ঘরপোড়া গরু, সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরাই। লক্ষণ দেখেই বুঝতে পারি, পরিণতি কোন দিকে যাবে। এক্ষেত্রেও আমার অনুমান মিথ্যে হওয়ার নয়। বিয়েটা এখানে হবে না। পাত্রীপক্ষের আচরণ খুব চেনা। এর আগে দু-দু’বার বিয়ে ভেঙেছে। এভাবেই। অথচ প্রথম দিকে পাত্রীপক্ষের আগ্রহ ছিল বেশি। তারপর…, জানি না কী রহস্যময় কারণে! হতে পারে পেছন থেকে কেউ কাঠি নাড়ছে। কিন্তু কে? কেন? কী তার স্বার্থ? গ্রহণযোগ্য কোনও ব্যাখ্যা এখনও পাইনি।

আমি দিব্য। এমএ, বিএড। পেশায় স্কুল শিক্ষক। বাড়ির একমাত্র ছেলে। বাবা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী। এখনও পাঁচ বছর চাকরি আছে। শহরের ওপর মার্বেল বসানো হাল ফ্যাশনের দোতলা বাড়ি। বাড়িতে আধুনিক ভোগ্যপণ্যের সমস্ত উপকরণ। দেখতে নায়কের মতো না হলেও কুৎসিত মোটেই নই। গড় বাঙালি ছেলেদের তুলনায় যথেষ্ট লম্বা, শরীরে একফোঁটা মেদ নেই। রুচিশীল পরিপাটি পোশাকেই স্বচ্ছন্দ বোধ করি। নেশা বলতে একমাত্র সিগারেট। কথাবার্তা আচার-আচরণে যথেষ্ট বিনয়ী এবং স্বপ্রতিভ। পরিচিত মহলে ভালো ছেলে হিসেবেই জানে। মধ্যবিত্ত পরিবারের বিয়ের পাত্র হিসাবে যে একেবারেই হেলাফেলা নই, এটুকু বোঝার মতো বুদ্ধি আমার আছে।

তবু বিয়ে হচ্ছে না। ভেঙে যাচ্ছে বারবার। বর্তমানে যেখানে কথাবার্তা চলছে। তাদের আচরণও বিশেষ সুবিধার মনে হচ্ছে না। মাস ছয়েক আগে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় এই সম্বন্ধটা এনেছিল। বাবা স্কুল শিক্ষক। তিন মেয়ের মধ্যে পাত্রীই বড়ো। ইংলিশে অনার্স কমপ্লিট করে বর্তমানে স্কুল সার্ভিসের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেখতে শুনতে ভালো। একটু-আধটু গানবাজনাও জানে। আত্মীয়টির প্রাথমিক অনুরোধ ছিল, একবার যেন দেখে আসি। বিয়ে-থা কপালের ব্যাপার, যেখানে লেখা আছে সেখানেই হবে।

এক রবিবার গেলাম। দেখতে আহামরি না হলেও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। কথাবার্তায় স্মার্ট। বাদবাকি সব যেমন বলেছিল।

মেয়ে দেখে বাড়ি ফিরতেই মা বলল, ওরা ফোন করেছিল।

– কারা?

– মেয়ের বাড়ি থেকে।

– কী বলছে?

– সামনের রবিবার আসবে।

– আসবে মানে! আমার মতামত জানার প্রয়োজন মনে করল না। পছন্দ হয়েছে কি হয়নি একবার শুনবে না! তোমরাই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে নিচ্ছ?

– আমি কখন সিদ্ধান্ত নিলাম?

– তবে যে আসতে বললে?

– বারবার আসতে চাইছে, না বলি কী করে! বলেছিলাম, ছেলে ফিরুক, কথা বলি, তারপর আপনাদের জানাব। এমন নাছোড় যে… তুইই বল, এভাবে ধরলে কাউকে না বলা যায়! আসতে চাইছে যখন আসুক। আসা মানেই তো আর বিয়ে নয়। মেয়ে কেমন দেখলি?

