বিয়ের পর স্ত্রী কী চান তা তার সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করা উচিত এবং সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করা উচিত স্বামীর। কিন্তু স্ত্রী বাড়িতে থাকার ফলে স্বামী যদি তাকে সেবাদাসী করে রাখতে চান, তাহলেই বিপদ। কারণ, স্বামীর এই রক্ষণশীল মানসিকতা স্ত্রী যখন মেনে নিতে পারেন না, তখনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় ঝগড়া, অশান্তি। অনেক সময় এই বিবাদ এতটাই চরমে ওঠে যে, স্ত্রী-র শারীরিক এমনকী মানসিক চিকিৎসারও প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
আসলে এই সমস্যার বড়ো কারণ হল— এখন পরিবার সঙ্কুচিত হয়ে গেছে। স্বামী-স্ত্রী এবং তারপর এক সন্তান, এই নিয়েই বেশিরভাগ পরিবার। শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ, ভাসুর, দেওর নিয়ে বড়ো একটা পরিবার যে কত ভালো ছিল, তা এখন বোঝেন না বেশিরভাগ স্ত্রী-রা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-ঝামেলা হলে তারাই মিটমাটের দায়িত্ব নিতেন। শুধু তা-ই নয়, বাড়ির বড়োদের সম্মান দেওয়ার কারণে ঝগড়াও হতো কম স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিংবা হলেও তা সীমা ছাড়াত না। কিন্তু এখন ছোটোখাটো বিষয় নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, তা বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়িয়ে যায়।
আজকাল প্রতিযোগিতার ইঁদুর দৌড়ে অন্যের থেকে শেখার বিষয়টি আর নেই। মা-বাবা সন্তানের কাছে এখন শুধু টাকা দেওয়ার এটিএম হয়ে উঠছেন। আর যারা সন্তানের জন্য ভাবেনও, তাদের অনেকেই সঠিক শিক্ষাদানের পরিবর্তে ধর্মকর্মের মাধ্যমে উন্নতির পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিন্তু তারা ভুলে যান গঠনমূলক শিক্ষা সেটাই যা পারিবারিক ভাবে এক পরম্পরা থেকে অন্য পরম্পরায় বহমান হয়৷ পারিবারিক শিক্ষা জরুরি৷
জীবনের প্রতি মুহূর্তে যে অভিজ্ঞতার মাধ্যমে শিখতে হয় ভালো-মন্দ, সেই বোধটাই এখন আর দেখা যায় না। কীভাবে সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে জীবনকে আরও সুন্দর রূপ দেওয়া যায়, সেই শিক্ষাটাই এখন দিতে পারেন না বেশিরভাগ মা-বাবা। সবকিছুতেই বড়ো অসহনশীল হয়ে উঠছে এই প্রজন্ম৷ বিবাহোত্তর জাবনেও মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার পরিচয় তারা দিতে পারছে না৷ দ্রুত সিদ্ধান্তে ঘর ভাঙছে৷ এর ফলে বর্তমান এবং আগামী প্রজন্ম যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এ বিষয়ে দ্বিমত থাকতে পারে না।