বর্ষা যেমন গরমের অস্বস্তি থেকে কিছুটা মুক্তি দেয়, ঠিক তেমনই সঙ্গে নিয়ে আসে রোগ-জীবাণু। যার মধ্যে রয়েছে সংক্রামক রোগ এবং হজমের সমস্যা। আসলে, বর্ষায় জল জমে সমস্যা তৈরি করে, যার ফলে মশার বংশবৃদ্ধি হয় এবং এর ফলে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বর ছড়িয়ে পড়তে পারে। অবশ্য, সমস্যা যেমন আছে, তেমনই রয়েছে সমাধানের উপায়ও। আপনি যদি স্বাস্থ্য সচেতন হন, তাহলে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই বর্ষার সময় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা অনেকাংশেই কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করার জন্য কোথাও জল জমতে দেওয়া যাবে না এবং শিশু সহ সকলেরই মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করা উচিত। এই বিষয়ে আরও অনেক রকম পরামর্শ দিয়েছেন সল্টলেক-এ অবস্থিত মণিপাল হাসপাতালের কনসালটেন্ট জিআই সার্জন ডা. সঞ্জয় মণ্ডল।
বর্ষার মরশুম। এই সময়ের আবহাওয়ায় কি আর বিশ্বাস আছে! এই রোদ, এই বৃষ্টি। সকালে গুমোট গরম তো বিকেলে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। তার উপর বাতাসে আর্দ্রতার দাপট তো রয়েইছে। যদিও বর্ষা ঋতু তাপ থেকে স্বস্তি নিয়ে আসে, তবুও আর্দ্রতা এবং ভ্যাপসা গরম বজায় থাকে এবং এর ফলে রোগজীবাণু বৃদ্ধি পেতে পারে, যা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস এবং টাইফয়েড জ্বরের কারণ হতে পারে। তাই বাড়িতে রান্না করা টাটকা খাবার যেমন খাওয়া উচিত, ঠিক তেমনই খাবার সঠিক ভাবে গরম করে খাওয়া উচিত। অস্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে প্রস্তুত রাস্তার ধারে রাখা খোলা খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন। বিশুদ্ধ জল সঙ্গে রাখুন, এরফলে জলজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারবেন।
বর্ষাকালে অন্যান্য সংক্রামক রোগগুলি হল-- হেপাটাইটিস বা সংক্রামক জন্ডিস। এটি মূলত হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং হেপাটাইটিস ‘ই’ ভাইরাসের ফলে হয়। আবার অস্বাস্থ্যকর ভাবে প্রস্তুত এবং সংরক্ষণ করা খাবার এবং জল এড়িয়ে চললে এটি প্রতিরোধ করা যেতে পারে। বেশিরভাগ হেপাটাইটিস সংক্রমণ হালকা এবং নিজে থেকেই সেরে যায় তবে কিছু অংশ অত্যন্ত মারাত্মক এবং লিভারের গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে, এমনকি জীবনহানিও ঘটতে পারে। আবার এও গুরুত্বপূর্ণ যে, বার্গার, পিৎজা, পেস্ট্রি, কোল্ড ড্রিংকস, এনার্জি ড্রিংকস ইত্যাদির জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চললে পেটের অনেক সমস্যাকে দূরে রাখা যাবে। এর পরিবর্তে আপনার খাদ্য-তালিকায় তাজা ফল এবং শাকসবজির পাশাপাশি, প্রোটিন এবং কম পরিমাণে প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার থাকা উচিত। সেইসঙ্গে, সর্বদা প্রিজারভেটিভ-যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত ব্যায়াম করা আবশ্যক। সম্ভব হলে সকাল-বিকেল হাঁটুন এবং যোগ ব্যায়াম করুন।