আমরা জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করছি এখন, কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুসারে, কিশোর-কিশোরীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রক্তাল্পতা, ভিটামিনের ঘাটতি এবং অপুষ্টির সমস্যায় ভোগে।

আসলে, বয়ঃসন্ধিকাল শারীরিক বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়, কিন্তু ভারতে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে পুষ্টির ঘাটতি এখনও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এর অর্থ হল, কিছু কিশোর-কিশোরী কম ওজনের, আবার কিছু অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতার ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অভিভাবকদের পুষ্টি জ্ঞানের অভাব এবং অতিরিক্ত ক্যালোরি যুক্ত অথচ পুষ্টির ঘাটতিযুক্ত খাবারের সহজলভ্যতার কারণে অপুষ্টির সমস্যায় ভোগে কিশোর-কিশোরীরা। অথচ, উন্নত জীবনের জন্য সঠিক খাবার খাওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কী খাবেন, কীভাবে দূর করবেন পুষ্টির ঘাটতি? এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতা-র ফর্টিস হাসপাতাল-এর প্রধান ডায়েটিশিয়ান ডা. শ্রাবণী মুখোপাধ্যায়।

Dr Shrabani Mukhopadhyay

Dr Shrabani Mukhopadhyay

কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে যারা প্রায়ই ভাজা খাবার, প্যাকেটজাত ফাস্ট ফুড এবং চিনিযুক্ত পানীয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ে, তাদের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।  লবণ, চিনি এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত এই খাবারগুলি সুস্বাদু হতে পারে, কিন্তু এগুলি আয়রন, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস রক্তাল্পতা, বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং এমনকি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্থূলতার মতো লাইফস্টাইল ডিজিজ-এর প্রাথমিক সূত্রপাত ঘটায়।

vegetables and fruits

এই সমস্যা সমাধানের জন্য বহু-স্তরের পদ্ধতির প্রয়োজন। স্কুল, কলেজ এবং সমাজ সচেতনতামূলক প্রচারের প্রয়োজন। তাছাড়া, এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা উচিত, যেখানে পুষ্টিকর বিকল্পগুলি সহজেই পাওয়া যায় এবং তা সাশ্রয়ী মূল্যেরও। জেনে রাখুন, মৌসুমী ফল, শাকসবজি, গোটা শস্য, ডাল, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং বাদাম সমৃদ্ধ খাবার শুধুমাত্র শারীরিক বিকাশকেই উন্নত করে না, পাশাপাশি মানসিক স্বচ্ছতা এবং শক্তির স্তরও বৃদ্ধি করে।

মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অভিভাবক এবং শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, অন্যদিকে নীতিনির্ধারকদের উচিত পুষ্টি-কেন্দ্রিক উদ্যোগ এবং নিয়মকানুন বৃদ্ধি করা, যাতে শিশুদের লক্ষ্য করে জাঙ্ক ফুডের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা যায়। সেইসঙ্গে, অভিভাবক, শিক্ষক এবং সরকারের নিশ্চিত করা উচিত যে,  ভারতের যুবসমাজ যেন পুষ্টিকর খাবার পায় এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দূরে থাকে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...