এই ভর সন্ধেবেলায় হঠাৎ বাবুর ঘরে ডাক পড়ল কেন ভেবে পেল না দেবু। সন্ধের গা ঢাকা অন্ধকারে ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া লরি থেকে ষোলো বস্তা চিনি আর আট টিন সরষের তেল সবে গুনে গেঁথে ঢুকিয়েছে গোডাউনে, এমন সময় দিনুদা এল, ‘এই দেবা– বাবুর সঙ্গে দেখা করিস একবার।’

সরষের তেলের টিন গুনতিতে ব্যস্ত দেবু ঘাড় না ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘বাবু কোথায়?’

‘গদিতে।’ এটুকু বলেই পিছন ফিরল দিনুদা। এমনিতেই কম কথার মানুষ। তবু ঝড়াং করে পিছন ফিরতে মনটা ‘কু’ গাইল দেবুর। চট্ করে গোনাগুনতির কাজটা ভোম্বলকে বুঝিয়ে দিয়ে সঙ্গ নিল দিনুদার। হাজার হোক বাবুর খাস লোক বলে কথা!

‘কী ব্যাপার দিন্দা?’

‘কী ব্যাপার– আমি কোথ্থেকে জানব? কত্তাবাবুর কথা তো জানিস!’ উত্তর আরও ভাসাভাসা করে দিনুদা এগিয়ে গেল চত্বর ছেড়ে।

গদি বলতে গোডাউন চত্বর-এর এমুড়ো ওমুড়ো ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা খানদশেক লরি আর ম্যাটাডোর ভ্যানের ফাঁকফোকর দিয়ে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে ব্রিটিশ আমলের অ্যাসবেস্টস শেড দেওয়া ঘরটি তার কথাই বোঝাচ্ছে। দেখতে তেমন আহামরি না হলে কী হয়– ওই ঘরটিই এই আমোদঘাটার সামন্তবাড়ির প্রাণভোমরা। এখান থেকেই নকুল সামন্ত’র মাকড়সার জাল বিস্তার। ওদিকে কাশ্মীর, পঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি থেকে শুরু করে এদিকে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড আর পাশের রাজ্য বিহার পর্যন্ত বাবুর সাম্রাজ্য ছড়ানো। সেই ঘরে ডাক পড়েছে দেবুর। বুক একটু ধড়াস ধড়াস তো করবেই।

ঘরে ঢোকবার আগে দরজার কাচে নিজের ধুলোমাখা চেহারাটা একবার জরিপ করে নিল তাই। অন্ধকার মাখামাখি হয়ে কাচের গায়ে নিজেকে পরিষ্কার দেখতে পেল না। পাশে এখন কেউ নেই দেবুর। থাকলে নির্ঘাত বুকের ধুকপুকুনি শুনতে পেত।

একটু ইতস্তত করে কাচের দরজাটা আলগা হাতে ঠেলল। ভেতরে পা রাখতে ঠান্ডা এক ছোঁয়া পেল শরীরে। ঘরে মিহি করে এসি চলছে।

ধোপদুরস্ত ধুতি-পাঞ্জাবিতে বাবুর দুধসাদা গায়ের রং খোলতাই হয়েছে খুব। ঠিক মাঝবয়েসি এক রাজা যেন। মাথার কোঁকড়ানো চুল পরিপাটি করে আঁচড়ানো। ডান আর বাঁ-হাতের আঙুলগুলোয়  রংবেরঙের পাথর বসানো আংটি। সোনার ঘড়িতে ঘরের আলো চমকায়। মুখে অনবরত চিবিয়ে চলা সুগন্ধি পান। গন্ধে ঘর ম’ ম’ করছে।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...