সন্ধেবেলা নয়নাদির জ্যাঠামশায়ের বাড়ির হলঘরে বসেছিল অন্তাক্ষরী প্রতিযোগিতার আসর। সেই আসরে সোহিনীর সৌজন্যে ছেলেদের হারিয়ে মেয়েরা জিতেছিল। একদিকে ছিল নয়না, সোনালি আর সোহিনী অন্যদিকে নয়নার অজয়দা, দিব্যেন্দু আর সোহম। শেষগানের অক্ষর ‘ধ’, সোহম গাইতে না পারলেও সোহিনী গেয়েছিল তার প্রিয় রবীন্দ্রসংগীত — ‘ধায় যেন মোর সকল ভালোবাসা প্রভু তোমার পানে... তোমার পানে'।
সেই গানের কথা তুলে সোহম বলল, “প্লিজ সোহিনী আর একটিবার শোনাবে সেই গান...’
—ওতো পূজা পর্যায়ের গান, আপনার ভালো লেগেছে! হেসে বলে ওঠে সোহিনী। সোহম বলে ওই গানেই আছে পূজার মাঝে প্রেমের স্পর্শ। গাও না সোহিনী প্লিজ।
মিষ্টি হাসে সোহিনী। এমন মধুর আকুলতা নিয়ে কেউ কখনও তাকে গাইতে বলেনি। গান গাইতে শুরু করলে সোহম মুগ্ধদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। তারপর ধীরে ধীরে সোহিনীর ডানহাতটা নিজের দু'-হাতের মুঠোয় ভরে নেয়। এবার তাকে প্রশ্রয়ই দেয় সোহিনী।
পর দিন সকালে কলেজে ক্লাস করে বাড়ি গিয়েছিল সোহম, তার ঠিক পরের দিনই আবার ফিরে আসে। দু'দিন পরে হাটতলার বান্টি সিনেমা হলে শুরু হল সোহিনীর প্রিয় নায়ক শাহরুখ খানের অভিনীত ছবি। সকলে মিলে দেখতে গেল তারা। পাশাপাশি বসেছিল সোহিনী আর সোহম। আলো-আঁধারের মাঝে তার মুখখানি কাছে টেনে নিয়ে সোহম বলেছিল 'আমি তোমায় পাগলের মতো ভালোবাসি সোহিনী। '
দৃশ্যটা অজয়ের চোখে পড়েছিল। বাড়ি ফিরে কাছে ডেকে সে সোহিনীকে বলেছিল, 'কী করছিস সোহিনী! তোরা যে এস জি হোল স্কয়ার হয়ে গেলি রে!”
—তার মানে! কপট বিস্ময়ে তার দিকে চায় সোহিনী।
বুঝতে পারছিস না, না বুঝতে চাইছিস না। ঠিক করে বল তো! সোহম ঘোষের নাকে নাক ঘষে তুইও তো সোহিনী ঘোষ হতে চললি রে! তাহলে এস জি ইনটু এস জি ইজ ইকুয়াল টু এস জি হোল স্কোয়ার হল নাকি! অজয় বলে ওঠে।
সোহিনী হেসে বলে, “আপনিও তো আমার দিদির সঙ্গে বেশ লেপটে রয়েছেন। সোনালি-অজয় মন্দ তো নয়। আমাদের দু'জনের উদ্দেশ্যই তো এক, তাই নয় কি!”