সমস্ত নারীর জীবনেই মাতৃত্বের স্বাদ আস্বাদন করার মতো সুখের অনুভূতি আর হয় না। সুতরাং আপনার বউমারও মনের অবস্থাটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না। বিয়ের পর সকলেই আশা করেন ছোট্ট শিশুর আগমনের যার কান্না হাসির কলরোল সারা বাড়িতে ছড়িয়ে পড়বে। তবে বিয়ের দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও অনেকেই সন্তানের মুখ দেখেন না। এই নিয়ে তারা হতাশায় ভোগেন।
দীর্ঘদিন সন্তান না হওয়ার এই পর্যায়টাকে আমরা ইনফারটিলিটি বা বন্ধ্যাত্ব বলে থাকি। এর নানা কারণ রয়েছে। পলিসিসটিক ওভারি সন্তান না হওয়ার একটি বড় কারণ। ফলিকুলার সিনড্রোম নামে একটি সিনড্রোম আছে যেখানে মেয়েদের ঋতুচক্র নিয়মিত হলেও সিনড্রোমের কারণে যে ডিমটি বের হওয়ার কথা সেটা বের হয় না। এটির হার ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ। দ্বিতীয় কারণ পিসিও যেখানে সিসট এর সমস্যার জন্য ডিমের উৎপাদন স্বাভাবিক হয় না এবং নারী তার সন্তান ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও ইউটেরাসও একটা বড় কারণ। বাচ্চাদানির দুই পাশে দুটি নল থাকে যেঁটাকে আমরা ফেলোপিয়ান টিউব বলে থাকি। এই টিউব ওভারির কাছাকাছি গিয়ে শেষ হয়। ওভারি থেকে ডিম ফেলোপিয়ান টিউবে আসে আর স্পারম গিয়ে ফারটিলাইজেশন হয়। অনেক সময় সংক্রমণের কারণে টিউব বন্ধ হয়ে যায় এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবে মেয়েদের বন্ধ্যাত্বের শিকার হতে হয়। বন্ধ্যাত্বের আরও অন্যান্য কারণগুলি হল বেশি বয়সে গর্ভধারণের প্রচেষ্টা, অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া, টিউমার, অতিরিক্ত ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন এবং হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়া, Depression- এর শিকার হওয়া।
আপনার বউমার সম্পর্কে আপনি যা কিছু জানিয়েছেন তাতে মনে হয় উনি অবসাদে ভুগছেন। এই অবস্থা থেকে ওনাকে আগে বাইরে বার করতে হবে। কারণ অবসাদ বন্ধ্যাত্বের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তোলে। সারা বিশ্বে বন্ধ্যাত্বের ৫০ শতাংশ কারণ, অবসাদকেই মনে করা হয়। ডাক্তার দেখিয়ে ওনাকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা করে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে আপনাকে এবং পরিবারের অন্য সদস্যদেরও। এমনও হতে পারে, আপনার বউমার সন্তান না হওয়ার মূল সমস্যা লুকিয়ে আছে ওনার মানসিক অবসাদের মধ্যেই।