সূর্য পারদ চড়াচ্ছে বলে তো আর অফিস যাওয়া বন্ধ রাখা যায় না। ফেলে রাখা যায় না নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। তাই এই দগ্ধানো তাপের সঙ্গে ‘পাঙ্গা’ নেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন। হালফিল সময়ের মেয়েরা যে-কোনও চ্যালেঞ্জকেই নিতে পারেন হাসিমুখে। ক্লান্তি নিবারণী কিছু টোটকাও তাই তারা বের করে ফেলেছেন, যাতে করে এই দুর্দান্ত গ্রীষ্মের চোখরাঙানিকেও ‘ডোন্ট কেয়ার’ করা যাবে।
এই অসহনীয় তাপের প্রকোপে সবচেয়ে বড়ো সমস্যাটা হল এনার্জি লেভেল ড্রপ করা। সুতরাং নিজেকে পুনরায় এনার্জিটিক করে তুলতে কিছু ফুড সাপ্লিমেন্টস-এর প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন নিউট্রিশনিস্টদের পরামর্শ মতো এখানে আপনার জন্য কিছু তথ্য একত্রিত করা হয়েছে, যা আপনাকে প্রাণচঞ্চল থাকতে সাহায্য করবে।
ফুড সাপ্লিমেন্টস-এর সহজ বিকল্প
এনার্জি বাড়ানোর প্রাথমিক শর্ত হল প্রত্যেকদিন ফুল কোর্স ব্রেকফাস্ট করা। কারণ সকালের এই আহার আপনাকে সারাদিনের প্রয়োজনীয় এনার্জির জোগান দেবে। তাই এমন খাবার ব্রেকফাস্ট-এ রাখুন যাতে প্রোটিন ও ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকে আর সুগার ও ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। ব্রেকফাস্টে তাই ফল, বিনস, স্প্রাউট্স প্রভৃতি অবশ্যই রাখুন।
ক্লান্তি নিবারণের জন্য প্রয়োজন হেলদি ডায়েট। আপনার ডায়েটে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাদ্য অবশ্যই রাখুন। শরীরকে অ্যাক্টিভ রাখতে এগুলো অত্যন্ত জরুরি।
ওটমিল – স্ট্রেস ও ক্লান্তি কমাতে ওটমিল একেবারে পারফেক্ট খাবার। এতে উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, গ্লাইকোজিনের আকারে শরীরে জমা হয়, ফলে দিনভর আপনার মস্তিষ্ক ও মাংসপেশিগুলো সক্রিয় থাকে। এছাড়াও এই খাবারের পৌষ্টিক গুণ, এনার্জি লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে।
হার্বাল ড্রিংক – হার্বাল ড্রিংক, যেমন আমলকী বা অ্যালোভেরা জুস বা গ্রিন-টি, শরীরের এনার্জি লেভেল-কে ধরে রাখে। এর কারণ এই ধরনের পানীয়গুলোতে এমনই পৌষ্টিকগুণ থাকে, যা আমাদের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। এখন বাজারে নানা রকমের হার্বাল-টি পাওয়া যায়, যাতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট্স-এর এবং ফ্ল্যাভোনাইড-এর উচ্চমাত্রায় উপস্থিতির ফলে, শরীরের হারানো এনার্জি পুনরুজ্জীবিত হয়, পাচনতন্ত্র মজবুত হয়, এবং ডিটক্সিফিকেশনের কাজটিও হয়ে যায়।
কলা – কলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে, যা শরীরে উপস্থিত শর্করাকে এনার্জিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। এছাড়া কলায় আরও অনেক পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে, যার দ্বারা স্ট্রেস কমে, মাসল্ পেন কমে এবং ক্লান্তি দূর হয়।
আখরোট – গ্রীষ্মকাল, সুতরাং গরমে কষ্ট হবে ভেবে রেগুলার ওয়ার্কআউট কিন্তু ছাড়বেন না। ওয়ার্কআউট অবশ্যই করুন, কিন্তু তারপর কয়েকটি আখরোট খেয়ে নিন। ক্লান্তি দূর করতে, ফাইবারযুক্ত আখরোট অত্যন্ত কার্যকর। এগুলি ওমেগা-৩ ও ফ্যাটি অ্যাসিড-এ ভরপুর, ডিপ্রেশান দূর করতে সহায়ক।
দই – দই-তে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট থাকে। যা ক্লান্তির সঙ্গে যুঝতে সাহায্য করে। যখনই এনার্জির প্রয়োজন বোধ করবেন খানিকটা টক দই খেয়ে নেবেন। কাজে গতি ফিরে আসবে। তবে খেয়াল রাখুন দইটা যেন ডাবল টোনড দুধের হয়।
পালং শাক – ক্লান্তি উপশমের জন্য হাতে-গরম টোটকা হল আয়রন-এ সমৃদ্ধ পালং শাক খাওয়া। মেটাবলিজম বাড়ানোর কাজেই বলুন বা এনার্জি লেভেল নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য– পালং শাক একেবারে অব্যর্থ দাওয়াই।
পি-নাট বাটার – এই জিনিসটিতে নিউট্রিয়েন্টস্, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট্স ও ভিটামিন মজুদ রয়েছে। এর প্রত্যেকটিই আপনার শরীরের কোনও না কোনও উপকারে লাগে। পি-নাট বাটার-এ রয়েছে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ক্ষতিকর কোলেস্টেরল লেভেল কমায় এবং প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
বিন স্প্রাউট্স – অঙ্কুরিত মুগ বা ছোলা শরীরকে মজবুত করতে সাহায্য করে। প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কফি – কফির সঠিক পরিমাণ শরীরের এনার্জি বুস্ট আপ করে ও ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে। কফি খাওয়ার পর ওই জন্য ভেতর থেকে একটা শক্তি অনুভব করবেন।
ড্রাই ফ্রুটস – শুকনো খেজুর, কিশমিশ, মুনাক্বা, চিলগোজা, বাদাম প্রভৃতি ড্রাইফ্রুট শরীরে শক্তি জোগায়। এগুলি নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং রোগের সঙ্গে লড়ার ক্ষমতাও বাড়ে।
জল – শরীরকে হাইড্রেট করতে, ক্লান্তি হঠাতে জলের কোনও বিকল্প নেই। প্রচুর জল খান যাতে ডিহাইড্রেশন রোধ হয়। শুধু জল ছাড়াও, ডাবের জল বা যে-কোনও ফলের রস খুবই উপকারী।




 
        
    
