কামসূত্রের সৃষ্টি এইদেশে হলেও, ভারতীয়রা যৌনতা সংক্রান্ত কোনও কিছুই প্রকাশ্যে আলোচনা করতে লজ্জা পায়। যৌনতা বিষয়ে স্বাস্থ্যকর ও সচেতনতা বৃদ্ধিকারী আলোচনার বদলে, আমরা কেবল তা লুকিয়ে রাখতে বা এড়িয়ে যেতে চাই। যৌন শিক্ষাদানের বিষয়েও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একইরকম রক্ষণশীল। কিন্ত এখনকার দিনে, ক্রমবর্ধমান যৌন অপরাধের প্রেক্ষিতে Sex education বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে। শিশুদের মধ্যে এই শিক্ষাদানের জন্য বাবা-মা ও শিক্ষক, দু’তরফেরই বড়ো ভূমিকা রয়েছে।
স্কুলের জীববিদ্যার পাঠ্যবইতে, প্রজননতন্ত্রের বিষয়ে একটি অধ্যায় থাকে। দেখা যায় বেশিরভাগ শিক্ষক-শিক্ষিকাই এই অধ্যায়টি পড়াতে লজ্জা পান, বা অস্বস্তিবোধ করেন। অথচ ছাত্রছাত্রীদের নিজেদের শরীরের বিষয়ে নানা প্রশ্ন থাকাই স্বাভাবিক। তাই বাড়িতে বাবা-মা ও স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচিত, ধৈর্যের সঙ্গে তাদের যৌনশিক্ষা দান করা। প্রয়োজন হলে ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা ক্লাসে বসিয়েও এটি করা যেতে পারে।
শিশুকে আর একটা বিষয়ও জানিয়ে দিতে হবে যে, নিপীড়নকারী যে সবসময় অচেনা ব্যক্তিই হবে তা নয়। কারণ দেখা গেছে, শিশু নিপীড়নকারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাছের আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব হয়ে থাকে। তাই কারও হাতে শিশুকে ছাড়ার আগে তার বিশ্বাসযোগ্যতা খতিয়ে দেখে নেওয়া উচিত। অপছন্দের ব্যক্তিদের সঙ্গে শিশুকে বেশিক্ষণ একা না থাকতে দেওয়াই উচিত। তাকে শেখানো দরকার যে, কখনও কোনও অপ্রিয় ঘটনা ঘটলেই, সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মাকে যেন জানিয়ে দেয়। বাবা-মা পরিস্থিতি বুঝে যা করার করবেন।Child abuse থামানোর এটাই প্রাথমিক পদক্ষেপ৷
এছাড়া এখনকার তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞাপনের যুগে, আপনার শিশু যৌনতা সম্বন্ধে নানান টুকরো তথ্য জেনে যাবেই। কিন্তু সেই টুকরো তথ্য তার মনে এনে দেবে প্রচুর প্রশ্ন, তৈরি হয়ে যাবে অনেক ভুল ধারণাও। তাই প্রকৃত যৌনশিক্ষাদানের মাধ্যমে দরকার তার সব প্রশ্নের উত্তর জুগিয়ে, কোনরকম ভুল ধারণা তৈরি হতে না দেওয়া। বাবা-মা বা শিক্ষকের পাশে বসে কোনও ছাত্র বা ছাত্রী এই বিষয়ে ইন্টারনেট ঘেঁটেও প্রচুর তথ্য পেয়ে যেতে পারে।