অফিস মানেই পাঁচজন আলাদা ধরনের মানুষের সঙ্গে প্রতিদিন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকা। এক্ষেত্রে কী হতে পারে আপনার সাফল্যের মন্ত্র? চোখ বুজে বলে দিতে পারেন আপনিও – উত্তরটা হল আপনার মিষ্টি ব্যবহার Good Behavior। শুধু এই  Office Etiquettes আর সুন্দর ব্যবহারকেই পাথেয় করে আপনি পার হয়ে যেতে পারেন একের পর এক সাফল্যের সোপান।

ধরা যাক অফিসে প্রথম দিন। অস্বস্তি কাটিয়ে আপনাকে প্রথমেই সহজ হতে হবে আপনার বসের সঙ্গে। করমর্দন দিয়েই শুরু করুন প্রথম মোলাকাত। ঠোঁটে লেগে থাকুক একফালি মিষ্টি হাসি। আলাপের প্রথম পর্বেই বসের চায়ের কাপটা বা জলের গ্লাসটা নিজেই বাড়িয়ে দিতে পারেন তাঁর দিকে। এতে আপনার আন্তরিকতা অবশ্যই তাঁর নজর কাড়বে। তবে বেশি আন্তরিক হতে গিয়ে অতিরিক্ত ব্যক্তিগত বিষয়ে ঢুকে পড়বেন না। কাজের মধ্যে পড়ে, এমন কথাবার্তাই বলুন ধীর স্বরে। তবে কথা বলার চেয়ে শুনুন বেশি। বস যখন কথা বলছেন, অযথা তাঁর কথা কেটে মাঝখানে ঢুকে পড়বেন না। অবান্তর প্রশ্ন করবেন না। দু’মিনিট ভেবে তারপর কোনও কথা বলুন বা জিজ্ঞেস করুন।

এবার সেরে নিন সহকর্মীদের সঙ্গে আলাপ পর্ব। সেখানেও নিয়মনীতি একই। প্রথম থেকে আপনি বেশি জানেন বা আপনি একেবারে অন্যরকম, এমন কিছু জাহির করার চেষ্টা করবেন না। সঙ্গে খাবার নিয়ে গিয়ে থাকলে লাঞ্চ টাইমে ভাগ করে খান।

অফিসের পরিবেশটাতে আপনি মোটামুটি অভ্যস্থ হয়ে গেলে, নিজেই আন্দাজ করতে পারবেন কোন মানুষটা ঠিক কেমন। তখন প্রয়োজনমতো নিজের ব্যবহারে কড়া বা নরম ভাব বজায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত নরম হবেন না সবক্ষেত্রে, এর ফলে হয় অতিরিক্ত উপরোধ বা অন্যায় প্রস্তাব পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। তবে এমন কোনও সমস্যা হলে, আগেই রূঢ় স্বরে গালিগালাজ না করে, মিষ্টি অথচ দৃঢ় মনোভাব নিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন। আপনার খারাপ লাগার বিষয়টিও শিষ্টতার সঙ্গে জানান।

ভুলবেন না যে, পৃথিবীতে কোনও দুটো মানুষ হুবহু একরকম হয় না। সুতরাং এমন সহকর্মীও থাকতে পারেন অফিসে, যিনি হয়তো বাহ্যিক ভাবে অতি সুন্দরী কিন্তু কথা বললেই বিরক্তি উৎপাদন করেন। ফলে সুন্দরী হলেও ব্যবহারের দোষে তাকে কুরূপাই মনে হয়। সুতরাং কারও সাথে কথা বলার সময় খেয়াল রাখবেন আপনার বাচনভঙ্গির দিকে। কোনওভাবেই যেন তা শ্রোতার কাছে অপ্রিয় বা কটুভাষণ না মনে হয়।

সুব্যবহারের সাকারাত্মক দিক

আপনার পজিটিভ অ্যাটিটিউড অন্যদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। সুতরাং এভাবেই জীবনে বাড়ে বন্ধুর সংখ্যা, বাড়ে পরিচিতের বৃত্ত। এভাবেই বাড়ে আপনার খুশির ব্যাপ্তি এবং অন্যদেরও। তাই বন্ধুত্বের উধের্ব একসময় প্রায় আত্মিয়তাই গড়ে ওঠে সহকর্মী ও স্বল্পপরিচিতদের সঙ্গেও। যে-মানুষ নিজের দুর্ব্যবহারের কারণে মানুষের থেকে দূরত্ব তৈরি করে– জীবনের একটা পর্যায়ে এসে তার পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ থাকে না। তার দুঃখ শেয়ার করার মতো কোনও মানুষ থাকে না।

সুতরাং সময় থাকতে থাকতে নিজের অ্যাটিটিউড-এ শিষ্টতা নিয়ে আসুন। স্মাইল, ইট কস্টস্ ইউ নাথিং।

শিষ্টতার বীজ শৈশবেই

মানুষ শৈশব থেকেই যা শেখে পরবর্তী জীবনে তার প্রভাব পড়ে। সুতরাং পারিবারিক অনুশাসনের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের শিষ্টতাও শেখানো উচিত। আপনি যে-শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠেছেন আপনার পরবর্তী প্রজন্মকেও সেই শিষ্টাচারের Good Behavior পরম্পরা বহন করতে শেখান। ব্যবহারের তারতম্যে শত্রু ও বন্ধু– দুই-ই বৃদ্ধি করা সম্ভব। মুখ থেকে বেরোনো কথা অন্যের হূদয়ে তিরের মতো বিঁধলে, তার আপনার প্রতি চিরকালের মতো এক নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। তাই কথা বলার সময় সতর্কতার সঙ্গে একটি ভারসাম্য বজায় রাখুন। আস্থা রাখুন নিজের বুদ্ধিমত্তার উপর।

 

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...