আমাদের সমাজে আজও মেয়েদের ছোটো থেকেই শেখানো হয় যে, পূজাপাঠ, প্রার্থনা এবং ভাগ্য করে জন্মালে তবেই ধনী হওয়া যায়। আর ছোটো থেকে এইসব শিক্ষা নিতে-নিতে মেয়েদের মনে এমন বিশ্বাস জন্ম নেয় যে, ব্রত, উপবাস, মন্দিরে পূজাপাঠ প্রভৃতি করলেই পরীক্ষায় নাম্বার বাড়বে, সৌন্দর্য বাড়বে, ভালো জীবনসঙ্গী পাওয়া যাবে এবং অর্থযশও আসবে। ছোটোবেলার এই শিক্ষা বড়ো হয়ে ভুল মনে হলেও, সহজে মস্তিষ্ক থেকে মুছে ফেলতে পারেন না অনেকেই।
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া-র যুগেও ব্রেনওয়াশ চলছে একই ভাবে, শুধু বদলেছে ধরনটা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন যে-কেউ হয়ে যাচ্ছেন মোটিভেশনাল স্পিকার। আর ওইসব মোটিভেশনাল স্পিকাররা যদি বলেন ‘এই ৭-টি কাজ করুন, জীবন সুখময় হবে', তাহলে সেই কথা-ই বিশ্বাস করে নিচ্ছেন ছোটোবেলায় মগজধোলাই হওয়া মেয়েরা। শিক্ষিত মেয়েরাও অনেকে বিচার-বুদ্ধি দিয়ে, যুক্তি দিয়ে ভেবে দেখছেন না, কোন কথাটা সঠিক, আর কোনটা ভুল বা বুজরুকি!
এখন মনে হয়, বর্তমানে প্রতারণা আরও যেন সহজ হয়ে উঠছে। আগে তাও ধান্দাবাজরা সরাসরি ধর্মকে বিক্রি করতেন মগজ ধোলাই করে। সেই প্রক্রিয়া খুব সহজ ছিল না কিন্তু এখন অডিয়ো-ভিস্যুয়াল মাধ্যমে সহজেই মানুষের মনে প্রভাব বিস্তার করতে পারছে প্রতারকরা।
প্রতারকরা নিজেদের সাজানো লোক দিয়ে এমন ভাবে সোশ্যাল মিডিয়া-র পোষ্টে লাইক কিংবা কমেন্ট করাচ্ছে যে, অনেকেই সে-সবে প্রভাবিত হয়ে প্রতারিত হয়ে চলেছেন। বিনিয়োগ করা অর্থ খুব কম সময়ের মধ্যে ৫-৬ গুন হয়ে যাবে, এমন লোভের ফল ভুগছেন অনেকে। নিজের বোকামোর কারণে ৪৮ লক্ষ টাকা প্রতারিত হয়ে দিল্লির এক তরুণী শেষ পর্যন্ত থানায় গিয়ে পুলিশের সাহায্য চেয়েছেন।
মনে রাখবেন, সবচেয়ে বেশি লোক ঠকানো হয় ধর্মকে মাধ্যম করে। কারণ, ধর্মের মধ্যেই ‘ভয়' শব্দটা লুকিয়ে আছে কিংবা বলা যায়, ধর্ম করলেই জীবনের সমস্ত স্বপ্ন পূরণ হবে, এমন ধারণা থেকেও প্রতারকদের ফাঁদে পা দেন অনেকে। '১ টাকা দান করে পূণ্যার্জন করলে ১০টাকা পাবে'–এমনটা বুঝিয়েই সর্বস্ব লুট করছে ধর্মের দোকানদাররা।