এদিক ওদিক পায়চারি করতে করতে আর স্বপ্নের জগতে ভাসতে ভাসতে, হঠাৎই কলিংবেলের শব্দ। ওফ, হার্ট অ্যাটাক হল বুঝি! নিঃশ্বাসও বন্ধ হয়ে আসছে। এত জোরে শব্দ! পাড়া-প্রতিবেশী সব শুনে ফেলল বুঝি। অনন্যা এসে গেছে। ছুটে যেতে চায় প্রীতম। তারপর নিজেকেই বোঝায়— শান্ত হতে হবে, সবকিছুতে তাড়াহুড়ো ভালো নয়। ধৈর্য ধরে সব ট্যাকল করতে হবে, ভদ্র ছেলে হতে হবে। অনন্যার কাছে নিজেকে ছোটো করতে পারবে না। কয়েক মুহূর্তেই দরজা খুলে দিল প্রীতম।
—এসে গেছি। ফিসফিস করে বলে, দরজা ঠেলে ঢুকে পড়ল অনন্যা। বাইরে এক ঝলক উঁকি মেরেই দরজা বন্ধ করে দিল প্রীতম। যাক কেউ দেখেনি। অনন্যা ঘরে ঢুকেই চেয়ারটায় বসে পড়ল। প্রীতম মনে মনে ভাবল – আহা, চেয়ারটা বুঝি ওর স্পর্শে সোনা হয়ে গেল।
—বাঃ, কী সুন্দর ফ্ল্যাট গো তোমার। কই ঘুরিয়ে দেখাও। অনন্যা বলে।
নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না প্রীতম। অনন্যা তারই ঘরে বসে আছে, নীল চুড়িদার, সাদা ওড়না, কী সুন্দর লাগছে ওকে। সেই অনন্যা, ওর প্রেমিকা অনন্যা। ফ্ল্যাটে শুধুমাত্র দুজনে, আর কেউ নেই। ঋষি কাপুরের ববি সিনেমার গানটা ওর মনে পড়ে গেল 'হম তুম এক কামরে মে বন্ধ হো'। অবশেষে সেই দিন, সেই মুহূর্ত উপস্থিত। উত্তেজনায় সব গুলিয়ে যায় প্রীতমের, গলাটা কেঁপে যায় একটু তবু নিজেকে বোঝাতে চেষ্টা করে প্রীতম। বলে, 'হ্যাঁ এসো। দেখবে এসো।”
দুজনে এ ঘর ও ঘর ঘুরে বেড়ায়। কিচেন, ডাইনিং, বাথরুম— সব উঁকি মেরে দেখল অনন্যা।
–বাহ, খুব সুন্দর সাজিয়েছ তো। এই পেন্টিংটা কার আঁকা? এই শোপিসটা কোথা থেকে কিনলে? এটা কি তোমার ছোটোবেলার ছবি? কী দুষ্টু দেখতে ছিলে! কী খাওয়াবে আমাকে? এইসব নানা কথা চলতে থাকল। পিছন পিছন হুঁ, হাঁ করতে করতে, বোকার মতো ঘুরতে থাকে প্রীতম। উফ, কখন যে ... তর সয়না ওর। মাথায় শুধু একটাই চিন্তা।