একদিকে প্রশান্ত মহাসাগরের অতল গভীরতা আর অন্যদিকে মাউন্ট ফুজির গগনচুম্বী বরফঢাকা শিখর। দু’পাশে প্রকৃতির সবুজ গালিচাকে সাক্ষী রেখে ছুটে চলেছে শিনকানসেন– জাপানি বুলেট ট্রেন। অসম্ভব গতির জন্য জানলার বাইরের সমস্ত দৃশ্যই যেন ঘষা ছবি। যেন একটা সদ্য জলরং করা ছবি অনবরত কেউ ঘেঁটে দিয়ে যাচ্ছে। বেশিক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থাকতে মন চাইল না সার্থকের।

সংরক্ষিত আসনের বিলাসী ব্যাকরেস্ট পিছন দিকে হেলিয়ে দিয়ে, সে তার ক্লান্ত চোখদুটি বন্ধ করল। একটু-একটু তন্দ্রা মাঝেমধ্যে তাকে আচ্ছন্ন করে যাচ্ছে। খানিকটা তার অজান্তে আর খানিকটা সচেতনে তার মন বুলেটের চেয়েও দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে অতীতে। মুহূর্তে আশেপাশের রঙিন প্রকৃতি চোখের সামনে থেকে উধাও। তার বদলে ফিরে এল অন্য সময়, অন্য পরিপ্রেক্ষিত।

বছরখানেক আগে সেই মেয়েটির সঙ্গে তার আলাপ। গ্র্যাজুয়েশনের রেজাল্ট দেখে এসে আর একমুহূর্তও খামোখা নষ্ট করতে চায়নি সার্থক। বাবা রাগারাগি করেছিলেন। মা কেঁদেকেটে একশা হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুতেই টলানো যায়নি সার্থককে। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তটা সে নিয়ে ফেলেছিল আগেই। সম্ভবত তার ছেলেবয়সেই। বাবা বলেছিলেন, ‘পড়াশোনা করতে না চাস তো সমবায় থেকে লোন নিয়ে ছোটোখাটো একটা দোকান করে দিচ্ছি। তিনটে তো পেট

সংসারে। ঠিক চলে যাবে–!’

সার্থক বাবাকে বোঝানোর বৃথা চেষ্টা করেনি। গররাজি মুখ করে চুপ করে গিয়েছিল। বাবা এই মফসসল শহরে বসে কী করেই বা বুঝবেন, তাঁর সীমাবদ্ধ ভাবনা আর সার্থকের লাগামবিহীন স্বপ্নের মধ্যে দূরত্ব কত যোজন! ছোটোবেলা থেকেই সে ঠিক করে রেখেছে বিদেশে তাকে যেতেই হবে। উন্নতির একমাত্র ঠিকানাই বিদেশ।

অনেক আগে এ কথাটা তার মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিল তাদেরই পাড়ার ছেলে সুধন্য। বছরতিনেক আগে কীসব পরীক্ষা-টরীক্ষা দিয়ে সেও কেটে পড়ল আমেরিকায়। প্রথম প্রথম মাঝেমধ্যে ফোন করত। আইএসডি। সেই উৎসাহ স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তীকালে বজায় থাকেনি। কিন্তু সুধন্যর কথাগুলো মনে আছে সার্থকের। সুধন্য গল্প করেছিল, কীভাবে জাহাজের খালাসি হয়ে একজন পৌঁছে গিয়েছিল আমেরিকাতে। এখনও কত লোক প্রতিদিন ভারত-বাংলাদেশ থেকে ভাগ্যের সন্ধানে সেখানে গিয়ে পৌঁছোয়! তাদের বেশিরভাগের আবার ভিসা-পাসপোর্ট কিছুই নেই।

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...