ঘুঘুর ডিমের মতো দুটো রসগোল্লা দিয়ে অতিথি সেবার পর মেয়ে দেখে ইন্দ্র বুঝল স্নাতক ও প্রকৃত সুন্দরীর অর্থ। অন্তত বিজ্ঞাপনে যা লিখেছিল ইন্দ্র। ইন্দ্র মেয়ের দাদাকে বলল 'আমরা পরে জানাব।' দাদা চলে যেতে মা ইন্দ্রকে বলল, 'তোর ভাগ্যটাই খারাপ!'
ইন্দ্র মন খারাপের সঙ্গে বলল, ‘আরও তো আছে, দেখা যাক।' খানিকক্ষণ পরে মা বলল, 'এখানে অন্ন পিসিমার বাড়ি। এতটা এসেছি যখন, একবার ঘুরে যাই।'
একটা ভ্যানরিকশা পাওয়া যেতে বড়া গ্রামের উলটোদিকে বেড় গ্রামে অন্নপিসির বাড়ি গেল। পৌঁছোনোর সঙ্গে সঙ্গেই, ‘ও মা৷ বউদি এসেছে, আয় ইন্দ্ৰ আয়। তোমরা কোথায় এসেছিলে? খাওয়া দাওয়া করে যাবে কিন্তু।'
ইন্দ্ৰ ভাবল ভালোই হল সেই সকালে চা জলখাবার খেয়ে বেরনো তার ওপর বেলা একটা। আর ও বাড়িতে ঘুঘুর ডিমের মতো রসগোল্লা খিদের সময় কিছুই নয়।
ইন্দ্রর মা বলল, “এই দেখ না ইন্দ্রর বিয়ের ব্যাপারে একটা মেয়ে দেখতে এসেছিলাম।”
—ও... তোমরা মেয়ে দেখতে এসেছিলে। তা পছন্দ হল?
—না না কী অখাদ্য মেয়ে! শুধু শুধু আসা হল।
—তা যাকগে তোমরা বসো আমি রান্না চাপিয়ে দিচ্ছি, খেয়েদেয়ে যাবে কিন্তু।
ইন্দ্রর মা বলল, “ওসব আর ঝামেলা করছ কেন। আমরা এখুনিই চলে যাব।”
—সে বললে হবে। আর আসই না তো। শ্রীরামপুরে সেই শেষ দেখা।
ইন্দ্রর মনে পড়ল অন্নপিসিমার সঙ্গে গতবছর পুজোর সময় দেখা হয়েছিল। ইন্দ্রদের শ্রীরামপুরের ফ্যামিলি, বটগাছের মতো। অন্নপিসিমা দূর সম্পর্কের পিসিমা হয়। এত বড়ো ফ্যামিলি এদিকে ইন্দ্রের মনে হচ্ছে কেউ একটা বিয়ের সম্বন্ধ করে না। আগে দূর সম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ের চল ছিল।
—বউদি, ইন্দ্র কী করে এখন? চাকরি পায়নি শুনেছিলাম।
—ও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করছে। একটু থেমে, ‘দেখ না একটা ভালো মেয়ে খুঁজছি।'
—ভালো মেয়েই পাওয়া কঠিন। এইতো আমার ভাসুরের একটা ভালো মেয়ে ছিল, ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেল।
মা জিজ্ঞেস করল, “ভাব নাকি?”