হিসাবের খাতা দেখে চমকে উঠল সুজয়। এত বেশি খরচ! মাত্র এক মাসে যদি এত খরচ হয়, তাহলে তো রাজাও ভিখারি হয়ে যাবে। বিড়বিড় করতে করতে সুজয় হাত দিয়ে নিজের কপাল চাপড়াল।
গত এক-দু’মাস ধরে সুজয় লক্ষ্য করছে যে, যখন-তখন এটিএম থেকে টাকা তুলে নিয়ে আসছে নন্দিতা। আবার যখন এটিএম থেকে টাকা তুলে আনার সময় পাচ্ছে না, তখন সুজয়ের থেকে টাকা চেয়ে নিচ্ছে সে।
কিছুদিন আগে এই খরচের বিষযটাকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি সুজয়। কারণ, তখন সে ভাবত, নতুন বিয়ে সদ্য সংসার সামলাচ্ছে নন্দিতা, তাই হয়তো খরচে লাগাম টানতে পারছে না। তবে মজার বিষয় হল এই যে, সুজয়ের নিজেরও সংসার খরচের কোনও জ্ঞান ছিল না। কারণ, তাদের যৌথ পরিবারের বেশিরভাগ সংসার খরচ সামলাতেন সুজয়ের মা এবং বাবা। আর বেশি কিছু না জানার কারণে, সুজয়ও বিয়ের প্রথম দিকে তেমন কিছু বলত না নন্দিতাকে। কিন্তু লাগামছাড়া খরচ হতেই সুজয় দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে। এখন ওর মনে প্রশ্ন, এত টাকা কোথায় খরচ করছে নন্দিতা?
কিছুদিন আগেই বিয়ে হয়েছে সুজয় এবং নন্দিতার। কানপুর বদলি হওয়ার পর প্রথম দুমাস তো খরচ মোটামুটি ঠিকই চলছিল। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে খরচ অনেক বেড়েছে বলে মনে হয়েছে সুজয়ের। তাই সে এ ব্যাপারে নন্দিতাকে সতর্কও করেছিল কিন্তু নন্দিতা খুব বেশি গুরুত্ব দেয়নি সুজয়ের কথায়। ফলে, এই বিষয়ে সুজয়ের চিন্তা বাড়ছিল। ব্যবসায়ীর মেয়ে, টাকার অভাব নেই। বাঁধাধরা আয়ের সংসারে কীভাবে ভেবেচিন্তে খরচ করতে হয়, তা নন্দিতা কতটা বুঝবে, এই নিয়ে বিয়ে আগে থেকেই দুঃশ্চিন্তায় ছিল সুজয়।
এখন খরচের কথা ভেবে খুব রাগ হল সুজয়ের। সে এ বিষযে কড়া ভাবে সতর্ক করার জন্য বেশ রাগত স্বরেই ডাক দিল নন্দিতাকে।
সুজয়ের ওরকম গম্ভীর স্বর আগে কখনও শোনেনি নন্দিতা। তাই সে ঘাবড়ে গেল। রান্নার কাজ ছেড়ে বাইরে এল।