অনেকেই হয়তো জানেন যে, নিউমোনিয়া প্রতিহত করার জন্য নিউমোনিয়া-প্রতিরোধক ভ্যাকসিন নেওয়া যেতে পারে। কোভিড পরবর্তী সময়ে মানুষের মধ্যে নিউমোনিয়া-প্রতিরোধক ভ্যাকসিন নেওয়ার বিষয়ে সচেতনতাও বেড়েছে। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়া সত্ত্বেও, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া কিংবা জীবন-সংকটে পড়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।
এই প্রসঙ্গে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, নির্দিষ্ট কিছু ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধেই কাজ করে নিউমোনিয়া-প্রতিরোধক ভ্যাকসিন। এছাড়া আরও এমন কিছু ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক থাকে— যেগুলির মাধ্যমে নিউমোনিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। যা সঠিক সময়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে, ভয়াবহ রূপও নিতে পারে। সেক্ষেত্রে একমাত্র কাজ করে অ্যান্টিবায়োটিক সহ অন্যান্য লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম।
আধুনিক চিকিৎসাক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। যেমন— ‘অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স'। আমাদের দেশে বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বেড়েছে। বহুক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনওরকম সংক্রমণ না হলেও, শুধু অনুমানের ভিত্তিতে অ্যান্টিবায়োটিকের অবাধ ব্যবহার হচ্ছে। কিংবা অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক কম ডোজের এবং কম দিনের জন্যও খাওয়া হয়। যা আদতে সাময়িক ভাবে সুস্থ করলেও, খুবই ক্ষতিকারক। এতে জীবাণু সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস হয় না। পরিবর্তে বার বার বিবর্তন ঘটিয়ে ওই নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা অর্জন করে প্রতিরোধক ক্ষমতা বা রেসিস্ট্যান্স (Resistance) তৈরি করে ওই জীবাণু। তখন ওই নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক আর মানবদেহে কাজ করে না।
তাই, অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার সঠিক ভাবে করা না হলে, এক বা একাধিক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে ওই নির্দিষ্ট জীবাণুও গড়ে তুলতে পারে প্রতিরোধ ক্ষমতা। নিউমোনিয়া যেহেতু ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া বা ছত্রাক সংক্রমণের ফলে হয়, তাই শরীরে এই ধরনের কোনও অসুবিধা থাকলে তা চিকিৎসার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে। পরিস্থিতি জটিল হলে তখন ভেন্টিলেশনের মতো লাইফ সাপোর্ট ব্যবহার করা হয়।
এদিকে শীতকালও প্রায় আসন্ন। ইতিমধ্যেই ঘরে ঘরে সর্দি কাশির প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এই সময় সদ্যোজাত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ে। Streptococcus pneumonia, Haemophilus in- fluenza, Maraxella Catarrhalis, Klebsiella -সহ নানাবিধ জীবাণুর প্রভাব এই রোগের কারণ।