মাংস খাওয়া নিজস্ব রুচি-অরুচির ব্যাপার কিন্তু জীবিত পশুদের আদর কিংবা অনাদরের সঙ্গে বিষয়টিকে এক ব্র্যাকেটে রাখা ঠিক নয়। এই বিষয়ে এক সংগঠনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে মুম্বই হাইকোর্ট। ওই সংগঠন আর্জি জানিয়েছিল যে, মাংস খাওয়ার ছবি কোনও বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা যাবে না, এতে নাকি যারা মাংস খান না, তাদের ভাবাবেগে আঘাত লাগবে।
পশুপ্রেমী মানে কি গরুকেও পুজো করব আবার বাছুরকে বঞ্চিত করে গরুর সব দুধ পান করে নেব? আসলে অনেক মানুষ আছেন যারা মুখে যা বলেন, ঠিক তার উলটো স্বভাবের। অর্থাৎ মুখে প্রেম ভাব থাকলেও আসলে তারা নিষ্ঠুর। যদি সত্যিই পশুপাখির প্রতি প্রেম থাকে, তাহলে তাদের জন্যও কিছু খাবার বাঁচিয়ে রাখা উচিত। যেমন গাছের সব ফল তুলে খেয়ে না নিয়ে, পাখিদের জন্যও কিছু ফল রেখে দেওয়া উচিত। এটাই সহানুভূতি, এটাই প্রকৃত প্রেম।
একটা সময় ছিল যখন খাওয়া, শোওয়া, ওঠা-বসা সবকিছুই ছিল সমাজনির্ভর। ক্ষমতাবান মানুষ শাসন চালাতেন গরিবদের উপর এবং গরিবরা তা মেনে নিতে বাধ্য হতেন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বদলেছে অনেক কিছুই। এখন মানুষ শিক্ষা এবং তথ্যের ভিত্তিতে তর্কও যেমন করতে পারেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ঠিক তেমন-ই নিজের অধিকার সম্পর্কেও সচেতন। অন্যের খবরদারি এখন তাই আটকেছে অনেকটাই।
এখন বৈষ্ণব ভোজনালয়ের পাশাপাশি, চিকেন সেন্টার-ও রয়েছে অনেক। তবে এখনও কিছু ভণ্ড ধার্মিক অন্যকেও ধর্মের বিষয়ে ভুল বুঝিয়ে বিপথে চালিত করার চেষ্টা করেন কিন্তু সবক্ষেত্রে তারা সফল নন।
ভারতে খাদ্যনীতি বলতে বোঝায়, গরিবের কাছে শস্তায় চাল-গম পৌঁছে দেওয়ার নীতি। সেই ষাটের দশক থেকে আজ পর্যন্ত আগাগোড়াই ধরে নেওয়া হয়েছে যে, রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে বাজার দরের চাইতে কম দামে খাদ্যশস্য বিতরণের ব্যবস্থা করলে তাতে দেশে অপুষ্টি কমবে। ভারতে অপুষ্টি তীব্র এবং ব্যাপক, তাই দেশ জুড়ে প্রায় ৫০ লক্ষ রেশন দোকান তৈরি করে তাতে বিপুল পরিমাণ চাল-গম সরবরাহ করতে হবে, এমন যুক্তির উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে খাদ্য নীতি।