সাধারণ মানুষও এখন টাকা জমিয়ে শেয়ার বাজারে লগ্নি করছে। আর তাই ২০২০ সালে যেখানে ৪.০৮ কোটি ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট ছিল, ২০২১ সালে সেখানে ৮.০৬ কোটি অ্যাকাউন্ট হয়ে গেছে। এবছর তো সংখ্যাটা আরও বেশি৷ শেয়ারের ব্যাবসা করতে গেলে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট করা জরুরি। আর যে-ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান এই অ্যাকাউন্ট খুলছে, সেইসব প্রতিষ্ঠান প্রথম দিনেই এক হাজার টাকা আয় করে নিচ্ছে। আর এই উপার্জনই সাধারণ মানুষের মনে লোভের জন্ম দিচ্ছে।একেই বলে শেয়ার বাজারের গোলকধাঁধা৷
এখন সব শহর এবং এমনকী শহরাঞ্চলেও শেয়ার দালালরা অফিস খুলে বসেছে। আর ব্যাংকে গিয়ে যে-সব মহিলারা ঠিকমতো পরিষেবা পাচ্ছেন না, তারাও শেয়ার বাজারে লগ্নি করতে শুরু করেছেন। অথচ, মজার বিষয় হল এই যে, দেশের আর্থিক বিকাশ কিন্তু থমকে গেছে। এখন উৎপাদন বাড়ছে না, বাড়ছে বেকারত্ব, বাড়ছে আয়কর। আর উপার্জন কমে যাওয়া সত্ত্বেও কীভাবে শেয়ার বাজারের পারদ চড়ছে এটাই এখন আশ্চর্যের বিষয়!
আসলে শেয়ার বাজার এক সুনিয়ন্ত্রিত লটারি কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যাবসাযিক প্রতিষ্ঠানগুলি জনতার থেকে অর্থ লুটের এক কার্যকরী পরিকল্পনা করেছে। কখনও তারা শেয়ারের দাম কমাচ্ছে তো কখনও বাড়াচ্ছে। যখন কমে যাচ্ছে, তখন সাধারণ মানুষ ঘাবড়ে গিয়ে ক্ষতি সত্ত্বেও শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। আর যখন শেয়ারের দাম বাড়ছে তখন লোভে পড়ে শেয়ারে অর্থলগ্নি করছে। এর ফলে যা ঘটে চলেছে, তা হল, ছোটো ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে। কিন্তু মুনাফা লুঠছে বড়ো কোম্পানিগুলির মালিক, ব্রোকার, এজেন্ট, ব্যাংক আর ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে যারা।
শেয়ার বাজার আসলে এক গোলকধাঁধা। অভিমন্যুর মতো যদি বা ঢুকে পড়লেন, মুনাফা করে বেরোনোর পথ আপনার অজানাই থাকবে৷ কোনও কোম্পানি চালানোর জন্য সাধারণ মানুষকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়, অথচ বড়ো কোম্পানির মালিকরা টাকা লুঠছে শেয়ার বাজার থেকে। এতে সরকারও খুশি, কারণ, শেয়ারের মালিক এবং ব্রোকারদের থেকে ভালো টাকা ট্যাক্স আদায় করতে পারছে।