ছোটো ভাই ডাক্তার। ওর প্রেম আছে আর এক লেডি ডাক্তারের সঙ্গে। মেডিকেল কলেজে একসঙ্গে পড়তে পড়তে ভাব। এখন বয়স হচ্ছে বলে মেয়ের বাড়ি থেকে চাপ দিচ্ছে। ওদের ভালোবাসা মেজভাইয়ের বিয়ের পর বাড়িতে জানাজানি হয়। তাছাড়া ছটু পেশেন্ট দেখে ভালো রোজগার করে। ইন্দ্ররও যদি প্রেম থাকত তাহলে তার জন্য আর কাউকে মেয়ে দেখতে হতো না। শহরাঞ্চলে এখন সবাই প্রেম, মিউচুয়াল বনিবনায় ব্যস্ত। প্রেম করে বিয়ে করা একসময় ছিল একটা ক্যালি। এখন না করতে পারলেই যেন ব্যতিক্রমী!
সরকারি চাকরি না হোক মামার মুখ থেকে শুনেছে যে-সিরিয়াল কোম্পানিতে ইন্দ্র চাকরি করে, তারা সবচেয়ে বেশি সিরিয়াল বানায়। ছেলে যে একদম অপাত্র নয় তা বিজ্ঞাপন দিতে যতগুলো সম্বন্ধ এসেছে, তা থেকেও প্রমাণিত। তাছাড়া বয়সও হচ্ছে। ওর জন্যই বড়ো জ্বালা। ইন্দ্রর বিয়ে হয়ে গেলে ঝাড়া হাত-পা হয়ে যাবে। মায়ের খুব বেড়াবার শখ। ইন্দ্রের ছুটি কম। তাতেই ইন্দ্রকে নিয়ে একবার নৈনিতাল গেছিল। পুরী তো জলভাত হয়ে গেছে। মেজভাই বিদেশে থাকার সময় সপরিবারে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ঘোরা হয়ে গেছে। তখন ইন্দ্র চাকরি করে না। চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছে। বিদেশ যাত্রা ভাগ্যক্রমে হয়।
কৃষ্ণেন্দুর সিঙ্গাপুরে পোস্ট ডক্টরেট চলছে। মাস ছয়েক পরে ইউরোপ যাবে। ইন্দ্র ভেবেছিল যাবে না কিন্তু এই সুযোগ হাতছাড়া করতে নেই। তাছাড়া বাবা, মা, ছটু গেলে একা বাড়িতে থাকার অসুবিধে। বুড়ো বয়সে ইন্দ্রর জন্যই তো ঘুরতে পারে না। ইন্দ্রর বেকার জীবনে তারাও সমব্যথী তবুও অন্য দুই ছেলের সাফল্যে আত্মহারা হবার বাধা যদি ইন্দ্রই হয় সে অনুভব ইন্দ্রের হয়েছে। তাই অনেক কিছু ভেবেই সায় দিয়েছিল। প্রতিষ্ঠিত হতে বয়স লাগলে যা হয় আর কী!
পরীক্ষার প্রস্তুতি না হোক একমাস ভালো ভাবে ঘুরেছিল ইন্দ্র। এমনই ভালো লেগেছিল যে, ইন্দ্র ভাইকে বলেছিল যা হোক চাকরির সন্ধান করলে ওখানেই থেকে যাবে! ভালো ভাবে ঘোরালেও চাকরির ব্যাপারে, দাদা শুধু বিএসসি পাশ বলে উদাসীনই ছিল ভাই কৃষ্ণেন্দু! এখানে সবাই গবেষণার চাকরির জন্য মাথা ফাটাচ্ছে। কৃষ্ণেন্দু পোস্ট ডক্টরেট করছে। এমটেক করার পর বহু বহুজাতিক সংস্থায় ভালো চাকরি ছেড়েছে। ছোটো বয়সে ইন্দ্র কৃষ্ণেন্দুর চেয়ে পড়াশোনায় যথেষ্ট ভালো ছিল। ভাগ্যের পরিণতি যে এমন হবে তা কে জানত?