কেউ যদি কোনও ভুল করে থাকে, তাহলে সরকার তাকে শাস্তি দেবে, নয়তো সে এই জীবনে অথবা মৃত্যুর পর শাস্তি পাবেই ভগবানের কাছে।'
যুবতিরাও অনেকে এই মিথ্যাচারে গভীর ভাবে বিশ্বাস করে চলেছেন এবং তারা সংবিধান দ্বারা প্রণীত আইনি শাসনের চেয়ে ধর্মের বিধি-বিধানে বেশি বিশ্বাস করছেন। অনেকে মনে করছেন যে, তাদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটলে, স্বয়ং ভগবান অপরাধীকে শাস্তি দেবেন। আর এই বিশ্বাসের ফলেই তারা জরুরী পরিস্থিতিতেও, নিজে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে, সুরক্ষার জন্য পূজাপাঠ করে তার সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিচার চাইছেন।