গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে স্বৈরাচারী কৌশলগুলি প্রকৃতপক্ষে সন্তানের মঙ্গল সাধন করে না। তাহলে সন্তানকে লালন-পালন করার সঠিক উপায় কী? একজন অভিভাবক কতটা শৃঙ্খলা এবং সঠিক শিক্ষা দিতে পারেন তার সন্তানকে? সঠিক অভিভাবকত্বের উপায় বা কৌশল কী? উত্তর হল— কোমল অভিভাবকত্ব। এটি হল পেরেন্টিং টেকনিক। আর এই কোমল অভিভাবকত্ব এমন একটি ধারণা, যা মূলত ভালোবাসা এবং সহানুভূতি সমৃদ্ধ। বিশেষকরে সন্তানের রাগ কিংবা আবেগকে সহজে সামলানোর মাধ্যম হতে পারে— স্পর্শ। তাই বলা যায়, শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে শারীরিক সংযোগ।
সন্তানের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতির আচরণকে কোমল অভিভাবকত্ব আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। সন্তান যখন ছোটো থাকে, তখন বাবা-মাকে বুঝতে হয় যে, তাদের সন্তানের মস্তিষ্ক এখনও পরিপক্ক নয়। তাই সন্তানকে পরিবেশের উপর নিয়ন্ত্রণ অর্জন করতে শেখাতে হয়। সন্তানের ব্যক্তিগত চাহিদা, পছন্দ এবং অপছন্দের বিষয়টিকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে হয় বাবা-মাকে। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে হয়। আর এই প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করা যেতে পারে স্পর্শকে মাধ্যম করে।
সন্তানের অবাঞ্ছিত আচরণগুলির সংশোধন করার জন্যও যত্ন, মনোযোগ এবং সহানুভূতির প্রয়োজন। ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর তাদের নির্ভরশীলতা যাতে বৃদ্ধি না পায়, সেই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে অবিভাবকদের। এর জন্য ওদের বকাবকি না করে, বরং কোমল অভিভাবকত্বের পথ অবলম্বন করুন। ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর তাদের নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য বই পড়া, গান শোনা, শারীরিক ব্যায়াম, সাঁতার প্রভৃতি ভালো বিষয়গুলির অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করতে হবে।
প্রয়োজনে মা এবং বাবাও সন্তানের সামনে এই ভালো উপায়গুলি অবলম্বন করে সন্তানকেও সুঅভ্যাস গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করবেন আদর এবং স্পর্শকে মাধ্যম করে। কারণ, শিশুদের সঙ্গে স্পর্শের মাধ্যমে হৃদয়ের সংযোগ বাড়ানো যায়, রাগ কমানো যায় কিংবা বদভ্যাস দূর করানো যায়। তাই শিশুর বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তাদের নিরাপত্তা এবং আত্মবিশ্বাস গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে স্পর্শ।