শিশুদের পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে নানা ধরনের অ্যাক্সেসরিজের নানা বিকল্প রয়েছে সমস্ত মার্কেটে। তবে বিজ্ঞাপনের চাকচিক্যে সবকিছু ভুলে না গিয়ে বাচ্চার জন্য সেটাই কেনা উচিত যেটা থেকে বাচ্চার কোনওরকম ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

বেবি কেয়ার প্রোডাক্টস বাছার আগে কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখুন

নিজের পেডিয়াএট্রিশিয়ান-এর সঙ্গে কথা বলুন

বেবিকেয়ার প্রোডাক্টস কেনার আগে নিজের বাচ্চার ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। আপনার বাচ্চার জন্য উপযুক্ত এবং সুরক্ষিত প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ডাক্তারই দিতে পারবেন। বাচ্চার জন্য যাই কিনুন না কেন, প্রোডাক্টটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রোডাক্টটির গায়েই লেখা পেয়ে যাবেন। প্রোডাক্ট-টিতে কী কী কেমিক্যাল্স ব্যবহার করা হয়েছে তা ওখান থেকেই জেনে যাবেন। বাচ্চার যে-জিনিসে ক্ষতিকারক কেমিক্যাল্স ব্যবহার করা হয়েছে, সেই জিনিস একেবারেই কিনবেন না।

মাইল্ড প্রোডাক্টস-বাছুন

বাচ্চাদের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি সাবান, শ্যাম্পু, তেল, ক্রিম ইত্যাদি কিনুন যেগুলি খুবই মাইল্ড এবং বাচ্চার কোমল ত্বকে কোনও ক্ষতি করে না। অর্গ্যানিক অথবা প্রাকৃতিক কম্পোনেন্টস দ্বারা এগুলি তৈরি হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং দেখে নেওয়া দরকার কোনও কার্সিনোজেনিক সাবস্টেনসেজ-এর ব্যবহার এতে করা হয়েছে কিনা। শিশুর ত্বক এমনিতেই খুব সংবেদনশীল, তাই খারাপ জিনিস ব্যবহার করলেই বাচ্চার ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। র‍্যার্শ যাতে না হয়, বাচ্চার জন্য সবসময় কটন বেসড স্পঞ্জ এবং কটন তোয়ালে কেনা উচিত।

এ ছাড়াও বাচ্চার জন্য সবসময় বায়োডিগ্রেডেবল ডায়াপার ব্যবহার অপরিহার্য। এতে শুষে নেওয়ার ক্ষমতা বেশি থাকে এবং বাচ্চার ত্বক শুষ্ক, কোমল রাখতে সাহায্য করে। ফলে র‍্যাশেজ হয় না। ডায়াপার বেশি হেভি হওয়া একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়, এতে শিশুর অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

প্লাস্টিক ফ্রি অথবা ননটক্সিক প্রোডাক্টস

শিশুর বয়স যত বাড়তে থাকে তাদের মধ্যে সব কিছু মুখে পুরে দেওয়ার একটা অভ্যাস লক্ষ্য করা যায়। এই সময় বাচ্চাদের জন্য এমন জিনিস কেনা উচিত যেটা বাচ্চা মুখে দিয়ে চেবালেও তার ক্ষতির কোনও সম্ভাবনা থাকবে না। এই ধরনের খেলনাগুলোকে ‘টিথার’ বলা হয়। বাচ্চার দাঁত ওঠার সময় এই খেলনাগুলো চিবোলে বাচ্চা মাড়ি-তে আরাম পায়। নানা আকার, ডিজাইন এবং রঙে এই খেলনাগুলো পাওয়া যায়। এগুলি সাধারণত তৈরি হয় সিলিকন, কাঠ, ন্যাচারাল রাবার অথবা প্লাস্টিক দিয়ে। তবে প্লাস্টিক ফ্রি খেলনাই বাচ্চার জন্য সবথেকে সুরক্ষিত।

ননটক্সিক মেটেরিয়াল দিয়ে তৈরি খেলনা বাচ্চার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না। বাচ্চার ফিডিং বোতল-ও ভালো কোয়ালিটির হওয়া উচিত। প্লাস্টিকের ফিডিং বোতল যদিও বহুদিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য থাকে তবুও শিশুর শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। সবসময় বড়ো দোকান থেকেই বাচ্চার জিনিসপত্র কেনাটা বাঞ্ছনীয়।

বাচ্চার সাইজ

বাচ্চার গ্রোথ খুব তাড়াতাড়ি হয়। বাচ্চার জন্য একসঙ্গে অনেক জিনিস কেনাটা কখনওই উচিত নয়। বাচ্চার প্রয়োজন অনুসারে শপিং করুন। কোনও কিছু কেনার আগে বাচ্চার সাইজের খেয়াল অবশ্যই রাখুন। নবজাতকের জন্য ‘জিরো’ সাইজের পোশাক পারফেক্ট হয় তবুও কেনার সময় বাচ্চার সাইজের থেকে এক সাইজ বড়ো কেনাটাই সব থেকে ভালো।

পরানো সহজ

বাচ্চার ত্বক অত্যন্ত সংবেদনীল। সুতরাং তার জন্য এমন পোশাক কেনা উচিত যা সহজে পরানো এবং খোলা যাবে। পোশাকের গলা কখনওই ছোটো বাছবেন না কারণ খোলা-পরানোর সময় বাচ্চার গলায় যেন পোশাকটি আটকে না যায়। খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চার আঙুল অথবা কান-ও যেন পোশাকে আটকে না যায়।

অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস

বাচ্চাদের অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন বিব্স, তোয়ালে, রুমাল, মুখ মোছাবার কাপড় ইত্যাদি কেনা জরুরি যাতে ফিডিং-এর সময় বাচ্চার জামাকাপড় নষ্ট না হয়। বাচ্চাদের জন্য ডায়াপার ওয়াইপস কিনে রাখা খুব দরকার। মাল্টিপার্পাস ইউটিলিটির সঙ্গে সঙ্গে, এটি ক্যারি করাও সহজ। শীতকালের জন্য উলের পোশাক এবং কম্বল বাচ্চার জন্য অত্যন্ত জরুরি। এগুলি নরম এবং আরামদায়ক হওয়াটা খুব দরকার।

 ফ্যাব্রিক

বাচ্চার নরম ত্বকের জন্য ফ্যাব্রিক বেছে ব্যবহার করাটা খুব প্রয়োজন। নরম সুতির পোশাক বাচ্চার ত্বকের জন্য সব থেকে ভালো। বাচ্চারা প্রায়শই মুখ থেকে দুধ তোলে অথবা মুখ থেকে লালা বেরিয়ে সামনের জামা ভিজিয়ে ফেলে। তাই এমন ফ্যাব্রিক কেনা উচিত যেটা ধোয়া সহজ। বাচ্চার কাপড় ধোয়ার জন্য অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা উচিত, যা বাচ্চাদের জামাকাপড় ধোয়ার জন্যেই বিশেষ ভাবে তৈরি। এই ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলে বাচ্চার জামাকাপড় নরম এবং জীবাণুমুক্ত থাকবে।

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...