সম্প্রতিক সময়ে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার মহাআগাড়ি বিকাশ জোট থেকে উদ্ভব ঠাকরে-কে ডিফ্যাকশনের দ্বারা ক্ষমতচ্যুত করার ঘটনাটি রাজনৈতিক মহলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একই সময়ে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের সিদ্ধান্তকে অসংবিধানিক বলে রায় দিয়ে এক যুগান্তকারী ফয়সালা শুনিয়েছিল। কিন্তু সত্যি বলতে কি, এ দুটি ঘটনার কোনওটাই কি আমাদের ভারতীয় পরিবারের মা-বোনেদের উপর আক্ষরিক অর্থে কোনও প্রভাব ফেলেছে?
এই ঘটনাগুলি এতটাই রাজনৈতিক অভিসন্ধির নামান্তর যে, সাধারণ জনজীবনে এবং সংসারে এর কোনও প্রভাবই পড়ার কথা নয়।
মহারাষ্ট্রের এই রাজনৈতিক পালাবদলে একটা কথাই প্রমাণিত হয় যে, আপনি এই ক্ষেত্রটাতে কারও উপরেই ভরসা করতে পারবেন না। এখানে যে-কোনও বেতনভুক কর্মচারী, নেতা, মালিক, মন্ত্রী প্রয়োজনে পিছন থেকে ছুরিকাঘাত করতেও উদ্যত হয়। ঘরের শত্রু বিভীষণ কথাটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে রাজনীতির পটভূমিকায়। এমন অনেক নেতা ছিলেন এই জোটে, যারা একসময় উদ্ভব ঠাকরের সমস্ত পদক্ষেপে বাহবা দিতেন- আজ তাঁরাই নাম লিখিয়েছেন শত্রু শিবিরে।
যদি দলপতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার মধ্যে অন্যায় না থাকে, তাহলে সংসারে, ননদের তার বউদির ব্যাপারে কূটকচালি করাতেও অন্যায় নেই। ছোটো ভাই, বড়ো ভাইকে ঠকিয়ে সম্পত্তি তছরুপ করাই বা অন্যায্য কেন হবে! উদ্দেশ্য তো একটাই, নিজের ফায়দার জন্য অপরকে বিপাকে ফেলা। একনাথ শিন্ডেও তার ব্যতিক্রম নন।
যথা রাজা, তথা প্রজার মতাদর্শ এদেশে কায়েম হয়। সেই কারণেই একই নাটক মঞ্চস্থ হয় কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, অরুণাচলের মতো রাজ্যে। রাজার পদাঙ্কই যদি সংসারে প্রজারা অবলম্বন করেন, তাহলে তা দোষের কোথায়?
আমেরিকার গর্ভপাত বিরোধী রায় প্রসঙ্গে এবার আসা যাক৷ এই রায় প্রমাণ করল যে, মহিলাদের নিজের শরীরের উপরেই কোনও দাবি নেই ।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মহিলারা সন্তান নষ্ট করার সিদ্ধান্তও নিতে পারবে না কারণ সেটা অসংবিধানিক। কাল মহিলাদের উপর যদি পারিবারিক হিংসার ঘটনা ঘটে, তখন হয়তো এটাকেও সমর্থন করা হবে এই বলে যে, সংবিধানে এর বিরুদ্ধে কোনও কথা বলা নেই। কে বলতে পারে একই ভাবে হয়তো ধর্ষণকেও কাল অন্যায় বলে মনে করা হবে না, একই অজুহাত দেখিয়ে!