একটু একটু করে বড়ো হয়ে উঠতে থাকা সন্তানকে নিজেদের সঙ্গে শোওয়াবে নাকি আলাদা শোবে বাচ্চা– এই চিন্তা প্রত্যেক মা-বাবার কাছেই একটি জটিল সমস্যা। আপাতভাবে এটাকে সমস্যা মনে না হলেও এটা সত্যি করেই একটা ভাবার বিষয়। এখন বেশিরভাগই বড়ো বড়ো শহরে এক কিংবা দুই কামরার ফ্ল্যাটে জীবন কেটে যায়। তাই সন্তানের লালনপালনে প্রত্যেক অভিভাবকদেরই এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যে তারা তাদের সন্তানকে আলাদা শুতে দেবেন নাকি নিজেদের সঙ্গে রাখবেন। কোনটা তাদের সন্তানের জন্য মঙ্গলদায়ক?
মনোবিদরা কী বলেন?
মনোবিদ শ্রীতমা ঘোষের মতে, সমস্ত কিছুরই যেমন ভালো এবং খারাপ দুটি দিক আছে, এক্ষেত্রেও তাই। শিশু অবস্থা থেকে একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত শিশুর, মা-কে ভীষণরকম প্রয়োজন হয়। সেটা প্রকৃতিগতভাবে নির্ভরতার কারণেই। মায়ের সঙ্গে শুলে একটা সিকিউরিটি বোধ বাচ্চার মধ্যে কাজ করে। মায়ের ছোঁয়ায় বাচ্চা অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। হঠাৎ করে কোনও কারণবশত মায়ের পাশে শুতে না পারলে বাচ্চা নিজেকে ইনসিকিওর মনে করে যেটা বাচ্চার মানসিক গঠনের ক্ষেত্রে কখনওই কাম্য নয়।
সাধারণভাবে মনে করা হয় অন্ততপক্ষে দশ বছর বয়সটাকে বাচ্চার আত্মনির্ভরতার এবং মানসিকভাবে পরিণত হওয়ার বেঞ্চমার্ক। সেসময় থেকেই তারা নিজেদের একটা স্পেসের বা নিজস্ব গোপনীয়তার একটা জায়গার প্রয়োজনবোধ করতে শুরু করে। তবে যেহেতু এযুগে বাচ্চা বেশ দ্রুত মানসিকভাবে পরিণত হয়ে উঠছে তাই দশ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তাকে আট বছর বয়স থেকেই একটা প্রাইভেট স্পেস দেওয়া উচিত।
সন্তান এবং মা উভয়ের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখে
প্রথম থেকেই বাচ্চাকে একা শোয়াবার অভ্যাস করানোই বাঞ্ছনীয়। এতে অনেক লাভ আছে। বাচ্চা আলাদা শুলে মায়ের স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। রাত্রে বাচ্চার জন্য উঠতে হলেও মা আরামে শুতে পারেন। বাচ্চাও নিজের মতো করে পুরো বিছানা জুড়ে এপাশ-ওপাশ করার সুযোগ পায়। সীমিত জায়গায় তাকে থাকতে হয় না। এর ফলে দু’জনের স্বাস্থ্যই ভালো থাকে। ডাক্তারের কাছে দৌড়োদৌড়ির পরিস্থিতি তৈরি হয় না।