বিগত এক দশকের সময়কালে, গত কয়েক বছর ধরে আবার কাশ্মীর, পর্যটকদের কাছে একটি রমণীয় টুরিস্ট স্পট হয়ে উঠেছিল। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই এই রাজ্যের সম্পদ। বিশেষ করে শীতে বরফে ঢাকা গুলমার্গ, হয়ে ওঠে স্কি প্রেমীদের আদর্শ ডেস্টিনেশন। গ্রীষ্মে টিউলিপ আর নানা ধরনের ফুলের আকর্ষণে জড়ো হয় আবিশ্বের মানুষ৷ সত্যি বলতে কী কাশ্মীরের সৌন্দর্য কখনও পুরোনো হবার নয়৷ আমাদের বহু হিন্দি ছবির পটভূমিকায় এখনও কাশ্মীরের সৌন্দর্য জাজ্ব্যল্যমান৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে কাশ্মীর আরও একবার হিন্দু-মুসলিম বিবাদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে। Terrorism problems জর্জরিত এই রাজ্য৷
কেন্দ্রীয় সরকার বেশ ধূমধাম করে কিছুদিন আগে কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বলে ঘোষণা করে, উপরাজ্যপালের উপর দায়িত্ব ন্যস্ত করে ৩৭০ ধারার সংশোধন আইন প্রয়োগ করেছে। এর ফলে Kashmir এখন সম্পূর্ণ রূপে ভারতেরই অঙ্গ। কিন্তু এবছর মে-জুন মাসে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী ঘটনা আবার কাশ্মীরকে সেই আতঙ্কের দিনগুলিতে ফিরিয়ে দিল। এমনই পরিস্থিতি যে বেড়ানো তো দূর অস্ত, ব্যাবসার কাজে পর্যন্ত মানুষ এখন ওই রাজ্যে পা রাখতে সন্ত্রস্ত। Jammu & Kashmir - এ সন্ত্রাসবাদীরা বেছে বেছে বহিরাগতদের উপর হামলা চালাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে নববিবাহিত ব্যাংক কর্মচারী ও তার শিক্ষিকা স্ত্রীয়ের উপর হামলায় মৃত্যুর ঘটনা এই ভয়ের সঞ্চার করেছিল। এছাড়া দু’দিন ছাড়া ছাড়া বোমা-বন্দুকের সন্ত্রাস তো লেগেই আছে!
কোনও প্রদেশ, কোনও জাতি বা কোনও বিশেষ ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ-কে ইন্ধন করে রাষ্ট্র চালানো একটি রিস্কি গেম। এদেশের প্রতিটি পাড়ায়, গলিতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। তাদের পরস্পরের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হলে, সে আপনি নাগাল্যান্ডেই থাকুন বা কাশ্মীরে-- নিরবিচ্ছিন্ন শান্তি বিরাজ করবে। কিন্তু পরস্পরকে বিভাজিত করার নীতি নিলে, তার মাশুল তো দিতেই হবে। কেউ সংরক্ষণ চাইবেন, আর শক্তিশালী চাইবেন আরও ক্ষমতা। যেখানে আমরা খোদ দিল্লির মধ্যেই জাকিরনগর আর শাহিনবাগ অঞ্চলকে পৃথক ভাবতে শুরু করি, সেখানে কাশ্মীরকে এক ও অভিন্ন ভাবব কী করে?