প্রেম একটি স্বর্গীয় অনুভূতি একথা যেমন ঠিক, তেমন প্রেম ভাঙার মতো দুর্বিষহ অনুভূতি আর হয় না এটাও চরম সত্য৷বিচ্ছেদ হতে পারে বা সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত ভেঙে যাবে- প্রথম থেকেই  এমনটা ভেবে কেউ প্রেম করে না। তবুও কোনও কোনও মানুষকে এই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সঙ্গী তাঁর ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে পরবর্তীতে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এরকম কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে।

প্রেম ভাঙার প্রাথমিক যন্ত্রণার পাশাপাশি, তখন সঙ্গীর কাছ থেকে বিশ্বাসঘাতকতা পাওয়ার চূড়ান্ত কষ্টটাও ভোগ করতে হয়৷ এই পর্যায়ে রাগ বা ঘৃণা থেকে মনে হতে পারে যে, প্রতিশোধ নেওয়া প্রয়োজন।যতক্ষণ না প্রতিশোধ স্পৃহা মিটছে, অন্তর তিষ্ঠতে পারে না৷

বাস্তবে এটাই কিন্তু আপনার মানসিক স্থৈর্য পরীক্ষার চূড়ান্ত সময়৷নিজের নেতিবাচক আবেগকে প্রশমিত করার সময়৷ মনের মধ্যে যত বেশি রাগ পুষে রাখবেন তত কিন্তু আপনার শরীরের উপরে সেই প্রভাব পড়বে। স্ট্রেস থেকে তৈরি হবে নানা রকম শারীরিক সমস্যা। ভেবে দেখুন তাকে শাস্তি দিতে গিয়ে আপনি নিজের উপরেই অবিচার করে ফেলছেন না তো?

তাই ব্রেকআপ হলে প্রথম কাজ হল সঙ্গীকে মন থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা। সে আপনার প্রতি যা যা অন্যায় করেছে সেগুলি মনে করে প্রথমিক ভাবে আপনি তাকে মন থেকে সরিয়ে ফেলার কাজটা করতে পারেন৷ তাকে জীবন থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো ভালো প্রতিশোধ আর হয় না৷

প্রতিশোধ নেওয়া কখনও ভালো পন্থা নয়। বরং রাগ কমিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবুন। রাগের মাথায় কখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রাক্তনকে  শারীরিক ভাবে আঘাত করতে চাওয়ায় এক ধরনের বোকামি আছে৷ এতে আপনারই সামাজিক সম্মানহানি হবে৷ নিজেকে শান্ত করুন। চুপ করে বসে ভাবুন। যেসব বন্ধুবান্ধবের বৃত্ত সেই মানুষটির সঙ্গে আপনার যোগাযোগের সেতু হতে পারে, সেই সব অপ্রয়োজনীয় মানুষকে জীবন থেকে ছেঁটে ফেলুন।

মনে রাখুন প্রাক্তন আপনার বিশ্বাসভঙ্গ করেছে বলে বা অন্যায্য ব্যবহার করেছে বলে আপনিও যদি ঘুরিয়ে সেই একই ব্যবহার করেন– তাহলে কিন্তু আপনাদের মধ্যে কোনও ফারাক থাকল না। বরং এমন কিছু আচরণ করুন যাতে সেই মানুষটিকে আরও বেশি করে অপরাধ বোধে ভোগাতে পারেন।চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিন মানুষ হিসাবে আপনি তার থেকে কতটা আলাদা৷ ভেতর থেকে কষ্ট পেলে তবেই তিনিআপনার প্রতি কী অন্যায় করেছেন, সেটা বুঝতে পারবেন।

প্রতিশোধ স্পৃহা কিন্তু মনের মধ্যে তিক্ততা বাড়িয়ে দেয়। প্রতিশোধ নিলেই যে আপনি সফল হবেন এমন কিন্তু নয়। শুধু তাই নয়, আঘাতের জায়গায় কিন্তু আরও ক্ষত বেড়ে যায়। তাই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে কীভাবে আপনার নিজের ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া যাবে।

প্রতিশোধে শান্তি দেয় না। হয়তো আপনার মনে হতে পারে যে, প্রতিশোধ নিতে পারলেই অপমানের শান্তি, এমন কিন্তু নয়। বরং তাঁকে ব্লক করে দিন, যোগাযোগ বন্ধ রাখুন ভালো থাকবেন।এর চেয়ে যোগ্য জবাব আর হয় না৷

সেও শেষ পর্যন্ত বুঝবে সে কী হারাল৷ সে পাকাপাকি ভাবে একজন বিশ্বসভাজন মানুষকে, একটা বড়ো ভরসার আশ্রয়কে হারাল৷তার এই ক্ষতি অপূরণীয়৷এই অভাববোধ নিয়েই তাকে সারা জীবন বাঁচতে হবে৷আপনি জানবেন যে, এতেই আপনার প্রতিশোধ নেওয়া হয়ে গেছে৷

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...