– মন্দ না।

– তাহলে আসুক।

এল। প্রায় দশ-বারো জন। বিভিন্ন বয়সি। দাদু-দিদিমা থেকে শুরু করে আধুনিক দাদা-বউদি, তাদের ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে। জেরায়-জেরায় জেরবার করল আমাকে। কোথায় চাকরি? চাকরির বয়স কত? পার্মানেন্ট কি না? প্রাইমারি না হাইস্কুল? স্কুলে কতজন দিদিমণি আছে? তাদের কতজন অবিবাহিত? কেন তাদের কাউকে বিয়ে করছি না? আরও অনেক প্রশ্ন। বয়স্ক দিদিমা আমার মুখের উপর ঝুঁকে পড়ে অনেকক্ষণ ধরে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কী যেন দেখলেন, তারপর প্রশ্ন করলেন, চশমা ছাড়া একদম দেখতে পাও না?

– পাব না কেন! চশমা অ্যালার্জির জন্যে, ধুলোয় অ্যালার্জি আছে।

– খোলো তো দেখি।

খুললাম।

চোখের সামনে তিনটে আঙুল তুলে ধরে জিজ্ঞাসা করলেন, কটা আঙুল?

ঘরসুদ্ধ সবাই হো হো করে হেসে উঠল। আমি গম্ভীর।

পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে যাচ্ছে দেখে অল্পবয়সি বউদিটি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেন– কিছু মনে করবেন না। সম্পর্কে দিদিমা হয় তো, তাই ঠাট্টা করছে।

কে জানে! সেকেলে মানুষ, তারপর গ্রামের। শুনেছি গ্রামের দিকে এই ধরনের রসিকতা চালু আছে। জোর করে সহজ হওয়ার চেষ্টা করি। খচখচানি তবু একটা থেকে যায়। এসব নারীপ্রগতির লক্ষণ নয়তো? আমাদের উত্তরসূরিরা মেয়ে দেখার নামে পাত্রীকে নানাভাবে হেনস্থা করেছে, এমনকী কাপড় উঁচু করে পায়ের গোড়ালি দেখতেও ছাড়েনি–, পরিবর্তনের যুগে হয়তো সেগুলোই বুমেরাং হয়ে আসছে। পূর্বপুরুষের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে আমাদের। অবশ্য আমার দায়ও কম কিছু নয়। অপরাধ প্রেম করতে না-পারা বা না-করা। আজ তাহলে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

দেখাশোনা পর্ব শেষ হলে পাত্রীর বাবা বললেন, বড়ো ভাইরাভাইয়ের আসার কথা ছিল, শেষ মুহূর্তে বিশেষ কাজে আটকে গেছে। পরের সপ্তাহে আসবে। বিকালের দিকেই আসব আমরা। বেশি না, দু-তিন জন মাত্র। আর একটা কথা, সরাসরি আলোচনা করে নেওয়াই ভালো– বুঝতেই পারছেন আমার আর্থিক অবস্থা, একার চাকরির উপর সংসার। তিন মেয়ের একটাকেও এখনও পাত্রস্থ করতে পারিনি। জানি আপনাদের মতো ঘর পাওয়া বড়ো ভাগ্যের কথা। ছেলে আপনাদের হিরের টুকরো, এমন ছেলের জন্য কোনও মূল্যই যথেষ্ট নয়। তবু আমাকে তো আমার অবস্থা বুঝে এগোতে হবে! আপনাদের চাহিদাটা যদি একটু জানান।

– আপনি দেনাপাওনার কথা বলছেন?

