ঘড়ির ঢং ঢং আওয়াজে অসীমার টনক নড়ল। এক্ষুনি রঞ্জন ওর বন্ধুকে নিয়ে এসে পড়বে। রঞ্জন বারবার বলে গিয়েছিল চা-জলখাবার তৈরি করে রাখতে। অসীমা তড়িঘড়ি চোখ মুছে ঠান্ডা জলের ছিটে দিয়ে রান্নাঘরে গেল। নিজের মুখটা না দেখলেও বুঝতে পারল কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলে গেছে— জ্বালা করছে। কী যে করবে কিছুই বুঝছে না, সংসারটা কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেল এই ক’মাসে। অসীমা জীবনের নেগেটিভ দিক, অভাব-অস্বচ্ছলতা কোনওদিন দেখেনি। আজ যেন ও মাঝপুকুরে হাবুডুবু খাচ্ছে। খড়কুটোও নেই যা আঁকড়ে ধরবে। বাবার কথা আজ এত বেশি মনে পড়ছে। বাবার জন্যই ব্যাবসায়ী হয়ে ওঠা রঞ্জনের। কিন্তু কী থেকে কী হয়ে গেল!

‘সীমা... সীমা,’ বলতে বলতে রঞ্জন বাজারের থলে নিয়ে ঢুকল রান্নাঘরে। অসীমা মুখ তুলে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করল কিন্তু তার আগেই রঞ্জন অসীমার মুখের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর হয়ে গেল। হাতের ব্যাগ নামিয়ে কাছে এসে নিবিড় ভাবে জিজ্ঞাসা করল ‘কী হয়েছে?’ অসীমা ট্রেতে চা-বিস্কুট নিয়ে রঞ্জনকে দিল, ‘আজ আবার সরকারবাবু এসেছিলেন।’

‘কী বললেন? চিৎকার করেননি তো!’

‘না, শুধু বললেন তাড়াতাড়ি ঘরগুলো ছেড়ে দিতে।’ রঞ্জন কিছু না বলে শুকনো মুখে ট্রে নিয়ে বাইরে চলে এল। অসীমা জানিয়ে দিল, ‘একটু বাদেই রুটি তরকারি দিচ্ছি।’ বলল বটে কিন্তু ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ল। ওর কিছুই ভালো লাগছে না। কানের মধ্যে বাড়িওয়ালার কথাগুলোই ধাক্বা দিচ্ছে। এক মাসের মধ্যে ঘর ছেড়ে না দিলে কোর্টের কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়ে যাবে। রঞ্জনকে তো সব কথা ইচ্ছে করেই বলেনি। মানুষটাকে তো দেখছে, এত চেষ্টা করছে তবু আশার আলো দেখছে কোথায়? বিগত পাঁচ-ছ’মাস ধরে ব্যাবসার ভরাডুবি। মাথায় প্রায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। তার উপর বাড়িওয়ালার হুমকি। ‘শুধু নিজেদের নিয়ে ভাবছেন, আমার ছেলের বিয়ে, ঘর দরকার, তাই ভদ্রভাবে বলছি, উঠে যান।’

অসীমারা গত তিনমাস বাড়িভাড়ার টাকাটাও দিতে পারেনি ঠিকমতো। আসলে রাগটা সেখানেই, তাই বাহানা জুড়ে দিয়েছে। আবার কোর্টের ভয় দেখাচ্ছে। হাতে কাঁচা পয়সা এসেছে তো, তাই গুমরও বেড়ে গেছে সরকারবাবুর। আজ যে সমাজে সরকারবাবু উঠে যাচ্ছে রঞ্জন একদিন সেখানেই ছিল। সরকারবাবুর বখে যাওয়া ছেলেটা হঠাৎ শুরু করেছে প্রোমোটারি ব্যাবসা। একসময়ে সরকারবাবু সরকারি চাকরি করতেন, সেই সুবাদে উপর মহলের সঙ্গে বেশ ভালো যোগাযোগ আছে। তাই ছেলের হয়ে সুপারিশ করাটা সরকারবাবুর কাছে জলভাত। মাত্র কয়েক মাস হল বেশ জমজমাট শুরু করেছে। উঠোনের ওপাশের ঘরটা আর বৈঠকখানা নেই, হয়ে গেছে অফিস ঘর। বড়ো বড়ো করে সাইনবোর্ডে লেখা ‘নতুন ফ্ল্যাট বাড়ি তৈরির জন্য যোগাযোগ করুন। প্রোমোটার - সনাতন সরকার। যোগাযোগের সময় সকাল : ১১টা – ৪টা।’

आगे की कहानी पढ़ने के लिए सब्सक्राइब करें

ডিজিটাল

(1 साल)
USD10
 
সাবস্ক্রাইব করুন

ডিজিটাল + 12 প্রিন্ট ম্যাগাজিন

(1 साल)
USD79
 
সাবস্ক্রাইব করুন
আরো গল্প পড়তে ক্লিক করুন...