পর্ব - ১০
চা খেতে খেতে রণিদা বলল, একটু তাস খেললে কেমন হয় রঞ্জন?
আমি অবাক, কেসটা এমন এক পর্যায়ে এসে থমকে আছে, কোথায় রণিদা তাই নিয়ে ডিসকাস করবে, তা নয় হঠাৎ তাস খেলার প্রস্তাব?
একটু আমতা আমতা করে বললাম, হ্যাঁ, সে তো খেলাই যায়। কিন্তু আর একজন পার্টনার লাগবে যে?
কেন শুক্লা নেই?
বোন তো কলেজে গেছে, বললাম আমি।
ওঃ হো, ওর তো আবার ইভনিং কলেজ। ঠিক আছে তা হলে এক কাজ কর–দাবাটা নামা, এক হাত খেলা যাক।
অগত্যা দাবা নামানো হল, সাজানো হল ঘুঁটি।
রণিদা বলল, আসুন গোবিন্দদা, দেখি আজকে আপনি হারতে কতক্ষণ সময় নেন?
ঢোলগোবিন্দবাবু বললেন, এমন একটি ভাব করছ যেন তুমি বিশ্বনাথন আনন্দ। নেহাত দাবাটা আমি তেমন ভালো জানি না তাই মাঝেমধ্যে হেরে যাই তোমার কাছে।
মাঝেমধ্যে?
ওই হল আর কী।
খেলা আপনি ভালোই জানেন দাদা, যেটা জানেন না সেটা হল সঠিক চাল। আর সেটা দিতে এটাতে কিছু থাকতে হয়, নিজের মাথায় টোকা মেরে রণিদা ঘিলুর ইঙ্গিত করে।
এটা কিন্তু বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে রণি, এত অহংকার ভালো নয়।
বেশ, তবে বাজি ধরা যাক, বলল রণিদা।
কী বাজি?
যদি আমি আপনাকে দশ মিনিটের মধ্যে হারাতে পারি তবে কাল আপনি আমাদের দু’জনকে রেস্টুরেন্টে খাওয়াবেন, আর যদি আপনি আমাকে হারাতে পারেন বা আমি হারতে দশ মিনিটের বেশি সময় নিই তা হলে কাল আমরা দু’জন আপনার খরচে রেস্টুরেন্টে খাব।
ঢোলগোবিন্দবাবু এক মনে ঘুঁটি সাজাচ্ছিলেন।
রণিদার কথাটা উনি প্রথমে ধরতে পারলেন না। কিন্তু সেটা বোধগম্য হওয়া মাত্র নড়েচড়ে বসলেন। বললেন, এটা কেমন কথা হল ভায়া? খেলায় আমি হারি বা জিতি, যাই রেজাল্ট হোক না কেন আমাকেই খাওয়াতে হবে?
আমি হো-হো করে হেসে উঠলাম। বললাম সেই মহান শর্তটার কথা মনে আছে ঢোলগোবিন্দবাবু?
কোনটা ভাই?
ওই যে, হয় তুই মাছের লেজা খা, আমি মাছের মাথা খাই, না হয় আমি মাছের মাথা খাই, তুই মাছের লেজা খা।