– ওই আর কী, বরপণ বলুন আর…

– দেখুন দাদা, আমরা ব্যাবসা করতে বসিনি, সম্পর্ক তৈরি করতে এগোচ্ছি। এ প্রসঙ্গে আর একটি কথাও উচ্চারণ করবেন না।

– সে তো বটেই। তবে কী জানেন, আজকালকার ছেলে, বরপণ না নিক একটা আবদার তো থাকে…

– না, নেই। বাবা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন। ঘুরিয়ে নাক ধরবার পক্ষপাতী আমরা নই। আমাদের যেমন কোনও দাবি নেই, আপনারা নিজে থেকেও কিছু দেবেন না। তেমন হলে আমরা কিন্তু সব রেখে আসব। আর এ কেবল আমার একার সিদ্ধান্ত নয়, আমাদের পরিবারের সিদ্ধান্ত। প্রয়োজন হলে ছেলের সাথেও কথা বলতে পারেন।

– না না, এ কী বলছেন। আপনার কথাই যথেষ্ট।

– আর একটা কথা, আমরা কিন্তু সামনের শ্রাবণেই শুভ কাজ করতে চাই। দু’পক্ষের যখন পছন্দ, অকারণ দেরি করার কোনও অর্থ হয় না।

– শ্রাবণ! মাঝখানে মাত্র তিনটে মাস। এত অল্প সময়ে… তাছাড়া আমাদের সবাই এখনও ছেলে দেখল না। আপনারাও মাত্র একদিন গেছেন। আপনাদের আত্মীয়স্বজন…

– পাকাদেখার দিন দেখবে। আপনাদের আর যারা দেখার মতো আছে, সামনের রবিবারে পাঠিয়ে দিন। ওই দিনই সম্ভাব্য ডেট নিয়ে একটা আলোচনা হবে। আমরা কিন্তু তাড়াতাড়ি ছেলের বিয়ে দিতে চাই।

পরের রবিবার আরও সাত-আটজন এলেন।

গত সাতদিনে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। পাত্রীপক্ষের তরফ থেকে আমার স্কুলে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এই নামে কেউ চাকরি করে কি না? কোন পোস্ট? কত বছর চাকরি করছে? মাইনে কত? ছেলে কেমন? আরও অনেক প্রশ্ন। প্রধানশিক্ষক সজ্জন ব্যক্তি, আমাকে স্নেহ করেন, তিনি তাঁর মতো বলেছেন। খোঁজ নেওয়া হয়েছে পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন এমনকী আমার বন্ধু মহলেও। সেসব খবর ভায়া হয়ে আবার আমাদের কানে পৌঁছেছে। মা একটু ক্ষুণ্ণ হলেও আমার কিছু মনে হয়নি। নিজের সম্পর্কে আমার আত্মবিশ্বাস আছে, যেখানে ইচ্ছা খোঁজ নিক। তাছাড়া একজন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা তার কন্যাকে পাত্রস্থ করার আগে, পাত্র সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজখবর নেবেন, এটাই স্বাভাবিক। তার জায়গায় আমি থাকলে আমিও একাজ করতাম। যা দিনকাল পড়েছে…

জলযোগ পর্ব শেষ হলে আজ মা-ই প্রথম প্রসঙ্গ তুলল, আমাদের এবার কাজের কথায় আসা উচিত। দিনক্ষণ নিয়ে কিছু ভেবেছেন?

– অত ব্যস্ত হচ্ছেন কেন? কথায় বলে লাখ কথা না হলে বিয়ে হয় না। এসব কাজ কি তাড়াহুড়ো করে করতে আছে?

– আপনাদের প্রবলেমটা কি খুলে বলবেন?

– না না, প্রবলেম কিছু নেই। মেয়ের বিয়ের জন্যে আমি তৈরি হয়েই আছি।

– তবে? আমাদের সম্পর্কে কোনও কয়্যারি থাকলে খোলাখুলি আলোচনা করতে পারেন।

– ছিঃ ছিঃ কী বলছেন! আপনারা সজ্জন ব্যক্তি। আজকের দিনে এমন ঘর লাখে একটাও মেলে না। আর ছেলের তো কোনও তুলনাই হয় না। আজকের যুগে এমন ছেলে… মেয়ে আমার অনেক ভাগ্য করে জন্মেছে।

– তাহলে বাধাটা কোথায়?

– আসলে সেভাবে কিছু ভাবার সময় পাইনি। যাই, বাড়ি গিয়ে আলোচনা করি…

– তার মানে সিদ্ধান্তই নিতে পারেননি?

