শেষ পর্ব
মেয়েদের চালনা করার মানসিকতা ঠিক নয়
মেয়েদের অপমান করার ক্ষেত্রে সমাজের একটা বড়ো ভূমিকা রয়েছে। সমাজ মেয়েদের হাতের পুতুল ভাবে এবং সেই ভাবেই তাদের সঙ্গে ব্যবহার কর। কাঠপুতুলকে যেভাবে নিয়ন্ত্রিত করা হয় ঠিক সেই ভাবেই মেয়েদের স্বাধীনতার লাগাম তারা পুরুষদের হাতে দিয়ে রেখেছ। পুরুষরা তাদের ইচ্ছামতো সেই লাগাম নিয়ন্ত্রন করেন। এমনকী মেয়েরা কী ভাবে হাসবেন সে সম্পর্কেও সমাজে কঠোর নিয়ম জুড়ে দেওয়া হয়েছে। খুব জোরে হাসবেন না, খুব বেশি হাসবেন না, এইভাবে হাসুন, এইভাবে নয়, ইত্যাদি।
প্রতিটি মেয়েকে অবশ্যই তার জীবনের কোনও না কোনও সময়ে তার পরিবারের শাসন মেনে চলতে বাধ্য করা হয়ে থাকবেই। এই সব নিয়ম এই জন্যই মেয়েদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতে সহজেই তাদের জীবনটাকে নিয়ন্ত্রন করা সহজ হয়।
৩৫ বছর বয়সি বিবাহিত মহিলা রিচা কুমারী পেশায় একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। তিনি নিজের বাড়িতে অর্থাৎ শ্বশুরবাড়িতে কিছু বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন একটি গেট টু গেদার আয়োজন করে। সেখানে গল্প-আড্ডার মধ্যে এক বন্ধু কিছু জোকস শোনালে রিচা জোরে হেসে ওঠেন এবং তার হাসির শব্দ হলের মধ্যে বসে থাকা তার শ্বশুর-শাশুড়ির কানে গিয়েও পৌঁছোয়। দ্বিতীয়বার আবার একই ঘটনা ঘটলে শাশুড়ি রিচার ঘরে এসে সকলের সামনে পুত্রবধূকে বলেন, 'এভাবে জোরে জোরে মেয়েদের হাসতে হয় না। মেয়েরা এভাবে হাসলে তা সভ্যতা বলে বিবেচিত হয় না। তোমার হাসির আওয়াজ যেন অপরের কানে না যায়।’ এই ঘটনার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও রিচা এই ঘটনা আজও ভুলতে পারেননি।
এটা কী ধরনের চিন্তাভাবনা?
প্রীতি ভার্মার বয়স ১৮ বছর। তিনি তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। একদিন প্রীতি যখন তার বন্ধু নিখিল অরোরার সাথে রাস্তা পার হচ্ছিলেন, তখন তার বাবা শচীন ভার্মা রাস্তার ওপারে গাড়ি করে যাওয়ার সময় তাকে দেখতে পান। এরপর গাড়ি থেকে নেমে এসে নিখিলের সামনেই প্রীতিকে চড় মারেন, তারপর প্রীতিকে গাড়িতে বসিয়ে সোজা বাড়িতে নিয়ে আসেন।