আপনি কি আপনার সন্তানের বিষয়ে চিন্তিত? তাকে অলরাউন্ডার বানাতে চান? শুধু আপনিই নন, আপনার মতো অনেক অভিভাবকই, পড়াশোনা ছাড়াও খেলাধূলা, গান-বাজনা, ছবি-আঁকা সবেতেই নিজেদের ছেলে বা মেয়েকে সেরা করে আপনি তুলতে চান। উদ্দেশ্য– সমস্ত প্রতিযোগিতায় নিজ সন্তান যেন প্রথম হয়। ইনটেলিজেন্ট কোশেন্ট বা আইকিউ আমাদের সবারই সম্বল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই যে-বিষয়টি ভেবে দেখেন না তা হল, আইকিউ-এর ভিন্নতায় প্রতিটি শিশু মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে Talent and wisdom পৃথক হয়ে যায়। কম-বেশি মেধা অনুযায়ী নির্ভর করে শিশুর সামগ্রিক পারফরমেন্স। সুতরাং কোনও কোনও শিশু এই প্রতিযোগিতায় পয়লা সারিতে স্থান না-ও পেতে পারে। তা নিয়ে হতাশ হবার কিছু নেই। কারণ... আইকিউ বা বুদ্ধিমত্তা এমনই এক স্থিতিস্থাপক, যা বাড়ানো যায়। এটি স্থির নয়। আমরা প্রত্যেকেই জন্মগতভাবে কিছু পরিমাণ বুদ্ধিমত্তা দ্বারা আশীর্বাদধন্য। কোনও একটি বিশেষ ক্রিয়াকলাপে কারও বুদ্ধির হার বেশি বা কম হয়।
শিশুর খেয়ালখুশি
অঙ্কের ফরমুলা নিজের মনে গুনগুন করে কোয়েল। ছন্দের তালে কবিতা, পেনসিল ঘুরিয়ে বানান শেখে। অঙ্কিতা আগে ছবি আঁকে তারপর আঁকা ছবির ব্যাখ্যা করে। এসব শিশু আমার আপনার ঘরেই রয়েছে। এরা তাদের স্কুলের কাজে পারদর্শী হতে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা বা আইকিউ প্রয়োগ করতে পছন্দ করে।
প্রথাগত পড়াশোনা ও আইকিউ
আমাদের সমাজে একটি শিশুর ইনটেলিজেন্স কোশেন্ট নির্ণয় করা হয় তার রিপোর্ট-কার্ড দেখে। প্রত্যেকেই এক অনিশ্চিত ইঁদুর দৌড়ের শিকার। তারই অংশস্বরূপ প্রত্যেক দুজনের একজন শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিসিন, সিএ, সিএস, বিবিএ পড়ে।
এই ছবিটা ‘কমন’ হলেও ব্যতিক্রম সব ক্ষেত্রেই থাকে। অনেক ছাত্র এমনও আছে যারা জীবনে ভালো কিছু করতে পারছে না। অথচ তাদের মধ্যে কোনও না কোনও বিষয়ে আইকিউ লেভেল যথেষ্ট ভালো।
আমাদের সবারই ব্যক্তিত্ব, পছন্দ, বিশেষ পারদর্শীতার বিভিন্নতা রয়েছে। রামধনুর সাতরঙের মতোই আমাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি পৃথক ও স্পষ্ট। আমাদের শিক্ষাপদ্ধতিও ভিন্ন। অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রথম থেকেই উচিত তাদের সন্তানদের এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই পার্থক্য পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা। একবার যদি আমরা সবাই আমাদের ছেলেমেয়েদের সমর্থ সম্পর্কে অবহিত হই, এবং জানতে পারি তারা কী ধরনের পড়ুয়া-তাহলে নানা কাজের মাধ্যমে তাদের সক্ষমতার একটা আভাস পাব এবং এর ফলে তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ ও সাফল্য বৃদ্ধি করতে পারব।