– না না, সিদ্ধান্ত পাকা। বিয়ে আমরা এখানেই দেব।

পাত্রীর বাবা সপ্তাহ খানেক সময় নিলেন সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য। একটা ভলো দিন দেখে দুপক্ষ একজায়গায় বসে আনুষ্ঠানিক ভাবে লগ্নপত্র হবে, এরকম একটা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিদায় নিলেন তারা। তারপর প্রায় দু’মাস কেটে গেছে। গত দু’মাসে এক চুলও কাজ এগোয়নি। এগোয়নি কারণ, ওপ্রান্তের রহস্যময় শিথিলতা। নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ রাখলেও, বিয়ের প্রসঙ্গ তুললে একটা না একটা অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে গেছে। জানি না কেন এমন করছে। দিনে দিনে অসহ্য হয়ে উঠছে ব্যাপারটা। তাছাড়া এটা আত্মসম্মানের প্রশ্নও। অন্যের হাতের পুতুল হয়ে… এমন অবস্থায় করণীয় কাজ একটাই, না বলে দেওয়া। সেটা করাও যায়। কিন্তু গত দু’বছরে তিন-তিনটে বিয়ে ভেঙেছে, রহস্যটাও অধরা রয়ে গেছে। পাত্রীপক্ষ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কেন এমন গড়িমসি করছে, সেটা না জানতে পারলে ভবিষ্যতেও…

সাম্প্রতিক ঘটনাটা নিয়ে অনেকের সাথে আলোচনা করেছি। কেউ ভালো চোখে দেখছে না। আমিও সিঁদুরে মেঘ দেখছি। হতে পারে আমাকে হাতে রেখে অন্য কোথাও চেষ্টা চালাচ্ছে। বেটার পেয়ে গেলে ‘না’ বলে দেবে। এমন মানসিকতা অনেকেরই থাকে। সেক্ষেত্রে অপমানের চূড়ান্ত হতে হবে।

মানসম্মান বাঁচাতে সিদ্ধান্ত এবার নিতেই হবে।

পরিস্থিতির জটিলতায় বাড়িসুদ্ধ মানুষ যখন দ্বিধাগ্রস্ত, আচমকা একদিন অনীকের ফোন এল। অনীক আমার ছোটোবেলার বন্ধু। পাশাপাশি পাড়ায় বাড়ি। কর্মজীবনে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় ইদানীং সেভাবে দেখাসাক্ষাৎ না হলেও আন্তরিকতায় ঘাটতি পড়েনি।

– শালা বিয়ে করছিস, ভাবছিস জানতে পারব না। ফাঁকি দেওয়ার তালে আছিস, না?

স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই শুরু করল অনীক।

– তোকে কে বলল?

– খবরটা সত্যি কি না বল?

– এখনও ফাইনাল হয়নি। কথাবার্তা চলছে।

– কোথায়, হাবড়া?

– অনেক খবর রাখিস দেখছি, চিনিস নাকি?

– না, ট্রেনে পরিচয়। অফিস থেকে ফেরার পথে। বনগাঁয় বাড়ি শুনে বললে, মেয়ের সম্বন্ধ করছে বনগাঁয়। ছেলে স্কুলশিক্ষক। তোর নাম বলল, বললাম, চিনি। ছোটোবেলার বন্ধু। এখনও যোগাযোগ আছে কিনা জানতে চাইল। তোর সম্পর্কে অনেক কয়্যারি। অন্যান্য জায়গা থেকেও খোঁজখবর নিয়েছে। নেগেটিভ কিছু পায়নি, কথাবার্তা শুনে যেমন মনে হল। লোকটা কেমন সন্দেহবাতিক টাইপের। এক পা এগোলে, দু-পা পেছানোর মানসিকতা। বিশেষ সুবিধার মনে হল না।

– কেন কী বলছে?

– বললাম, চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারেন। এমন ছেলে আজকাল মেলে না। তো কী বলল জানিস?

– কী?

– ভয় তো সেখানেই।

– মানে!

