সন্তান প্রসবের পরে কোনও মহিলা আত্মহত্যা করলেন। তার স্বামী পুলিশকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করলেন যে, তিনি নির্দোষ, বরং তার স্ত্রীই কয়েকদিন ধরে কেমন অদ্ভুত আচরণ করছিলেন। তা সত্ত্বেও পুলিশ স্বামী ও তার পরিবারের সকলকে গ্রেফতার করে বিচারে পাঠাল। এরকম ঘটনা আমাদের দেশে অসংখ্য। কিন্তু মহিলাটির আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ কী? এ প্রশ্ন থেকেই যায় ।
বিষয়টা বুঝতে হলে প্রথমে জানতে হবে ডিপ্রেশন কাকে বলে? এটা কিন্তু কয়েক দিনের মন খারাপের থেকে অনেক বড়ো ব্যাপার। ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ একটি সিরিয়াস সাইকোলজিক্যাল অসুখ। দুঃখ, উদ্বেগ ও শূন্যতার অনুভূতি এক্ষেত্রে দৈনন্দিন কাজকর্মের ব্যাঘাত ঘটায়। এই অনুভূতিগুলো হালকা থেকে গভীর হতে পারে এবং একমাত্র সঠিক চিকিৎসায় তা দূর করা যায়।
প্রশ্ন : কী করে আমরা বুঝব পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন হয়েছে?
উত্তর : প্রেগন্যান্সির সময়ে বা প্রসবের পরে মন খারাপের অথবা কিছুই ভালো না লাগার অনুভূতি হতেই পারে। কিছু স্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণে এরকম হয়। কিন্তু কতগুলো সিম্পটমের কোনও একটাও যদি দু-সপ্তাহের বেশি চলতে থাকে তাহলেই সাবধান হতে হবে, যেমন :
- অস্থিরতা বা মুডের হেরফের
- মন খারাপ বা অসহায় বোধ
- অত্যধিক কান্না পাওয়া
- উৎসাহ বা এনার্জির অভাব
- অতিরিক্ত বা অতি অল্প খাওয়া বা ঘুম
- মনসংযোগে বা সিন্ধান্ত নিতে অসুবিধা
- স্মৃতিশক্তির সমস্যা
- নিজেকে মূল্যহীন বা দোষী মনে করা
- আগে উপভোগ করা বিষয়গুলোয় উৎসাহ বা আনন্দ হারানো
- বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা
- ব্যথা, বেদনা, মাথা-যন্ত্রণা বা পেটের গোলমাল যা কিছুতেই সারছে না
প্রঃ পোস্ট-পার্টাম ডিপ্রেশন কেন হয়?
উঃ কোনও কোনও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ডিপ্রেশনে ভোগার প্রবণতা থাকে। এরকম ডিপ্রেশনের ইতিহাস আছে এমন পরিবারের মহিলাদের প্রসবের আগে ও পরে ডিপ্রেশনে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। অনেক সময় দেখা যায় যে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনের কারণ শরীরে হরমোনের মাত্রার তারতম্য। প্রেগন্যান্ট অবস্থায় শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন নামক স্ত্রী হরমোনগুলির মাত্রা প্রচুর বেড়ে যায়। আবার সন্তান প্রসবের পরবর্তী চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে অতি দ্রুত সেই মাত্রা স্বাভাবিকে ফিরে আসে। এই বড়োসড়ো পরিবর্তন ডিপ্রেশনের অন্যতম কারণ বলে মনে করা হয়, ঠিক যেমন পিরিয়ডের সময় ছোটোখাটো হরমোনের মাত্রার তারতম্যের জন্য মুডের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ হল :