পৃথিবীর কয়েকটি দেশে আমরা ভিসা ছাড়াই পর্যটক হিসাবে ঘুরে বেড়াতে পারি পাহাড়, জঙ্গল, সমুদ্র সৈকতে কিংবা অন্যত্র। কিন্তু যে দেশে ভিসা ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ, সেই দেশের নিয়ম তো মানতেই হবে। মানসিক ভাবে সুস্থ নাগরিকদের থেকে এটাই কাম্য। কিন্তু তবুও কেন অনুপ্রবেশ ঘটে চলে, তার কারণ আমরা কমবেশি প্রত্যেকেই জানি।
মূল বিষয়টি হল— এক দেশ থেকে অন্য দেশে বৈধ ভাবে যেতে হলে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়। তবে পর্যটক হিসাবে বৈধ ভিসা নিয়ে প্রবেশ এক বিষয়, আবার ‘ওয়ার্কিং ভিসা' নিয়ে ভিন দেশে থাকা অন্য বিষয়। যখন থেকে আমেরিকা ‘ওয়ার্কিং ভিসা' প্রদানে কড়াকড়ি করেছে, তবে থেকে ওখানে 'অবৈধ’ নাগরিকের সংখ্যা হয়তো বেড়েছে। আর দেশের অভ্যন্তরিণ নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখতে গিয়ে হয়তো ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার হঠাৎ নির্মমতা শুরু করেছে। অনুপ্রবেশকারীদের সনাক্ত করে বের করে দিচ্ছে দেশের বাইরে। সে যাইহোক, দেশের নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়ে প্রত্যেকটি দেশের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে। আমেরিকাও সেই স্বাধীনতা রক্ষা করবে, এই বিষয়টির মধ্যে খারাপ কিছু নেই। কিন্তু, আমেরিকার সামরিক বিমানে ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীদের টেক্সাস থেকে অমৃতসরে পাঠানোর বিষয়ে ভারত সরকারের নীরবতা অবাক করেছে!
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, যারা বৈধ উপায়ে ভিন দেশে যাচ্ছেন শিক্ষা কিংবা কর্মের তাগিদে, তারা তাদের জমানো টাকা খরচ করে যেমন নিঃস্ব হয়ে যায়, ঠিক তেমনই পরিবারের সদস্যদের থেকেও প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই, বৈধ নাগরিকদের দুঃখ দূর করার বিষয়ে কেউ ভাবে না। যারা বাধ্য হয়ে নিজের দেশ আর পরিবার ছেড়ে অন্য দেশে যায়, তাদের পরিবারের লোকেদের এর জন্য মন খারাপ হলেও, বিদেশে গেলে আপনজন জীবনে আর্থিক প্রতিষ্ঠা পাবে, এই আশায় সমস্ত মন খারাপ ভুলে থাকেন।
আসলে, নিজের দেশ ছেড়ে ভিন দেশে যারা যান, দেশের সৈনিকদের মতো তাদেরও প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়। হয়তো এই যুদ্ধ দেশের জন্য নয়, লড়তে হয় নিজের জন্য, পরিবারের জন্য এবং এই লড়াই যেমন প্রতিকুল পরিস্থিতির সঙ্গে লড়তে হয়, ঠিক তেমনই নিজের মনের সঙ্গেও লড়তে হয় অনেক সময়।