শিপ্রা এই সবে সবে তিন্নিকে প্লে-স্কুলে ভর্তি করেছে। ও একটু চুপচাপ, তাই শিপ্রা আর অচিন্ত্য দু’জনে মিলে ঠিক করেছিল, তাড়াতাড়ি মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করে দিলে একটু বন্ধুবান্ধব friendship হবে। ফলে মেয়ে সকলের সঙ্গে মিশতেও শিখবে এবং মুখেও বুলি ফুটবে। এই একই মানসিকতা নিয়ে বর্ণালিও একবছর আগে মেয়ে রিমাকে প্লে-স্কুলে ভর্তি করেছিল। স্কুলে এই একবছরে রিমার বন্ধুর সংখ্যা বেড়েছে। বাড়িতেও কথা বলছে খুব। এছাড়া বন্ধুবান্ধবদের জন্মদিনের পার্টিও প্রচণ্ড এনজয় করছে।
অনেক অভিভাবকদেরই এরকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বাচ্চা খুব মিশুকে না হলে সহজে কারও সঙ্গে friendship কথা বলতে চায় না। বন্ধু তৈরি হয় না। একা একা সবসময় নিজের সঙ্গেই থাকা আর সঙ্গী বলতে শুধু বাড়ির কয়েকজন। এর ফলে বাচ্চার পার্সোনাল ডেভেলপমেন্ট ঠিকমতো হয় না। আবার অনেক সময় বন্ধু নির্বাচনেও অনেকে ভুলভ্রান্তি করে ফেলে। সুতরাং উভয় ক্ষেত্রেই প্রয়োজন অভিভাবকদের গাইডেন্স-এর। নানা ভাবে একটা বাচ্চাকে গাইড করা যেতে পারে।
বাচ্চার অনুভূতিকে গাইড করুন
এখনকার মাইক্রো ফ্যামিলিতে প্রত্যেক বাচ্চার মধ্যেই একটা নেগেটিভ, স্বার্থপরতাপ্রবণ ইচ্ছাশক্তি থাকে। ছোটো থাকাকালীন যখন অনেক বাচ্চা একসঙ্গে খেলা করে অথবা বাইরের কোনও বাচ্চা নিজের মা-বাবার সঙ্গে অন্য একটি বাচ্চার বাড়িতে বেড়াতে আসে তখন নিজের খেলনা অথবা প্রিয় জিনিস অপর কারও সঙ্গে ভাগ না করে নেওয়ার প্রবণতা বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায়। এই সিচুয়েশনে মা-বাবার উচিত বাচ্চাকে বকাঝকা না করে নম্রস্বরে তাকে বোঝানো বন্ধুত্বের প্রকৃত অর্থ কী।
শাসনের প্রয়োজন, অত্যাচার নয়
শাস্তির পথ নিয়ে অতিরিক্ত শাসন করতে গেলে বাচ্চা বিগড়ে বসবে। বাচ্চাদের নেগেটিভ ব্যবহারকে যদি কড়া শাস্তির মাধ্যমে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করা হয় তাহলে বাচ্চার মধ্যে বিরোধীতা করার, জেদ দেখানোর এবং মারমুখী হয়ে ওঠার মনোভাব আরও বেশি প্রবল হবে। যা একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের বিপরীত। শাসন ততটুকুই করুন যাতে ভালোবাসার উষ্ণতা থাকবে। সন্তানকে কাছে বসিয়ে তার বোধগম্য হয় এমন আলোচনা ও উদাহরণের গল্প শুনিয়ে তার মধ্যে চলতে থাকা কনফ্লিক্টগুলোকে আয়ত্তে নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে। এতে নিঃসন্দেহে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে সুবিধা হবে।