– ঠিক এই শব্দটা আমার মুখ থেকেও বেরিয়েছিল। ভদ্রলোক বললেন, ঠান্ডা মাথায় বুঝবেন। এত ভালো ফ্যামিলি, ভালো চাকরি, তারপর একমাত্র পুত্র। খোঁজখবর নিয়ে যতটুকু জেনেছি, ছেলেও চরিত্রবান। বিয়ের বাজারে এমন একটা ছেলের ডিমান্ড কী হতে পারে আপনার ধারণা আছে?

– কেন কী চাইছে?

– না না, কিছু চায়নি। চাইলে তো সন্দেহ হতো না। বলছে কিছুই নেবে না। দিলেও রেখে আসবে। আপনিই ভাবুন…

– ঠিকই তো বলেছে। একটা শিক্ষিত, সচেতন ছেলে পণ নিয়ে বিয়ে করবে কেন? পণ দেওয়া এবং নেওয়া দুটোই বেআইনি।

– রাখুন তো আপনার আইন! ওসব সিনেমা-থিয়েটারে চলে, গল্প-উপন্যাসে মানায়। বাস্তবটা আমি জানি। মেয়ের জন্যে আজ থেকে তো চেষ্টা করছি না! আজকের দিনে এত বোকা কেউ নেই।

– আপনার কী মনে হচ্ছে?

– রহস্য কিছু নিশ্চয়ই আছে। নইলে বিয়ের জন্যে এত তাড়াহুড়ো করবে কেন? আমার আত্মীয়রাও বলছে, ধীরে এগোতে। ভালো করে খোঁজখবর নিতে…

– তো নিন না।

– নিয়েছি। অনেক নিয়েছি। ছেলে সম্পর্কে কোত্থাও এতটুকু খারাপ কিছু পাইনি।

– তাহলে তো মিটেই গেল।

– মিটে গেল কী বলছেন? সন্দেহ তো এখানেই…

– ধুর মশাই, আপনার স্ক্রু ঢিলে আছে। আমি হলে আপনার মেয়েকে কখনওই বিয়ে করতাম না।

– রাগ করবেন না, ভদ্রলোক হঠাৎ আমার হাত চেপে ধরে। বলে, কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা, মাথার ঠিক নেই। ভেবে দেখুন, আমার জায়গায় আপনি হলে আপনার অবস্থাও আমার মতো হতো কিনা?

– না হতো না। আপনার মতো এত নীচু মানসিকতা আমার নয়।

– সে আপনি বলতেই পারেন। আপনার কথা আমি গায়ে মাখছি না। ভেবে দেখুন, আপাতদৃষ্টিতে আমার তা মনে হলেও বাস্তবে সেটা তো নাও হতে পারে!

– আপনার কথাবার্তা কিছু বুঝতে পারছি না।

– যদি অভয় দেন তো একটা কথা জিজ্ঞাসা করি। কথাটা যেন পাঁচকান না হয়। আমাকে ছুঁয়ে কথা দিলেন কিন্তু।

– আমি নই, আপনি আমাকে ধরে আছেন।

– ওই হল, একই ব্যাপার। ভদ্রলোক আরও জোরে আমার হাতটা চেপে ধরেন। মুখটা আরও কাছে এগিয়ে এনে, গলার স্বর যথাসম্ভব খাদে নামিয়ে বলেন, আপনি ছেলের বন্ধু, আপনি জানলেও জানতে পারেন। সব খবর তো আর বাইরের মানুষ জানে না। বাইরে থেকে দেখলে মাকাল ফলও সুন্দর লাগে। না না, আপনার বন্ধুকে আমি মাকাল ফল বলছি না। আসলে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা তো, সন্দেহ হয়ই। ভদ্রলোক এবার গলার স্বর আরও নামিয়ে, আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন…

অনীক থামে একটানা কথাগুলো বলে। একটু সময় নেয় তারপর বলে, কী জিজ্ঞাসা করল জানিস?

– কী?

– ছেলে ফিজিক্যালি ফিট তো?

আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...